ভোলা প্রতিনিধি:
ঝিনাইদহ-৪ আসনের এমপি আনোয়ারুল আজিম আনার হত্যাকাণ্ডে অভিযুক্ত সিয়ামের গ্রামের বাড়ি ভোলার বোরহানউদ্দিন পৌরসভার ৮নং ওয়ার্ডে। আনার অবসরপ্রাপ্ত স্কুলশিক্ষক আলাউদ্দিন মিয়ার বড় ছেলে। দুই সন্তানের মধ্যে সিয়াম বড়।
এমন জঘন্যতম হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় সিয়ামের পরিবার থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন এলাকাবাসী। ঘৃণ্যতম এ হত্যাকাণ্ডের বিচার চেয়েছেন তারাও।
সিয়ামের বাবা আলাউদ্দিন এবং মা ফিরোজা খানম এমন হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় হতবাক হলেও তদন্তপূর্বক খুনির বিচার চেয়েছেন। ছেলের পরিচয় দিতে গিয়ে লজ্জা পাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন তারা।
ভোলার বোরহানউদ্দিন পৌরসভার ৮নং ওয়ার্ডে সিয়ামদের বাড়িতে গিয়ে জানা গেছে, ৩৮ বছর আগে চাকরির সুবাদে বরিশাল নগরীর বটতলা নামক বাসা থেকে ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলার পৌর ৮নং ওয়ার্ডে বসবাস শুরু করেন স্কুলশিক্ষক আলাউদ্দিন মাস্টার ও তার পরিবার। আলাউদ্দিন মিয়া প্রথমে একটি সুইডিস মিশন স্কুলে চাকরি করলেও পরবর্তীতে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চাকরি করেন। বর্তমানে অবসরে আছেন।
সিয়াম স্থানীয় কুতুবা মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাশের পর পড়ালেখা করতে চলে যান ঢাকায়। ঢাকার ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি থেকে বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করে শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্রে ৩ বছর চাকরি করেন। পরে বেশ কিছুদিন বেকার সময় কাটিয়ে নতুন চাকরিতে যোগদান করেন। কি চাকরি করতেন তা জানত না তার পরিবার। তবে গত ২৫ মে সর্বশেষ পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ হলে সিয়াম নেপালে যাওয়ার কথা বলে তার বাবা-মাকে। সামাজিক যোগাযোগ ও গণমাধ্যমে সংসদ সদস্য হত্যার সঙ্গে ছেলের সংশ্লিষ্টতার কথা শুনে অনেকটাই হতবাক সিয়ামের বাবা-মা।
সিয়ামের বাবা মো. আলাউদ্দিন ও মা ফিরোজা খানম বলেন, সিয়াম ছোটবেলা থেকেই ছিল মেধাবী। কখনো কোনো খারাপ পথে চলতে দেখেননি তারা; কিন্তু হত্যার বিষয়টি নিয়ে আমরা ভীষণ চিন্তিত। তবে যদি সে জড়িত থাকে তাহলে তার যেন শাস্তি হয়।
সংসদ সদস্য হত্যার ঘটনার সঙ্গে অভিযুক্ত সিয়ামের প্রতি ঘৃণা ও নিন্দা জানান এলাকাবাসী। সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে খুনির ফাঁসি চান তারা।
কয়েকজন এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা হলে তারা জানান, ঢাকায় যাওয়ার পর তার জীবনযাপন কেমন ছিল, সেটা তাদের জানা নেই।
জানতে চাইলে বোরহানউদ্দিন পৌরসভার মেয়র রফিকুল ইসলাম বলেন, সিয়ামের বিচারের মাধ্যমে ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলা কলঙ্কমুক্ত হবে বলে আমি মনে করছি। তার শাস্তি দাবি করছি।
জানা যায়, কলকাতায় চিকিৎসা করাতে গিয়ে ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনার হত্যাকাণ্ডের অন্যতম সন্দেহভাজন মো. সিয়াম হোসেন নেপালে আটক হয়েছেন। বৃহস্পতিবার নেপাল পুলিশ তাকে আটক করেছে বলে কাঠমান্ডুর একটি কূটনৈতিক সূত্র নিশ্চিত করেছে।
আটক সিয়াম এমপি আজিমের লাশ গুমে জড়িত বলে ধারণা করা হচ্ছে। তিনি আক্তারুজ্জামান শাহীনের সহকারী হিসেবে কাজ করতেন বলে তদন্ত-সংশ্লিষ্ট পুলিশ সূত্র থেকে জানা গেছে।
সিয়ামকে দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য এরই মধ্যে বাংলাদেশ দূতাবাসের পক্ষ থেকে কূটনৈতিক যোগাযোগ শুরু হয়েছে বলে জানা গেছে।
এই সংবাদটি পড়া হয়েছে : 1K বার