নতুনের আবাহনে পহেলা বৈশাখ এসেছে। বাংলা নববর্ষ মূলত আবহমান বাংলার কৃষি সমাজের উৎসব। ড. মুহম্মদ এনামুল হকের পর্যবেক্ষণ থেকে দেখা যায়— …পৃথিবীর সভ্য-অর্ধসভ্য সমস্ত জাতি এক আনন্দময় পরিবেশে নববর্ষ পালন করতেন এবং এখনও করেন। নেচে, গেয়ে, বন্ধু-বান্ধবদের সাথে পানাহারে মেতে, আত্মীয়-পরিজনের সাথে মিলিত হয়ে, স্থানে স্থানে আড্ডা দিয়ে হই-হুল্লোড় করে নববর্ষের বাঞ্ছিত উৎসবের পরিবেশ সৃষ্টি করা হতো এবং এখন পর্যন্ত তা হচ্ছে। বাংলা নববর্ষ সচরাচর পহেলা বৈশাখে প্রতিপালিত হলেও এটি বৈশাখ মাসব্যাপী পালনীয় উৎসব। বাংলা নববর্ষের কিছু উল্লেখযোগ্য অনুষঙ্গ রয়েছে।
পহেলা বৈশাখ সকলের উৎসব। বাংলাদেশের সকল স্তরের মানুষের জন্যে এটি একটি ধর্মনিরপেক্ষ উৎসব। পহেলা বৈশাখে আয়োজিত বাঙালির নববর্ষের উৎসবে ধর্ম, বর্ণ, গোত্র এবং অনেকাংশে রাজনৈতিক বিশ্বাস নির্বিশেষে সকলেই উদার ও আনন্দিতচিত্তে অংশগ্রহণ করেন। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে আমরা যে ধর্মনিরপেক্ষতা বা অসাম্প্রদায়িক চেতনার ভিত্তিতে ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় স্বাধীনতা সংগ্রাম এবং মুক্তিযুদ্ধের মধ্যে দিয়ে স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ অর্জন করেছি। পহেলা বৈশাখের নববর্ষ উদযাপন সেই চেতনা ও ঐতিহ্যের অন্যতম প্রধান ধারক-বাহক।
এখন স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় এবং অন্যান্য সরকারি প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি সারাদেশের সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলো পহেলা বৈশাখ উদযাপন করে বাঙালি সংস্কৃতির জয়যাত্রা অব্যাহত রেখেছে। প্রতিটি আয়োজনে সমস্বরে ধ্বনি ওঠে— ‘ধর্ম যার যার, উৎসব সবার’।
আব্দুল খালিক সম্পাদক ও প্রকাশক, ফয়সাল দস্তগীর, ব্যারিষ্টার-এট-ল-সুপ্রীম কোট-অফ-বাংলাদেশ।
এই সংবাদটি পড়া হয়েছে : 1K বার