আব্দুল খালিক:
সিলেটের ১২ সদস্যের একটি পরিবার নিখোঁজ হওয়ার প্রায় ১০ বছর অতিবাহিত হয়েছে। কিন্তু আজও তাদের কোন খোঁজ নেই। কেউ জানে না তারা কোথায় আছে বা কোথায় গেছে। তারা বেঁচে আছে কিনা তাও কেউ জানে না। পুলিশের নিকট খবর রয়েছে তারা আইএসএ গেছে তাই এ সম্পর্কে পুশিশের খোঁজাখুঁজি শেষ। সিলেটের সহকারি পুলিশ সুপার স¤্রাট তালুকদার জানান, এ পরিবারের বিষয়ে আমার কোন তথ্য জানা নেই।
২০১৫ সালের মে মাসে ব্রিটেন প্রবাসী সিলেটের আবুল মোহাম্মদ আবদুল মান্নান (৭৫) পরিবারের ১২ সদস্যসহ নিখোঁজ হলে সিলেট তথা সারাদেশে বেশ চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। এদের সন্ধানে পুলিশ কিছুদিন ঘর্মাক্ত হয়। পরে জানা যায় গোটা পরিবার আইএসএ যোগ দিয়েছে। বিষয়টি নিয়ে বেশকিছু দিন সিলেটে আলোচনা তুমুল ঝড় তুলেছিল। পরে বিষয়টি অনেকটা চাপা পড়ে যায়। কিন্তু ইদানিং কিছু শিক্ষিত ও ধনী পরিবারের নিখোঁঁজ হওয়ার খবরে অনেকের মধ্যে নতুন করে সিলেটের সেই ১২ সদস্য নিখোঁজের বিষয়টি চলে এসেছে। উদ্বেগ-উত্কণ্ঠা দেখা দিয়েছে তাদের মধ্যে। আগে অনেকের মধ্যে সন্দেহ ছিল কেবল মাদ্রাসা পড়ুয়াদের নিয়ে। বর্তমানে আধুনিক, শিক্ষিত মুসলিম পরিবারের নানা বয়সের অনেকেই দুর্ভাবনার কারণ হয়ে পড়েছেন।
ব্রিটেনে দীর্ঘদিন সপরিবারে বসবাস করে আসছিলেন সিলেটের আবুল মোহাম্মদ আবদুল মান্নান। দেশে ও ব্রিটেনে বিপুল বিত্তের মালিক তিনি। ২০১৫ সালের ১০ এপ্রিল পরিবারের সবাইকে নিয়ে ছুটি কাটাতে আসেন বাংলাদেশে। এক মাস দেশে অবস্থানের পর ঐ বছরের ১ মে যুক্তরাজ্যে ফেরার জন্য তারা ইস্তামবুলে পৌঁছান। সেখান থেকে ১৪ মে লন্ডনের হিথ্রো বিমানবন্দরে পৌঁছার কথা ছিল। কিন্তু ইস্তামবুল থেকে নিখোঁজ হন তারা। বৃদ্ধ আবুল মোহাম্মদ আবদুল মান্নানের সাথে তার দ্বিতীয় স্ত্রী মিনারা খাতুন (৫৩), মেয়ে রাজিয়া খানম (২১), ছেলে মো. জায়েদ হুসাইন (২৫), মোহাম্মদ তৌফিক হুসাইন (১৯), ভাতিজা ও মেয়ে জামাই মো. আবুল কাশেম সাকের (৩১) এবং তার স্ত্রী সাইদা খানম (২৭), মোহাম্মদ সালেহ হুসাইন (২৬), তার স্ত্রী রোশনারা বেগম (২৪) এবং তাদের ৩ সন্তান (যাদের বয়স ১ থেকে ১১ বছর) নিখোঁজ হন।
একটি সূত্র জানায়, এর আগে দেশে ফেরার পথে ৯ এপ্রিল হিথ্রো বিমানবন্দর পুলিশ সন্দেহভাজন হিসেবে তাদের ব্যাপক তল্লাশি করে। তাদের একদিন আটকও রাখা হয় সেখানে। পরিবারের সকল নারীর বোরকা ও হাতমোজা, পা-মোজা পরার কারণে সে দেশের পুলিশের সন্দেহ হয় বলে জানিয়েছিলেন ঐ পরিবারের এক স্বজন। তাই নির্ধারিত ফ্লাইটে তারা দেশে আসতে পারেননি। পরবর্তী ফ্লাইটে ঐ পরিবার বাংলাদেশে আসে।
ফেঞ্চুগঞ্জের মাইজগাঁও ইউপি চেয়ারম্যান জানান, আবদুল মান্নান বয়স্ক লোক। তাদের আদি নিবাস ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলার মাইজগাঁও প্রামে। আবদুল মান্নান স-পরিবার লন্ডন যাওয়ার পথে নিখোঁজ হন। লন্ডন ও বাংলাদেশে তাদের প্রচুর সম্পত্তি রয়েছে। বাড়িতে তার দুই ভাই লুলু মিয়া ও লেবুল মিয়া রয়েছেন। লুলু মিয়া শারীরিকভাবে অসুস্থ বলে জানান চেয়ারম্যান। স্থানীয় মাইজগাঁও গ্রামের জাহিদুর রহমান জানান, শুনেছি তারা লন্ডনে যাওয়ার পথে তুরস্ক থেকে নিখোঁজ হন। এরপর এখনও তাদের খোঁজ মেলেনি।
এই সংবাদটি পড়া হয়েছে : 996 বার