বড়লেখা প্রতিনিধি:
মৌলভীবাজারের বড়লেখায় সঞ্চিতা রানী দাস (৩০) নামে এক গৃহবধুকে অভুক্ত ও মানসিক নির্যাতনে হত্যার অভিযোগ তুলেছেন স্বজনরা। টানা ৭ দিন মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ে গত মঙ্গলবার (২৩ জানুয়ারি) ভোরে সিলেটের একটি বেসরকারি হাসপাতালের আইসিইউতে ওই গৃহবধূ মারা যান।
গৃহবধূর স্বজনদের অভিযোগ, স্বামীসহ শ্বশুড় বাড়ির লোকজনের সাংসারিক কঠিন কাজ করিয়ে অভুক্ত রেখে ও মানসিক নির্যাতন চালিয়ে সঞ্চিতাকে মৃত্যুর দিকে টেলে দিয়েছে। মঙ্গলবার বিকেলে থানা পুলিশ নিহত গৃহবধুর লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য মর্গে পাঠিয়েছে।
নিহতের পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার ধর্মদেহী গ্রামের মাখন লাল দাসের মেয়ে সঞ্চিতা রানী দাসের সাথে পাঁচ বছর আগে বিয়ে হয় মালিছিরি গ্রামের সুবোধ দাসের ছেলে দুবাই প্রবাসী সুমন দাসের। বিয়ের দেড় মাস পর সুমন দাস প্রবাসে চলে যান।
গৃহবধু সঞ্চিতা দাসের বাবা মাখল লাল দাস ও বড়বোন রুবিতা দাস অভিযোগ করেন-প্রবাসী ছেলে দেখে সঞ্চিতাকে বিয়ে দিয়েছিলেন। স্বামী প্রবাসে গেলে শ্বশুড়, শ্বাশুড়ি, দেবর ও ননদ বাড়ির সব কাজ তাকে দিয়ে করাতে থাকে। ঠিকমত খাবার দাবার দিতো না। বাবার বাড়ির সাথে যোগাযোগও করতে দিতো না। শ্বশুড় বাড়িতে অনেকটা বন্দি জীবন কাটায় সঞ্চিতা। কঠিন কাজ, ঠিকমতো খাবার না দেওয়া, শারীরিক ও মানিসক নির্যাতনে সে মারাত্মক অসুস্থ হলেও চিকিৎসা দেওয়া হয়নি। প্রায় দেড় মাস আগে স্বামী সুমন দাস বিদেশ থেকে এসে সেও অমানবিক আচরণ করতে থাকে। এরমধ্যে স্বামী সুমন দাস দ্বিতীয় বিয়ের অনুমতির একটি স্ট্যাম্পে জোরপূর্বক স্বাক্ষর নিতে চাইলে গৃহবধু সঞ্চিতা দাস তা দেয়নি। এরপর ক্ষিপ্ত হয়ে তার ওপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন বাড়িয়ে দেওয়া হয়। শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটার খরব পেয়ে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও মুরব্বিদের মধ্যস্থতায় তাকে গত ১৭ জানুয়ারি সিলেটের একটি হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে ৭ দিন আইসিইউতে থাকার পর মঙ্গলবার ভোরে সে মারা গেছে। স্বামীসহ শ্বশুর বাড়ির লোকজন পরিকল্পিতভাবে তাকে খুন করেছে। তারা এই হত্যাকান্ডের বিচার চান।
বড়লেখা থানার এসআই আতাউর রহমান জানান, পুলিশ গৃহবধূর লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য মর্গে পাঠিয়েছে। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর মৃত্যুর কারণ নিশ্চিত হওয়া যাবে। নিহতের স্বজনরা থানায় কোনো অভিযোগ করেনি।
এই সংবাদটি পড়া হয়েছে : 1K বার