স্পোর্টস ডেস্ক:
অল্প রানের পুঁজি। শিশিরের কারণে দ্বিতীয় ইনিংসে বল গ্রিপ করতেই সমস্যা হচ্ছিল বোলারদের। তারপরও বেশ ভালো বোলিং করলেন মুস্তাফিজুর রহমান। এবারের আইপিএলে নিজের শেষ ম্যাচে কোনো উইকেটের দেখা যদিও তিনি পেলেন না। তার দল চেন্নাই সুপার কিংসের সঙ্গী হলো বড় হার।
চেন্নাইয়ের এমএ চিদাম্বারাম স্টেডিয়ামে বুধবার পাঞ্জাব কিংসের বিপক্ষে ৭ উইকেটে হেরেছে পাঁচবারের চ্যাম্পিয়নরা। তাদের ১৬২ রান ১৩ বল হাতে রেখেই পেরিয়ে যায় পাঞ্জাব।
৪ ওভারে একটি মেইডেনে ২২ রান দিয়ে উইকেটশূন্য থাকেন মুস্তাফিজ। চেন্নাইয়ের হয়ে একাধিক ওভার বোলিং করা পাঁচ বোলারের মধ্যে ওভারপ্রতি ৬ এর নিচে রান দেন কেবল তিনিই। ১৪টি ডট বল খেলালেও বাংলাদেশের বাঁহাতি এই পেসার ওয়াইড দেন ৫টি।
চলতি আসরে চেন্নাইয়ের হয়ে ৯ ম্যাচ খেলে এই প্রথম উইকেটশূন্য থাকলেন মুস্তাফিজ। ওভারপ্রতি ৯.২৬ করে রান দিয়ে ১৪ উইকেট নিয়ে জাসপ্রিত বুমরাহ ও হার্শাল প্যাটেলের সঙ্গে যৌথভাবে এখনও আসরের সর্বোচ্চ উইকেটশিকারি অবশ্য তিনিই।
আইপিএলে সাত আসরে খেলে এবারের চেয়ে বেশি উইকেট মুস্তাফিজ পেয়েছিলেন কেবল একবারই। ২০১৬ সালে প্রথমবার ভারতের এই ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগে খেলতে গিয়ে ১৬ ম্যাচে ১৭ উইকেট নিয়ে সানরাইজার্স হায়দরাবাদের শিরোপা জয়ে বড় অবদান রেখেছিলেন তিনি। ২০২১ আসরে রাজস্থান রয়্যালসের হয়ে ১৪ ম্যাচে নিয়েছিলেন ১৪ উইকেট।
দেশের মাটিতে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজ থাকায় আইপিএলের জন্য প্রাথমিকভাবে অনাপত্তিপত্রে মুস্তাফিজকে এপ্রিল মাসের শেষ দিন পর্যন্ত ছুটি দিয়েছিল বিসিবি। তবে পর দিন ম্যাচ থাকায় চেন্নাই ফ্র্যাঞ্চাইজি ও বিসিসিআইয়ের পক্ষ থেকে এক দিনের ছুটি বাড়ানোর অনুরোধ করা হলে তাতে সাড়া দেয় বোর্ড।
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে পাঁচ ম্যাচের সিরিজের প্রথম তিনটির দলে অবশ্য মুস্তাফিজকে রাখা হয়নি। টানা খেলার ধকল কাটিয়ে উঠতে তাকে বিশ্রাম দিয়েছে টিম ম্যানেজমেন্ট।
এদিন রান তাড়ায় প্রথম ওভারে ১২ রান তুলে ফেলে পাঞ্জাব। দ্বিতীয় ওভারে প্রথম পাঁচ বলে কোনো রান না দেওয়ার পর শেষ বলে চার হজম করেন আইপিএল অভিষিক্ত ৩৬ বছর বয়সি ইংলিশ পেসার রিচার্ড গ্লিসন। তৃতীয় ওভারে বল হাতে পেয়ে দারুণ বোলিং করেন মুস্তাফিজ, দেন কেবল ৩ রান।
পরের ওভারে প্রাভসিমরান সিংকে ফিরিয়ে চেন্নাইকে প্রথম সাফল্য এনে দেন গ্লিসন। পাওয়ার প্লের মধ্যে আরেক ওভার করতে এসে ভালো করতে পারেননি মুস্তাফিজ।
এবার প্রথম চার বলে স্রেফ ১ রান দেন তিনি। পঞ্চম বল মিড উইকেট দিয়ে চার মারেন রাইলি রুশো। এরপর একটি ওয়াইড। শেষ বলটা ছিল অফ স্টাম্পের বাইরে শর্ট ডেলিভারি, পয়েন্টের ওপর দিয়ে চার মারেন বাঁহাতি ব্যাটসম্যান রুশো।
এই ওভারে আসে ১০ রান।
মুস্তাফিজ আবার যখন বোলিংয়ে ফেরেন, পাঞ্জাবের দরকার তখন ৩৬ বলে কেবল ২৮ রান, হাতে ৭ উইকেট।
দারুণ সব স্লোয়ার, বাউন্সার ডেলিভারিতে তিনি ক্রিজে বেঁধে রাখেন বিধ্বংসী ব্যাটসম্যান শশাঙ্ক সিংকে। অবিশ্বাস্যভাবে ওভারটি মেইডেন নেন ২৮ বছর বয়সি পেসার।
পরের ওভারে একটি ছক্কায় মইন আলি দেন ১১ রান।
মুস্তাফিজ পরের ওভারে এসে এলোমেলো বোলিং করেন, ওয়াইড দেন চারটি। কোনো বাউন্ডারি হজম না করলেও সব মিলিয়ে এই ওভারে আসে ৯ রান।
পরের ওভারেই জিতে যায় পাঞ্জাব। তাদের হয়ে জনি বেয়ারস্টো ৩০ বলে ৪৬ ও রুশো ২৩ বলে করেন ৪৩ রান।
ম্যাচের একমাত্র ফিফটি আসে চেন্নাই অধিনায়ক রুতুরাজ গায়কোয়াড়ের ব্যাট থেকে। ৪৮ বলে ৬২ রানের ইনিংস খেলেন তিনি। দলের আর কেউ ত্রিশ ছুঁতে পারেননি।
এদিন পাওয়ার প্লেতে বিনা উইকেটে ৫৫ রান তুলে ফেলে চেন্নাই। তবে পাওয়ার প্লের পর থেকে টানা ৫৫ বলে ব্যাটে কোনো বাউন্ডারি পায়নি তারা। এই সময়ে ৩ উইকেট হারিয়ে তারা যোগ করতে পারে কেবল ৪৮ রান। শেষ পর্যন্ত তাদের সংগ্রহও তাই বড় হয়নি।
১০ ম্যাচে ৫টি করে জয় ও হারে ১০ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের চার নম্বরে আছে চেন্নাই।
এই সংবাদটি পড়া হয়েছে : 1K বার