স্টাফ রিপোর্টার:
নির্বাচন কমিশন কর্তৃক উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের তফশিলের কথা জানানোর পরই বিয়ানীবাজারে উত্তাপ শুরু হয়েছে। নানাভাবে সক্রিয় হয়ে প্রার্থীতা জানান দেয়ার চেষ্টা করছেন উপজেলা চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করতে আগ্রহী সম্ভাব্য প্রার্থীরা। কৌশলী জনসংযোগ করার পাশাপাশি নির্বাচনী মাঠে নিজেদের গ্রহণযোগ্যতাও যাচাই করছেন তারা। বিশেষ করে সরকারি দল আওয়ামী লীগের প্রার্থী হতে তোড়জোড় বেশি। বিএনপির তথা বিরোধী জোটের প্রার্থীরা এখনো মাঠে নামার কোনো ইঙ্গিত দেননি। তারা অনেকটা নিরাপদ দূরত্বে অবস্থান করছেন।
সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে আগামী এপ্রিল মাসে বিয়ানীবাজার উপজেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পারে বলে বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে।
উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে স্থানীয় আওয়ামীলীগের বড় পদবীধারিরা আগ্রহী হলেও ভিতরে-ভিতরে তারা দু’টানায় রয়েছেন। দলীয় প্রতীকবিহীন নির্বাচনে নেতাকর্মীরা কোনদিকে থাকবে, নির্বাচনে প্রভাব খাটানো যাবে কি-না, স্বতন্ত্রের আড়ালে বিএনপি-জামায়াত থেকে কোন প্রার্থী নির্বাচন করলে আওয়ামীলীগ বিরোধী ভোট কোন দিকে যাবে-এসব নানা বিষয়ে নির্বাচন করা নিয়ে মহাচিন্তায় পড়েছেন আওয়ামীলীগের আগ্রহী সম্ভাব্য প্রার্থীরা। যদিও সিলেট জেলা আওয়ামীলীগের এক দায়িত্বশীল নেতা সম্প্রতি তার বক্তব্যে স্থানীয় আওয়ামীলীগ থেকে চেয়ারম্যান পদে আগ্রহী সকল সম্ভাব্য প্রার্থীকে নিয়ে বসে এককভাবে প্রার্থী দেয়ার কথা বলেছেন। ওই সভায় সিলেট-৬ আসনের সংসদ সদস্য নুরুল ইসলাম নাহিদও উপস্থিত ছিলেন। তবে জেলার ওই নেতার বক্তব্য কতটুকু বাস্তব করা সম্ভব হবে, তা নিয়ে সন্দিহান প্রায় সবাই। তাছাড়া কেন্দ্র থেকে একক প্রার্থী করার কোন নির্দেশনা না থাকলেও জেলার এই নেতা কেন এমন ঘোষণা দিলেন, তা নিয়েও প্রশ্ন উত্তাপন করেছেন খোদ নির্বাচনে আগ্রহী সম্ভাব্য প্রার্থীরা।
সূত্র জানায়, বিয়ানীবাজার উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামীলীগ থেকে সভাপতি আতাউর রহমান খান, সাধারণ সম্পাদক দেওয়ান মাকসুদুল ইসলাম আউয়াল, জেলা আওয়ামীলীগের সদস্য মো: জাকির হোসেন ও আব্দুল বারী, উপজেলার সাংগঠনিক সম্পাদক জামাল হোসেন এবং বর্তমান চেয়ারম্যান আবুল কাশেম পল্লব আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। এর বাইরে বিয়ানীবাজার সরকারি কলেজের সাবেক ভিপি সাইফুল ইসলাম নিপু ও প্রভাষক মো: জহির উদ্দিনও গণসংযোগ শুরু করেছেন। তবে তারাও আওয়ামীলীগের বিভিন্ন পর্যয়ের নেতা। এছাড়া আরো ২-৩জন প্রবাসী রাজনীতিক আসন্ন নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করতে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। এ বিষয়ে বিয়ানীবাজার উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আতাউর রহমান খান বলেন, নির্বাচন করার প্রস্তুতি নিচ্ছি। পরিবেশ-পরিস্থিতি অনুকুলে থাকলে চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হবো-ইনশাল্লাহ। সাধারণ সম্পাদক দেওয়ান মাকসুদুল ইসলাম আউয়াল জানান, নির্বাচন ঘিরে দলে শৃংখলা থাকলে অবশ্যই নির্বাচন করতে পারি। তবে আশাকরি দলীয় কোন বিশৃংখলা হবেনা। বিয়ানীবাজার সরকারি কলেজের প্রভাষক মো: জহির উদ্দিন জানান, আমি স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচন করবো। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আমি গণসংযোগ শুরু করেছি। সিলেট জেলা আওয়মীলীগের সদস্য মো: জাকির হোসেন বলেন, তৃণমূল থেকে ব্যাপক সাড়া পচ্ছি। এমন সাড়া অব্যাহত থাকলে নির্বাচন করবো প্রায় নিশ্চিত।
এদিকে উপজেলা নির্বাচনে বিএনপি দলীয় কিংবা স্বতন্ত্রভাবেও নির্বাচন করবেনা বলে জানিয়েছেন দলটির সাধারণ সম্পাদক সরওয়ার হোসেন। তিনি বলেন, এখনো পর্যন্ত নির্বাচন করার বিষয়ে দলীয় কোন নির্দেশণা নেই। নির্দেশনা অমান্য করে কেউ প্রার্থী হলে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে। তবে শেষ পর্যন্ত বিএনপি-জামায়াত নির্বাচনে অংশ নিলে জেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মামুনুর রশীদ, উপজেলা বিএনপির সভাপতি এডভোকেট আহমদ রেজা, জামায়াতের আমির ফয়জুল ইসলাম, সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আবুল খায়ের, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম থেকে সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান মুফতি শিব্বীর আহমদ নির্বাচন করতে পারেন।
অপরদিকে ভাইস চেয়ারম্যান পদে প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মিলাদ মো: জয়নুল ইসলাম, আওয়ামীলীগ নেতা আলমগীর হোসেন রুনু, ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ নেতা কছির আলী আব্দুর রব, গত নির্বাচনে প্রতিদ্বন্ধিতাকারী মামুনুর রশীদ, মৎস্যজীবি নেতা জসীম উদ্দিন প্রমুখ নির্বাচন করতে পারেন।
মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান রুকসানা বেগম লিমা স্থায়ীভাবে কানাডায় পাড়ি জমিয়েছেন। তাই এখনো পর্যন্ত এ পদে আগ্রহী দুবাগ এলাকার পারুল বেগম ছাড়া আর তেমন কারো নাম শুনা যায়নি।
এই সংবাদটি পড়া হয়েছে : 1K বার