স্টাফ রিপোর্টার:
নির্বাচন কমিশনের (ইসি) নেওয়া উদ্যোগে ‘বীর মুক্তিযোদ্ধা’ খচিত স্মার্টকার্ডের আবেদনে দেশের বীর সন্তানদের সাড়া পাচ্ছে না সংস্থাটি। তবে কেউ আবেদন করলে মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয় থেকে যাচাই-বাছাই হওয়ার পর তাদের স্মার্টকার্ড দেওয়া হচ্ছে।
এনআইডির দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা জানান, মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য ‘বীর মুক্তিযোদ্ধা’ লেখা স্মার্টকার্ড দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন। এক্ষেত্রে কেউ আবেদন করলে তার সনদ মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে যাচাইয়ের পর বিশেষ স্মার্টকার্ড দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। মাঠ পর্যায়ে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় কার্যক্রম হাতে নিতে নির্দেশনাও দেওয়া হয়েছে। তবে মুক্তিযোদ্ধাদের কাছ থেকে তেমন আবেদন পড়ছে না।
কর্মকর্তারা জানান, এ পর্যন্ত ১২০ জনের আবেদন যাচাই করে চূড়ান্ত করা হয়েছে। ১২৩ জনের আবেদন মন্ত্রণালয়ে ভেটিংয়ের জন্য পাঠানো হয়েছে। আরও ১০০ জনের মতো আবেদন প্রক্রিয়াধীন আছে। সব মিলিয়ে আবেদন পড়েছে মাত্র সাড়ে ৩শ জনের মতো। যাদের আবেদন যাচাই করে চূড়ান্ত করা হয়েছে, বা হবে তাদের কার্ড ছাপিয়ে সচিবের কাছে উত্থাপন করা হবে। এক্ষেত্রে কীভাবে বিতরণ হবে সে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। সারা দেশের সব উপজেলা পর্যায়ে আবেদন গ্রহণ চলমান আছে।
ক) বীর মুক্তিযোদ্ধারা ‘বীর মুক্তিযোদ্ধা’ শব্দ খচিত স্মার্ট জাতীয় পরিচয়পত্র প্রাপ্তির নিমিত্ত উপজেলা/থানা নির্বাচন অফিসে আবেদন দাখিল করবেন। আবেদনের সঙ্গে এতদসংক্রান্ত গেজেটসহ সাম্প্রতিককালে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় কর্তৃক সংশ্লিষ্ট মুক্তিযোদ্ধাদেরকে প্রদত্ত এমআইএস নম্বরসহ স্মার্ট কার্ড এবং ডিজিটাল সনদের সত্যায়িত কপি সংযুক্ত করতে হবে।
খ) মাসিক ভিত্তিতে সংশ্লিষ্ট উপজেলা/থানা নির্বাচন অফিসাররা যথাযথ প্রক্রিয়ায় সিনিয়র জেলা/জেলা নির্বাচন অফিসারের মাধ্যমে ওই আবেদন মহাপরিচালক, জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগ, নির্বাচন কমিশন সচিবালয়, ঢাকা বরাবর প্রেরণ করবেন।
গ) আঞ্চলিক/সিনিয়র জেলা/জেলা নির্বাচন অফিসারগণ একটি অনুষ্ঠানের মাধ্যমে মাসিক/ত্রৈমাসিকভাবে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের স্মার্ট জাতীয় পরিচয়পত্র বিতরণের উদ্যোগ গ্রহণ করবেন।
ঘ) বিতরণের ক্ষেত্রে ম্যানুয়ালি রেজিস্ট্রারে এবং ডিজিটালি এনআইডি সিস্টেমে প্রাপ্তি স্বীকারের ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।
২০২১ সালে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য স্মার্টকার্ডের ডিজাইনে পরিবর্তন বিশেষভাবে এই কার্ড দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় ইসি। এক্ষেত্রে স্মার্টকার্ডের চিপের নিচে ‘বীর মুক্তিযোদ্ধা’ শব্দগুলো লেখার সিদ্ধান্ত হয়।
জাতির সেরা সন্তানদের সম্মানার্থে কেএম নূরুল হুদার বিগত কমিশন ২০২২ সালে এই কার্যক্রম শুরু করেছিলেন। ওই বছর ১৩ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর একটি অভিজাত হোটেলে এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ৮২ জন মুক্তিযোদ্ধার হাতে স্মার্টকার্ড তুলে দেওয়াও হয়।
বিগত কমিশন বাংলাদেশ গেজেটে প্রকাশিত তালিকা অনুযায়ী ১ লাখ ৮৩ হাজার মুক্তিযোদ্ধাকে বিশেষ এই স্মার্টকার্ড দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। এক্ষেত্রে প্রথমবারের মতো কোনো একটি সুনির্দিষ্ট শ্রেণির জন্য স্মার্টকার্ডের নকশায় পরিবর্তন আনেন তারা। তবে কোনো আলোচনা না করে মুক্তিযোদ্ধাদের বিশেষ স্মার্টকার্ড দেওয়ার এখতিয়ার নির্বাচন কমিশনের নেই বলে মন্ত্রণালয় আপত্তি জানালে সেই উদ্যোগ বন্ধ হয়ে যায়।
বর্তমানে সেই উদ্যোগটিই মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলোচনা করে ফের চালু করছে কাজী হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বাধীন বর্তমান কমিশন। এক্ষেত্রে কোনো মুক্তিযোদ্ধা বিশেষ এই কার্ড নেওয়ার জন্য কেবল আবেদন করলেই নির্বাচন কমিশনার যথাযথ প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে তা নিষ্পত্তি করছে।
এই সংবাদটি পড়া হয়েছে : 1K বার