শিবগঞ্জ প্রতিনিধি:
‘খুনের শিকার’ ববিতা দীর্ঘ ৮ মাস পর স্বামীসহ আবারও বাবার বাড়ি ফিরে এসেছেন। এ ঘটনায় জেলাজুড়ে তোলপাড় সৃষ্টি করেছে। বুধবার (১৭ জানুয়ারি) চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার শিবগঞ্জ উপজেলার মনাকষা ইউনিয়নের খড়িয়াল গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। ববিতা রসুল আলীর মেয়ে। আর তার স্বামী নওগাঁ জেলার মান্দা থানার পরইল কাঞ্চন গ্রামের মৃত আফসার আলির ছেলে মাজেদ আলি।
জানা গেছে, গত ২৬ জুলাই বিকাল সোয়া চারটার সময় ৯৯৯ নম্বরে কল পেয়ে সদর থানার বালিয়াডাঙ্গা ইউনিয়নে পালসা গ্রামের লীলাখেলা মোড়ে বস্তাবন্দী একটি লাশ পড়ে থাকার সংবাদ আসে পুলিশের কাছে। এসআই বদিউজ্জামানের নেতৃত্বে ফোর্সসহ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের পর পাঠানো হয়। এজাহারে উল্লেখ্য আছে কে বা কারা যে গত ১৬ থেকে ২৬ তারিখের মধ্যে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যার পর লাশ গুমের উদ্দেশ্যে এখানে ফেলে দিয়েছিল। এ ঘটনায় তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই আফজাল ৯ আগস্ট শিবগঞ্জ উপজেলার বিনোদপুর ইউনিয়নের কালিগঞ্জ ক্যাপড়াটোলা গ্রামের এনামুল হকের ছেলে রুবেল হক (২৮)কে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠান।বর্তমানে রুবেল জামিনে মুক্ত আছে। বর্তমানে মামলাটি বিচারাধীন। কিন্তু ১৭ জানুয়ারি ববিতা তার স্বামী মাজেদ আলিকে সঙ্গে নিয়ে তার বাবার বাড়িতে উপস্থিত হলে এলাকায় হৈচৈ পড়ে যায়। এবং শত শত নারী পুরুষ তাদেরকে দেখার জন্য ভিড় করে।
ববিতা বলেন, প্রায় আট মাস আগে রুবেল আমাকে ফোন করে ডাকলে আমি তার কথা মতো হাউসনগর গ্রামের মাথায় উপস্থিত হয়। এ সময় তার সঙ্গে আরও দুইজন আমাকে নওগাঁয় নিয়ে যায়। এবং তিনজনই আমাকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করার পর ঘুমের ঔষধ খাইয়ে আমাকে ফেলে পালিয়ে যায়। আমি এর বিচার চাই।
ববিতার স্বামী মাজেদ আলি জানান, এক বছর আগে আমার স্ত্রী আমাকে ছেড়ে চলে যাওয়ায় প্রায় সাড়ে চার মাস আগে মান্দা এলাকায় একটি অটোগ্যারেজে পেয়ে ববিতাকে বিয়ে করি। বিয়ের সময় তার নাম পিয়া খাতুন, বাাড়ি কুঁড়িগ্রাম বলে পরিচয় দেয়। বিয়ের পর তাকে ঢাকা গিয়ে আমি একটি গার্মেন্টেসে চাকরি করি। এর মাঝে তার অসুখ হলে চিকিৎসা করাই এবং তার বাবার বাড়ি নিয়ে যাওয়ার জন্য ঠিকানা চাইলে সে কোনো ঠিকানা দিতে পারেনি। তবে সে হুমায়ুন রেজা উচ্চবিদ্যালয়ে লেখাপড়া করেছে বলে জানালে গুগলে সার্চ দিয়ে তার ঠিকানা বের করে তার বাবার বাড়ি আসছি।
এ ব্যাপারে এলাকাবাসী জানান, ববিতার আগে থেকেই কিছুটা মাথার সমস্যা ছিল ছিল। তবে রুবেলের বিরুদ্ধে মামলা দেওয়া তো একটি ষড়যন্ত্র। ১১ জুলাই ববিতার বাবা রসুর আলি শিবগঞ্জ থানায় কালিগঞ্জ ক্যাপড়াটোলা গ্রামের এনামুল হকের ছেলে রুবেলের বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ করেছিল।
শিবগঞ্জ থানায় সেকেন্ড অফিসার খাইরুল ইসলাম জানান, ববিতা ও তার বাবাকে থানায় নিয়ে এসে জিজ্ঞাসা করে তাদের বাড়ি পাঠানো হয়েছে। তার বর্তমান স্বামীর ব্যাপারে কিছু বলতে পারব না। তবে শুনেছি সে বিয়ে করেছে এবং প্রায় আট মাস আগে বালিয়াডাঙ্গাতে উদ্ধারকৃত লাশ ববিতার বলে তার বাবা দাবি করেছিল।
শিবগঞ্জ থানার ওসি সাজ্জাদ হোসেন জানান, মেয়েকে তার বাবার কাছে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে। বস্তাবন্দী উদ্ধারকৃত লাশের ব্যাপারে তাকে সন্দেহজনকভাবে আটক করা হয়েছিল। এখন আবার সে মামলার তদন্ত হবে।
এই সংবাদটি পড়া হয়েছে : 1K বার