স্টাফ রিপোর্টার:
সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জে বালাগঞ্জের যুবক হত্যার ঘটনায় দুজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার (৫ মার্চ) দিবাগত রাতে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করে।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন- বালাগঞ্জের পশ্চিম গৌরীপুর ইউনিয়নের কলুমপুর গ্রামের আব্দুল আহাদের ছেলে কাসিম আলী (৩০) ও মৃত আব্দুল মোনাফের ছেলে নজির আলী (৪৫)।
মঙ্গলবার (৫ মার্চ) সকাল সাড়ে ৮টার দিকে সিলেট আদালতে একটি মামলার হাজিরা দিতে আসার পথে অতর্কিত হামলার শিকার হয়ে খুন হয়েছেন বালাগঞ্জের যুবক জুনেদুল ইসলাম (২৭)। ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলার উত্তর কুশিয়ারা ইউনিয়নের রুকনপুর গ্রামের জামে মসজিদের পাশে এ হামলার ঘটনা ঘটে। এ হামলায় জুনেদুলের ভাই জাহেদুল ইসলাম (৩৩) গুরুতর আহত হন। তারা দুজন কলমপুর গ্রামের কনাই মিয়ার ছেলে।
আহত জাহেদুলের শারীরিক অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে ঢাকা পঙ্গু হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। সেখানে আজ বুধবার তাঁর বাম পায়ে অপারেশন হওয়ার কথা রয়েছে। হামলাকারীদের ধারালো অস্ত্রের আঘাতে জাহেদুলের বাম পা প্রায় বিচ্ছিন্ন।
জুনেদুল ও জাহেদুলদের সঙ্গে তাদেরই গ্রামের আহাদ আলী, আক্তার আলী ও মজির উদ্দিনের জায়গা-জমি নিয়ে দীর্ঘদিনের বিরোধ রয়েছে। এরই জের ধরে দুই বছর আগে আহাদ আলী পক্ষের কয়েকজনের উপর হামলা করে একজনের পা কেটে ফেলার অভিযোগ রয়েছে জুনেদুল ও জাহেদুলদের উপর। এ ঘটনায় আদালতে মামলা বিচারাধীন। এই মামলায় হাজিরা দিতে মঙ্গলবার সকালে সিএনজি অটোরিকশাযোগে বাড়ি থেকে বের হন তারা জুনেদুল ও জাহেদুল। সকাল সাড়ে ৮টার দিকে ফেঞ্চুগঞ্জের রুকনপুর গ্রামের জামে মসজিদের পাশে পৌঁছামাত্র ১৫-২০ জন অটোরিকশাটি আটকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে হামলায় চালান। এ সময় ধারালো অস্ত্রের আঘাতে ঘটনাস্থলেই জুনেদুলের মৃত্যু হয় এবং গুরুতর আহত হন জাহেদুল। হামলাকালে তাদের চিৎকারে স্থানীয় লোকজন এগিয়ে এলে হামলাকারীরা পালিয়ে যান।
খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে ফেঞ্চুগঞ্জ ও বালাগঞ্জ থানাপুলিশ।
ঘটনার পর মঙ্গলবার রাতে জুনেদুলের পিতা কনাই মিয়া বাদী হয়ে ফেঞ্চুগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলায় কলুমপুর গ্রামের আব্দুল আহাদের ছেলে কাসিম আলী (৩০), মৃত আব্দুল মোনাফের ছেলে আব্দুল আহাদ (৫৫), আব্দুল আহাদের ছেলে হাসান (৩২), মোহাম্মদ আলী (৩০), মো. মজলু মিয়া (২৫), আব্দুল বাছিত (২৪) ও মো. আতিক (১৮), আয়াজ আলীর ছেলে ইসলাম উদ্দিন (২০), মৃত আব্দুল মোনাফের ছেলে নজির আলী (৪৫), আফতার আলী (৬০), আয়াজ আলী (৫২), নাজির আলীর ছেলে ফাহিম হোসেন (১৮) এবং আফতার আলীর ছেলে এনাম হোসেনকে (৩০) আসামি করা হয়েছে। এছাড়ার মামলায় অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে আরও ৪-৫ জনকে।
ফেঞ্চুগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গাজী আতাউর রহমান বুধবার (৬ মার্চ) সকালে বলেন- জুনেদুলের লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এ ঘটনায় হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। রাতে অভিযান চালিয়ে দুই আসামিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকিদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
এই সংবাদটি পড়া হয়েছে : 1K বার