সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি:
শিশুবক্তা হিসেবে পরিচিত মাওলানা রফিকুল ইসলাম মাদানিকে সুনামগঞ্জের তাহিরপুরের বাদাঘাটে একটি ওয়াজ মাহফিলে ‘ওয়াজ করতে না দেয়ার’ অভিযোগে পুলিশ ফাঁড়িতে হামলা চালানো হয়েছে। এতে আহত হয়েছেন পুলিশসহ অন্তত ২০ জন। এই ঘটনার পর থেকে এলাকা থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। পুলিশ কঠোর অবস্থানে রয়েছে।
সোমবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) দিনগত রাত ১২ টা পর উপজেলার বাদাঘাট ইউনিয়নের বাদাঘাট পুলিশ ফাঁড়িতে ঘটনাটি ঘটে। এসময় পুলিশ ২ রাউন্ড টিআরসেল ও ২৭রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছুড়ে।
এ ঘটনায় ৫ জনকে আটক করা হয়েছে। তারা হলেন- উপজেলার উত্তর বড়দল ইউনিয়ন মাহারাম গ্রামের ফজলুল হকের ছেলে মোজাম্মিল হক(৩৩),কাশতাল গ্রামের মৃত তবারক ইসলামের ছেলে রায়হান মিয়া(৩০),পইলানপুর গ্রামের মতৃ সিরাজুল ইসলামের ছেলে বশির আহমেদ(৩৮),নাসির আহমেদ(৩১),বাদাঘাট গ্রামের মোশাররফ হোসেন(২০)।
স্থানীয় সূত্র জানায়, বাদাঘাট বাজার জামে মসজিদ প্রাঙ্গণে হিলফুল ফুযুল নামে সংঘটনের আয়োজনে সোমবার ওয়াজ মাহফিলে মাওলানা রফিকুল ইসলাম মাদানিকে আমন্ত্রণ জানানো হয়। রাত ১২টায় বিশ্বম্বরপুর উপজেলায় মিয়ারচরঘাট পার হয়ে তাহিরপুর উপজেলার বাদাঘাট ইউনিয়নের পাঠানপাড়ায় চলেও আসে মাওলানা রফিকুল ইসলাম মাদানী। পরে সেখান থেকে তাকে ফিরিয়ে দেওয়া হয়। পরে রাত ১২ টার পর মাইকে জানানো হয় তিনি আসতে পারবেন না ও ওয়াজ করতে পারবেন না এতে করে উত্তেজনা সৃষ্টি। এক পর্যায়ে মাইকে ঘোষণা করা হয়- তিনি আসতে পারবেন না আইনি জঠিলতার কারনে। মাহফিল শেষ। আপনারা নিজ নিজ বাড়িতে চলে যান।
এসময় উত্তেজনা সৃষ্টি হলে সবাইকে শান্ত থাকার জন্য আহবান জানান মাহফিল কর্তৃপক্ষ। কিন্তু উত্তেজিত জনতাকে সামাল দেওয়া সম্ভব হয়নি। অনেকে নিজ নিজ বাড়িতে চলে গেলেও উত্তেজিত কিছু জনতা নানান শ্লোগান দিয়ে মিছিল দিয়ে বাদাঘাট পুলিশ ফাঁড়িতে হামলা করেন।
পুলিশ জানায়, উত্তেজিত জনতা পুলিশের বিরুদ্ধে নানান শ্লোগান তুলে বিক্ষোভ মিছিল করে। এক পর্যায়ে মিছিল থেকে জনতা বাদাঘাট পুলিশ ফাঁড়িতে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করলে এসময় পুলিশ ৩০রাউন্ড ফাঁকা গুলি করে। এঘটনায় দুই পুলিশ সদস্যসহ ২০জন আহত হয়েছে। এঘটনায় জড়িত থাকার সন্দেহে জিজ্ঞেসাবাদের জন্য ৫ যুবককে আটক করেছে পুলিশ। ঘটনার পর থেকে অতিরিক্ত পুলিশ ফাঁড়িতে মোতায়েন করা হয়েছে। এই ঘটনার পর থেকে গা ডাকা দিয়েছে আয়োজক কমিটির দায়িত্বশীলরা।
বাদাঘাট পুলিশ ফাঁড়ি ইনচার্জ নাজমুল ইসলাম জানান, এই ঘটনায় পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। এই ঘটনার মামলার আসামীদের গ্রেফতারে আমাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
তাহিরপুর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন বলেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে ২ রাউন্ড টিআরসেল ও ২৭ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছুড়া হয়। এ ঘটনায় বাদাঘাট পুলিশ ফাঁড়ি ইনচার্জ নাজমুল ইসলাম বাদী হয়ে ১২ জনের নাম উল্লেখ করে ও অজ্ঞাত ৬-৭ শ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলায় নাম উল্লেখিতদের মধ্যে ৫ জনকে আটক করা হয়েছে। বিকেলে আটককৃতদের আদালতে পাঠানো হয়েছে।
এই সংবাদটি পড়া হয়েছে : 1K বার