সম্পাদকীয়:
সোমালিয়ার জলদস্যুদের হাতে জিম্মি থাকার ৩১ দিন পর অক্ষত অবস্থায় মুক্তি পেয়েছেন বাংলাদেশি ২৩ নাবিক এবং জাহাজ এমভি আবদুল্লাহ। জানা যায়, গত ১৩ এপ্রিল বাংলাদেশ সময় বিকাল ৪টার দিকে মুক্তিপণের ডলারভর্তি তিনটি ব্যাগ জলদস্যুদের হাতে পৌঁছালে নাবিকসহ জাহাজটিকে মুক্ত করা হয়। এটি খুশির ও স্বস্তির খবর, সন্দেহ নেই।
কারণ, সোমালি জলদস্যুদের হাতে জিম্মি অবস্থায় এত দ্রুত উদ্ধার হওয়ার নজির খুব বেশি নেই। আশা করা যায়, অল্প কিছুদিনের মধ্যে তাদের সুস্থ অবস্থায় দেশে ফিরিয়ে আনা সম্ভব হবে। উল্লেখ্য, ঘটনার পরপরই সরকারসহ জাহাজের সংশ্লিষ্টরা জিম্মি নাবিকদের উদ্ধারে সব রকম প্রচেষ্টা নিয়েছিল। চেষ্টা ছিল জিম্মি নাবিকদের ঈদের আগে দেশে ফিরিয়ে আনার; কিন্তু সেই চেষ্টা ব্যর্থ হয়।
তবে জাহাজসহ ২৩ নাবিককে অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে, এটিই বড় কথা। এমনিতেও নাবিকরা সাগরে দায়িত্ব পালনকালে পরিবারের সঙ্গে ঈদ উদযাপনের সুযোগ পান না। এরপরও আমরা আশা করব, ভবিষ্যতে স্বজনরা নাবিকদের কাছে না পেলেও অন্তত উৎকণ্ঠায় নয়, স্বস্তিতে থাকবেন।
উল্লেখ্য, গত ১২ মার্চ সোমালি জলদস্যুরা ভারত মহাসাগরে বাংলাদেশি কয়লাবাহী জাহাজটিকে (বাল্কশিপ) অপহরণ করে। জিম্মি করে জাহাজটির ক্যাপ্টেনসহ ২৩ নাবিককে। মোজাম্বিকের মাফুতো বন্দর থেকে জাহাজটি ৫৮ হাজার মেট্রিক টন কয়লা নিয়ে সংযুক্ত আমিরাতের শারজাহ বন্দরে যাচ্ছিল। এর আগে ২০১১ সালে একই মালিকের ‘এমভি জাহান মনি’ নামের আরেকটি জাহাজ সোমালিয়ার জলদস্যুদের কবলে পড়েছিল। সেবারও জিম্মি করা হয় জাহাজটির সব নাবিক ও ক্রুকে। সরকার ও জাহাজটির কর্তৃপক্ষের চেষ্টায় তাদেরও মুক্ত করা সম্ভব হয়েছিল। তবে এবার উদ্ধারকার্য সম্পন্ন হয়েছে স্বল্পতম সময়ে। নাবিকদের অক্ষত অবস্থায় মুক্তিলাভে সহায়তার জন্য সরকার তো বটেই, পণ্যবাহী জাহাজটির মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান কবির গ্রুপ অফ ইন্ডাস্ট্রিজ এবং কেএসআরএম গ্রুপকে সাধুবাদ জানাতেই হয়।
আমরা স্মরণ করিয়ে দিতে চাই, সাগরের যে স্থান থেকে এমভি আবদুল্লাহসহ এর নাবিকরা জিম্মি হয়েছিলেন, সেখানে সোমালি জলদস্যুদের তৎপরতা রয়েছে। কাজেই সাম্প্রতিক ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়ে ভবিষ্যতে এ পথসহ সাগরে জাহাজ চলাচলে বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করা বাঞ্ছনীয়। সাগরে চলাচলরত সব জাহাজ ও নাবিকদের সুরক্ষায় সরকার ও ভ্যাসেল কর্তৃপক্ষ যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করবে, এটাই কাম্য।
এই সংবাদটি পড়া হয়েছে : 1K বার