স্টাফ রিপোর্টার:
আগামী ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হবে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামন। বিএনপিবিহীন নির্বাচন সামনে রেখে আওয়ামী লীগ ও শরিক দল এবং স্বতন্ত্র প্রার্থীরা চালিয়ে যাচ্ছেন প্রচার-প্রচারণা।
সিলেট জেলায় রয়েছে ছয়টি সংসদীয় আসন। এবার এই ৬টি আসনে ভোটার সংখ্যা ২৭ লাখ ১৫ হাজার ৩৩১ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ১৩ লাখ ৯২ হাজার ৩৯৫ এবং নারী ভোটার ১৩ লাখ ২২ হাজার ৯২৬। এছাড়া তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার রয়েছেন ১০ জন।
৬টি আসনে ভোটকেন্দ্র ১ হাজার ১৩টি। ভোটকক্ষ ৬ হাজার ৬টি। ৬টি আসনের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ভোটার মর্যাদার আসন সিলেট-১।
সিলেট-১ :
সিলেট সিটি করপোরেশনের ৩৬টি ওয়ার্ড, ৭টি ইউনিয়ন ও ১টি ক্যান্টনমেন্ট বোর্ড নিয়ে গঠিত সিলেট-১ আসন। এই আসনে স্থায়ী ভোটকেন্দ্র ২১৫টি। এরমধ্যে মহানগরীতে ১৫২টি ও ইউনিয়নে ৬৩টি স্থায়ী ভোটকেন্দ্র রয়েছে। একই সাথে এ আসনে ভোটকক্ষ রয়েছে ১৩৬৮টি। এরমধ্যে মহানগরীতে ৯৬৭টি ও ইউনিয়নে ৪০১টি। এ আসনে ভোটার ৬ লাখ ৩৪ হাজার ২১ জন। এরমধ্যে পুরুষ ৩ লাখ ৩০ হাজার ৮৩৩ জন এবং নারী ৩ লাখ ৩১ হাজার ৮১ জন। মহানগরীতে নারী-পুরুষ মিলিয়ে ৪ লাখ ৫৩ হাজার ৪৮৬ জন ও ইউনিয়নে রয়েছেন ১ লাখ ৮০ হাজার ৫৩৫ জন ভোটার। এছাড়া মহানগরী এলাকায় ৬ জন ও ইউনিয়নে আরও ১ জন তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার রয়েছেন।
সিলেট-২ :
বিশ্বনাথ আর ওসমানীনগর উপজেলা নিয়ে গঠিত সিলেট-২ আসন। এই দুই উপজেলায় ১৬টি ইউনিয়ন রয়েছে। এরমধ্যে বিশ্বনাথে ৮টি ওয়ার্ড ও ওসমানীনগরে রয়েছে ৮টি ইউনিয়ন। এই আসনে ভোটকেন্দ্র ১২৮টি। এরমধ্যে বিশ্বনাথ উপজেলায় স্থায়ী ভোটকেন্দ্র ৭৪টি ও ওসমানীনগরে ৫৩টি। এছাড়া ওসমানীনগরে অস্থায়ী ভোটকেন্দ্র আরও ১টি। ভোটকক্ষ ৭৭৩টি। এরমধ্যে বিশ্বনাথে ৩৯২টি ও ওসমানীনগরে ৩৫২টি স্থায়ী ভোটকেন্দ্র রয়েছে। এছাড়া বিশ্বনাথে আরও ২৯টি অস্থায়ী ভোটকেন্দ্র রয়েছে। এ আসনে ভোটার ৩ লাখ ৪৪ হাজার ৭২৯ জন। এরমধ্যে পুরুষ ১ লাখ ৭৬ হাজার ১৪৭ জন এবং নারী ১ লাখ ৬৮ হাজার ৫৮২ জন। বিশ্বনাথে নারী-পুরুষ মিলিয়ে ভোটার ১ লাখ ৮৪ হাজার ১৪৯ জন। ওসমানীনগরে মোট ভোটার ১ লাখ ৬০ হাজার ৫৮০ জন।
সিলেট-৩ :
সিসিকের ৬টি ওয়ার্ড, দক্ষিণসুরমা, ফেঞ্চুগঞ্জ ও বালাগঞ্জ উপজেলা নিয়ে গঠিত সিলেট-৩ আসন। এখানে সিসিকের ৮টি ওয়ার্ড ও ১১টি ইউনিয়ন রয়েছে। এই আসনে ভোটকেন্দ্র ১৫১টি। এরমধ্যে সিসিকের ওয়ার্ডগুলোতে রয়েছে ১৬টি ভোটকেন্দ্র, দক্ষিণ সুরমা উপজেলায় ৬৩টি, ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলায় ৩৬টি ও বালাগঞ্জ উপজেলায় ৩৬টি। এখানে ভোটকক্ষ ৮৭৬টি। এরমধ্যে সিসিকের ৮টি ওয়ার্ডে ৭৮টি স্থায়ী ও ৫টি অস্থায়ী ভোটকেন্দ্র। এছাড়া দক্ষিণসুরমায় ৩৫৮টি স্থায়ী ও ১৬টি অস্থায়ী ভোটকেন্দ্র। ফেঞ্চুগঞ্জে ১৭০টি স্থায়ী ও ২৯টি অস্থায়ী ভোটকেন্দ্র। বালাগঞ্জে ১৮৫টি স্থায়ী ও ৩৫টি অস্থায়ী ভোটকক্ষ রয়েছে। এ আসনে ভোটার ৩ লাখ ৮৬ হাজার ৪১২ জন। এরমধ্যে পুরুষ ১ লাখ ৯৬ হাজার ১৪২ জন এবং নারী ১ লাখ ৯০ হাজার ২৬৯ জন। এ আসনে তৃতীয় লিঙ্গের ১ জন ভোটার রয়েছেন।
সিলেট-৪ :
কোম্পানীগঞ্জ, গোয়াইনঘাট ও জৈন্তাপুর উপজেলা নিয়ে গঠিত সিলেট-৪ আসন ২৫টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত। কোম্পানীগঞ্জে ৬টি, গোয়াইনঘাটে ১৩টি ও জৈন্তাপুরে ৬টি ইউনিয়ন রয়েছে। এই তিন উপজেলায় ১৬৯টি স্থায়ী ভোটকেন্দ্র রয়েছে। এরমধ্যে কোম্পানীগঞ্জে ৪০টি, গোয়াইনঘাটে ৮৩টি ও জৈন্তাপুরে ৪৬টি। ভোট কক্ষ ১ হাজার ২৯টি। এরমধ্যে কোম্পানীগঞ্জে ২৩৮টি, গোয়াইনঘাটে ৪৭১টি ও জৈন্তাপুরে ২৫১টি স্থায়ী ভোটকেন্দ্র। এছাড়াও কোম্পানীগঞ্জে অস্থায়ী ভোটকেন্দ্র ৫টি, গোয়াইনঘাটে ৩৩টি ও জৈন্তাপুরে ৩১টি। সবমিলিয়ে কোম্পানীগঞ্জে ২৪৩টি ভোটকেন্দ্র, গোয়াইনঘাটে ৫০৪টি ও জৈন্তাপুরে রয়েছে ২৮২টি। এ আসনে ভোটার ৪ লাখ ৭৫ হাজার ১২১ জন। এরমধ্যে পুরুষ ২ লাখ ৪৬ হাজার ১০৭ জন এবং নারী ২ লাখ ২৯ হাজার ১৩ জন। এ আসনে তৃতীয় লিঙ্গের ১ জন ভোটার রয়েছেন। এখানে কোম্পানীগঞ্জের নারী-পুরুষ মিলিয়ে ভোটার ১ লাখ ১৭ হাজার ৭১৮ জন।
গোয়াইনঘাটের নারী-পুরুষ মিলিয়ে ভোটার ২ লাখ ২৫ হাজার ৪৫৫ জন। এছাড়া জৈন্তাপুরে নারী-পুরুষ মিলিয়ে ভোটার ১ লাখ ৩১ হাজার ৯৪৮ জন।
সিলেট-৫ :
কানাইঘাট ও জকিগঞ্জ নিয়ে গঠিত সিলেট-৫ আসন। ৯টি করে এই দুটি ওয়ার্ডে রয়েছে ১৮টি ওয়ার্ড। এখানে ভোটকেন্দ্র ১৫৮টি। এরমধ্যে কানাইঘাটে ৮১টি ও জকিগঞ্জ ৭৭টি স্থায়ী ভোটকেন্দ্র। একই সাথে এই দুটি পৌরসভায় রয়েছে ৮৭১টি ভোট কক্ষ। এরমধ্যে জকিগঞ্জে ৪০৯টি স্থায়ী ভোটকেন্দ্র ও ৩৬টি অস্থায়ী ভোটকেন্দ্র। এছাড়া কানাইঘাট পৌরসভায় ৪০৯টি স্থায়ী ভোটকেন্দ্র ও ১৭টি অস্থায়ী ভোটকেন্দ্র। এ আসনে ভোটার ৪ লাখ ২২ হাজার ৯৯ জন। এরমধ্যে পুরুষ ২ লাখ ৫৬ হাজার ৫৭ জন এবং নারী ১ লাখ ৯৬ হাজার ৬৪২ জন। এখানে কানাইঘাটের নারী-পুরুষ মিলিয়ে ভোটার ২ লাখ ১৪ হাজার ২৯৫ জন। জকিগঞ্জের নারী-পুরুষ মিলিয়ে ভোটার ৯৬ হাজার ৬৬৩ জন।
সিলেট-৬ :
বিয়ানীবাজার ও গোলাপগঞ্জ নিয়ে গঠিত সিলেট-৬ আসন। বিয়ানীবাজার পৌরসভায় ১০টি ও গোলাপগঞ্জ পৌরসভায় ১১টি ওয়ার্ড। এখানে ভোটকেন্দ্র ১৯২টি। এরমধ্যে বিয়ানীবাজারে ৮৯টি ও গোলাপগঞ্জে ১০৩টি স্থায়ী ভোটকেন্দ্র।
একই সাথে এই দুটি পৌরসভায় ১ হাজার ৮৯টি ভোটকক্ষ রয়েছে। এরমধ্যে বিয়ানীবাজারে ৪৮০টি স্থায়ী ও ৯টি অস্থায়ী ভোটকেন্দ্র। এছাড়া গোলাপগঞ্জে রয়েছে ৬০০টি স্থায়ী ও ৩৫টি অস্থায়ী ভোটকেন্দ্র। এ আসনে ভোটার ৪ লাখ ৭২ হাজার ৭৪৯ জন। এরমধ্যে বিয়ানীবাজার পুরুষ ভোটার ১ লাখ ২৫ হাজার ৮৩ জন ও নারী ভোটার ১ লাখ ৩৪ হাজার ৫৫ জন। সব মিলিয়ে বিয়ানীবাজারে নারী-পুরুষ ভোটার ২ লাখ ৬০ হাজার ৩৮ জন। এছাড়া গোলাপগঞ্জে পুরুষ ভোটার ১ লাখ ৩৪ হাজার ৯২৬ জন ও নারী ভোটার ১ লাখ ৩১ হাজার ৭৮৪ জন। এখানে নারী-পুরুষ মিলিয়ে ভোটার ২ লাখ ৬৬ হাজার ৭১১ জন।
নির্বাচনে বিএনপি ও সমমনা দলগুলো অংশগ্রহণ না করায় এমনিতেই সিলেটের ৬টি আসনে নেই বেশি ভোটের আমেজ। এরই মাঝে প্রতিদ্বন্দ্বী অর্ধেকের বেশি প্রার্থী নেই নির্বাচনি মাঠে। ফলে আরও মিইয়ে পড়েছে ভোটের আমেজ।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সিলেটের ৬টি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন মোট ৩৫ প্রার্থী।
সিলেট-১ আসনে প্রার্থী ৫ জন। আসনটিতে কোনো স্বতন্ত্র প্রার্থী নেই। সব প্রার্থীর প্রতীক দলীয়। আওয়ামী লীগের প্রার্থী এবং বর্তমান সংসদ সদস্য ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন (নৌকা), সম্মিলিত সাংস্কৃতিক মুক্তি জোটের প্রার্থী আব্দুল বাসিত (ছড়ি), ন্যাশনাল পিপলস পার্টির (এনপিপি)-এর প্রার্থী ইউসুফ আহমদ (আম), ইসলামী ঐক্যজোটের প্রার্থী ফয়জুল হক (মিনার) এবং বাংলাদেশ কংগ্রেসের প্রার্থী মো. সোহেল আহমদ চৌধুরী (প্রতীক)।
সিলেট-২ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী শফিকুর রহমান চৌধুরী (নৌকা), গণফোরামের প্রার্থী ও বর্তমান এমপি মোকাব্বির খান (উদীয়মান সূর্য), বিশ্বনাথ পৌরমেয়র স্বতন্ত্র প্রার্থী মুহিবুর রহমান (ট্রাক), জাতীয় পার্টির প্রার্থী ইয়াহইয়া চৌধুরী (লাঙ্গল), তৃণমূল বিএনপি মনোনীত প্রার্থী মোহাম্মদ আব্দুর রব (সোনালী আঁশ), বাংলাদেশ কংগ্রেস মনোনীত প্রার্থী মো. জহির (ডাব) এবং ন্যাশনাল পিপলস পার্টির (এনপিপি) প্রার্থী মো. মনোয়ার হোসাইন (আম)।
সিলেট-৩ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ও বর্তমান সংসদ সদস্য হাবিবুর রহমান (নৌকা), জাতীয় পার্টির প্রার্থী আতিকুর রহমান (লাঙল), বাংলাদেশ মেডিকেল এসোসিয়েশ (বিএমএ)-এর মহাসচিব- আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যবিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য স্বতন্ত্র প্রার্থী ডা. মো. ইহতেশামুল হক চৌধুরী দুলাল (ট্রাক), বাংলাদেশ ইসলামী ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী শেখ জাহেদুর রহমান মাসুম (মোমবাতি), ইসলামী ঐক্যজোটের প্রার্থী মো. মইনুল ইসলাম (মিনার), ন্যাশনাল পিপলস পার্টির (এনপিপি) প্রার্থী আনোয়ার হোসেন আফরোজ (আম) এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. ফখরুল ইসলাম (ঈগল)।
সিলেট-৪ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ও বর্তমান এমপি ইমরান আহমদ (নৌকা), ইসলামী ঐক্যজোটের প্রার্থী মো. নাজিম উদ্দিন কামরান (মিনার) এবং তৃণমূল বিএনপির প্রার্থী মো. আবুল হোসেন (সোনালী আঁশ)।
সিলেট-৫ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী বীর মুক্তিযোদ্ধা মাসুক উদ্দিন আহমদ (নৌকা), বাংলাদেশ আনজুমানে আল ইসলাহ’র সভাপতি স্বতন্ত্র প্রার্থী মাওলানা মোহাম্মদ হুছামুদ্দীন চৌধুরী (কেতলি), স্বতন্ত্র প্রার্থী আওয়ামী লীগ নেতা আহমদ আল কবির (ট্রাক), তৃণমূল বিএনপির প্রার্থী কুতুব উদ্দীন আহমদ শিকদার (সোনালী আঁশ), জাতীয় পার্টির প্রার্থী শাব্বীর আহমদ (লাঙ্গল), বাংলাদেশ কংগ্রেসের প্রার্থী মো. বদরুল আলম (ডাব) এবং বাংলাদেশ মুসলিম লীগের (বিএমএল) প্রার্থী মো. খায়রুল ইসলাম (হাত-পাঞ্জা)।
সিলেট-৬ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ও বর্তমান সংসদ নুরুল ইসলাম নাহিদ (নৌকা), স্বতন্ত্র প্রার্থী সরওয়ার হোসেন (ঈগল), বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তি জোটের প্রার্থী আতাউর রহমান আতা (ছড়ি), জাতীয় পার্টির প্রার্থী সেলিম উদ্দিন (লাঙ্গল), তৃণমূল বিএনপির প্রার্থী শমসের মবিন চৌধুরী (সোনালী আঁশ) এবং ইসলামী ঐক্যজোটের প্রার্থী সাদিকুর রহমান (মিনার)।
এই সংবাদটি পড়া হয়েছে : 1K বার