স্পোর্টস ডেস্ক :
আর্জেন্টাইন মহাতারকা লিওনেল মেসির মাস্টারক্লাস পারফরম্যান্সে জয়ের ধারা অব্যাহত রেখেছে পিএসজি। এদিন একটি গোল করার পাশাপাশি বেশ কয়েকটি গোলের সুযোগ তৈরি করেন মেসি। তবে দলের আরেক তারকা কিলিয়ান এমবাপেও গোল পেয়েছেন। ফরাসি ক্লাবটির জয়ের রাতে দলের হয়ে সবচেয়ে বাজে পারফর্ম করেছেন গোলরক্ষক জুয়ানলুইজি দোন্নারুমা। তার ভুলে প্রথমার্ধে নঁতে সমতায় ফিরলেও শেষ পর্যন্ত ফরাসি জায়ান্টরা বড় জয় নিয়েই মাঠ ছাড়ে।
শনিবার (৪ মার্চ) দিবাগত রাতে লিগ ওয়ানের ম্যাচে ঘরের মাঠে নঁতেকে আতিথ্য দেয় পিএসজি। ম্যাচের শুরু থেকেই একের পর এক আক্রমণে প্রতিপক্ষকে তটস্থ করে রাখেন মেসি-এমবাপেরা। তাদের গোল ব্যবধান আরও বাড়তে পারত। তবে ক্রিস্তফ গ্যালতিয়ের দল ৪-২ ব্যবধানে বড় জয়ই পেয়েছে।
ম্যাচ শুরুর ১২তম মিনিটে প্রথম ভালো সুযোগ পায় পিএসজি। ফাবিয়ান রুইসকে বল দিয়ে ডি বক্সে ছুটে যান মেসি। এরপর স্প্যানিশ এই মিডফিল্ডার থেকে বল যায় নুনো মেন্দেসের পায়ে। তার কাট ব্যাকে নঁতের একজনের পায়ে লাগলে একটুর জন্য নাগালে পাননি এমবাপে, পেছন থেকে ছুটে গিয়ে প্রথম স্পর্শে বল জালে পাঠান মেসি। চলতি মৌসুমে এটি মহাতারকার ১৩তম গোল।
এর মিনিট পাঁচেক পর লিড দ্বিগুণ করে ফরাসি চ্যাম্পিয়নরা। প্রথমে মেন্দেসের ক্রস পা বাড়িয়ে ঠেকান নঁতে গোলরক্ষক। তার কাছ থেকে ডিফেন্ডার হ্যাজামের পায়ে বল যায়। গোলমুখে থাকা অবস্থায় তিনি সেটি ডান পায়ে নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু তার পা ছুঁয়ে বল গোললাইন ক্রস করে যায়। মুহূর্তের ভুলেই আত্মঘাতী গোল।
তবে নঁতে থেমে থাকেনি। এরপরই তারা পালটা আক্রমণে যায়। ৩১তম মিনিটে ব্যবধান কমান লুদোভিক ব্লাস। হ্যাজামের কাছ থেকে বল পেয়ে বাইলাইনের কাছ থেকে বুলেট গতির শটে কাছের পোস্ট দিয়ে জাল খুজে নেন ফরাসি মিডফিল্ডার। তবে ৩৩ মিনিটে মেসির আরেকটি গোল হতে পারত। ডি বক্সের সামনে থেকে নেওয়া তার শটটি বার ঘেঁষে বেরিয়ে যায়।
তিন মিনিট পরই ভুল করে বসেন দোন্নারুমা। প্রতিপক্ষের শট ঠিক মতো ফেরাতে না পারলে ফিরতি বলে দারুণ সুযোগ পেয়েছিলেন হ্যাজাম। তবে তিনি একটুর জন্য পা ছোঁয়াতে পারেননি। এরপর কর্নারে জটলা থেকে জাল খুঁজে নেন ক্যামেরুনের ফরোয়ার্ড ইগনাতিয়াস গানাগো। সমতায় ফেরে নঁতে। ২-২ গোলে সমতা নিয়ে বিরতিতে যায় দু’দল।
দ্বিতীয়ার্ধে নেমেও আক্রমণ অব্যাহত রাখেন মেসিরা। ম্যাচের ৫২তম মিনিটে ডি বক্সে ফরাসি ক্লাবের পক্ষে শট নিতে পারেননি নর্দি মুকিয়েলে। তবে সামনেই ছিলেন এমবাপে। মুকিয়েলে তাকেও বল বাড়াতে ব্যর্থ হন। তবে ৬০ মিনিটে আর ভুল করেনি তারা। কর্নার থেকে বল পেয়ে উঁচু করে শূন্যে ভাসান এমবাপে। বাড়ানো বলটি পেরেইরা দারুণ হেডে জালে ছোঁয়ান।
মিনিট তিনেক পরে দারুণ পেনাল্টি পায় পিএসজি। তবে ভিএআরে সেটি বাতিল হয়ে যায়। সেখান থেকে দারুণ ফ্রি-কিক নেন মেসি। কিন্তু ঝাঁপিয়ে পড়ে তার শট ঠেকিয়ে দেন গোলরক্ষক। ৭৪তম মিনিটে ২০ গজ দূর থেকে এমবাপের শট একটুর জন্য থাকেনি লক্ষ্যে। যোগ করা সময়ে অবসান হয় তার অপেক্ষার। মার্সেইয়ের বিপক্ষে আগের ম্যাচে জোড়া গোল করে কাভানির পাশে বসেছিলেন তিনি। টিমোথি পেম্বেলের কাছ থেকে বল পেয়ে পেনাল্টি স্পটের কাছ থেকে গোলরক্ষককে পরাস্ত করে ছাড়িয়ে যান উরুগুয়ের স্ট্রাইকারকে। এখন তিনি পিএসজির হয়ে সব লিগ মিলিয়ে সর্বোচ্চ গোলদাতা। পিএসজির হয়ে ২০১তম গোল করে তিনি ছাড়িয়ে যান কাভানিকে। তবে লিগ ওয়ানে সর্বোচ্চ ১৩৮ গোল কাভানির, তার চেয়ে তরুণ ফরাসি ফরোয়ার্ডের গোল একটি কম।
এই জয়ে শীর্ষে থাকা পিএসজি ২৬ ম্যাচে ৬৩ পয়েন্ট নিয়ে নিজেদের অবস্থান আরও জোরালো করল। এক ম্যাচ কম খেলা মার্সেই ৫২ পয়েন্ট নিয়ে আছে দুই নম্বরে। অন্যদিকে, পিএসজির সমান ম্যাচে ২৮ পয়েন্ট নিয়ে ১৩ নম্বরে আছে নঁতে।
এই সংবাদটি পড়া হয়েছে : 1K বার