স্টাফ রিপোর্টার:
শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বি নেই। জয় অনেকটা নিশ্চিত। তারপরও মাঠে প্রচারণায় ব্যস্ত সময় পার করছেন সিলেটের দুই মন্ত্রী। ভোটারদের দ্বারে দ্বারে গিয়ে আহ্বান জানাচ্ছেন ৭ জানুয়ারি ভোট কেন্দ্রে যেতে। নৌকার পক্ষে ভোট চাইছেন তারা। দলীয় নেতাকর্মীদের নিয়ে দফায় দফায় বৈঠক করেও ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দিচ্ছেন। দুই মন্ত্রীর মধ্যে সিলেট-১ আসন থেকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন ও সিলেট-৪ আসনে প্রবাসী কল্যান ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমদ নৌকা প্রতীকে প্রতিদ্ব›িদ্বতা করছেন।
দেশের মর্যাদাপূর্ণ আসনের মধ্যে অন্যতম সিলেট-১। ‘মিথ’ আছে পূণ্যভূমির এই আসন থেকে যে বিজয়ী হয় সে দলই সরকার গঠন করে। দেশ স্বাধীনের পর অনুষ্ঠিত কোন নির্বাচনেই এর ব্যতিক্রমও হয়নি। তাই মানুষের মধ্যে এই ধারণা আরও বদ্ধমুল হয়েছে। মর্যাদাপূর্ণ এই আসন থেকে এবারও আওয়ামী লীগের প্রার্থী হয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন। আসনটি থেকে জাতীয় পার্টি দলীয় মনোনয়ন দিয়েছিল মহানগর শাখার সভাপতি শিল্পপতি নজরুল ইসলাম বাবুলকে। কিন্তু ড. মোমেনের প্রতি সম্মান জানিয়ে তিনি শেষ পর্যন্ত প্রার্থী হননি। স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে আওয়ামী লীগের তিনবারের সাবেক কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক এডভোকেট মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ মনোনয়ন দাখিল করলেও ড. মোমেনকে সমর্থন দিয়ে তিনিও মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নেন। ফলে দলের ‘ডামি’ প্রার্থীরও মুখোমুখি হতে হয়নি নৌকার প্রার্থী মোমেনকে। সিলেট-১ আসনে অনেকটা প্রতিদ্ব›িদ্বতাহীন অবস্থান আছে নৌকা। তার সাথে প্রার্থী হিসেবে রয়েছেন- ইসলামী ঐক্যজোটের মাওলানা ফয়জুল হক, বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোটের আবদুল বাছিত, ন্যাশনাল পিপল্স পার্টির (এনপিপি) ইউসূফ আহমদ ও বাংলাদেশ কংগ্রেসের মোহাম্মদ সোহেল আহমদ চৌধুরী। তবে এখনো মাঠে এই চার প্রার্থীর কাউকে দেখা যায়নি। কোথাও তাদের পোস্টার কিংবা প্রচারণা পরিলক্ষিত হয়নি।
ফলে সিলেট-১ আসনে জমে ওঠেনি ভোটের মাঠ। ভোট নিয়ে সাধারণ ভোটারদের মাঝেও খুব একটা আগ্রহ দেখা যাচ্ছে না। আওয়ামী লীগের জন্য ভোটার উপস্থিতিই এখন বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। যে কারণে প্রতিদ্ব›িদ্বহীন মাঠে ব্যস্ত সময় পার করতে হচ্ছে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেনকে। প্রতিদিনই গণসংযোগের পাশাপাশি দলের নেতাকর্মীদের সাথে মতবিনিময় করে চলছেন। গতকাল শনিবার তিনি নগরীর মেন্দিবাগ, ছালিম ম্যানশন, সোবহানীঘাট, কালাগুল ও আখালিয়াঘাটসহ বিভিন্ন এলাকায় গণসংযোগ করেন। এছাড়া তিনি জেলা ও মহানগর মহিরা আওয়ামী লীগের সাথে মতবিনিময় করেন। সিলেট সদর উপজেলা নির্বাচন পরিচালনা কমিটি গঠন ও নির্বাচনী কার্যালয় উদ্বোধনও করেন তিনি।
নির্বাচন প্রসঙ্গে ড. মোমেন বলেন, ‘সিলেটজুড়ে ভোটের আমেজ সৃষ্টি হয়েছে। সাধারণ মানুষের মধ্যে ভোট নিয়ে উৎসবভাব বিরাজ করছে। ভোটাররা যাতে কেন্দ্রে এসে নির্বিঘেœ ভোট দিয়ে আগুন সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে তাদের রায় দেন সেজন্য আমরা তাদেরকে উদ্ধুদ্ধ করছি। আমরা আশাবাদী ৭ জানুয়ারি মানুষ উৎসবের আমেজে ভোট দিতে আসবেন।’
সিলেট-১ এর মতোএকই অবস্থা সিলেট-৪ আসনে। এই আসনে প্রবাসী কল্যান ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রীর সাথে প্রতিদ্ব›িদ্বতায় রয়েছেন তৃণমূল বিএনপির আবুল হোসেন ও ইসলামী ঐক্যজোটের নাজিম উদ্দিন কামরান। প্রতিদ্ব›িদ্ব প্রার্থীর মধ্যে আবুল হোসেনকে প্রচারণায় দেখা গেলেও নাজিম উদ্দিন কামরান এখনো মাঠছাড়া। তবে বিজয় প্রায় নিশ্চিত হলেও প্রতিদিনই এলাকায় গণসংযোগে ব্যস্ত সময় পার করছেন প্রবাসী কল্যান মন্ত্রী। ভোটার উপস্থিতিকে মূল চ্যালেঞ্জ ধরে প্রচারণায় ঘাম ঝরাচ্ছেন তিনি। নির্বাচনে যাতে উৎসবমূখর পরিবেশ সৃষ্টি হয় এবং ভোটাররা ভোট দিতে চান সেই টার্গেটেই মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও প্রবাসী কল্যানমন্ত্রী।
এই সংবাদটি পড়া হয়েছে : 1K বার