স্টাফ রিপোর্টার:
ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম খুনের মূল পরিকল্পনাকারী হিসেবে চিহ্নিত আক্তারুজ্জামানের দুটি গাড়ি জব্দ করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। রাজধানীর গুলশানে আক্তারুজ্জামানের ভাড়া বাসার গ্যারেজ থেকে গত শনিবার গাড়ি দুটি জব্দ করা হয়। গাড়ি দুটির মধ্যে একটি সাদা রঙের প্রাডো মডেলের; অন্যটি মাইক্রোবাস।
তদন্তসংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, গত শনিবার বিকালে ডিবির একটি দল গুলশানে আক্তারুজ্জামানের ভাড়া বাসায় অভিযান চালায়। পরে বাসার নিচতলার গ্যারেজের থাকা আক্তারুজ্জামানের সাদা রঙের প্রাডো গাড়ি জব্দ করা হয়। একই গ্যারেজ থেকে আরেকটি সাদা রঙের মাইক্রোবাসও জব্দ করা হয়।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ওই ভবনের এক বাসিন্দার গাড়িচালক আবদুল খালেক সোমবার রাতে গণমাধ্যমকে বলেন, বছর দেড়েক আগে গুলশান–২ নম্বরের ৬৫ নম্বর সড়কের ১৭ নম্বর বাসার দ্বিতীয় তলার একটি অ্যাপার্টমেন্ট ভাড়া নেন আক্তারুজ্জামান। দুদিন আগে পুলিশ বাসার নিচতলার গ্যারেজ থেকে আক্তারুজ্জামানের দুটি গাড়ি জব্দ করে নিয়ে যায়।
আবদুল খালেক বলেন, ঢাকায় থাকলে গাড়ি দুটি ব্যবহার করতেন আক্তারুজ্জামান।
গত ১৩ মে কলকাতার একটি ফ্ল্যাটে খুন হন ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম।
এদিকে আনোয়ারুল আজীম খুনে জড়িত সন্দেহে গ্রেফতার হওয়া চারজনের মুঠোফোনের ফরেনসিক পরীক্ষার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। গতকাল সোমবার ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত এই আদেশ দেন।
আদালতে দেওয়া ডিবির আবেদনে বলা হয়েছে, আনোয়ারুল আজিম খুনের ঘটনায় করা মামলায় আলামত হিসেবে চরমপন্থী নেতা শিমুল ভূঁইয়া, ঝিনাইদহ জেলা আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক কাজী কামাল আহমেদ ওরফে বাবু, শিমুলের ভাতিজা তানভীর ভূঁইয়া ও শিলাস্তি রহমানের মুঠোফোন জব্দ করা হয়েছে। খুনের পর তারা নিজেদের মধ্যে হোয়াটসঅ্যাপে বিভিন্ন রকম তথ্য আদান-প্রদান করেছেন।
ডিবি আদালতকে বলেছে, সংসদ সদস্য খুনের রহস্য উদ্ঘাটনের জন্য গ্রেফতার চার আসামির মুঠোফোনের কথোপকথন, মুঠোফোনের কল রেকর্ড এবং কী ধরনের তথ্য তারা আদান-প্রদান করেছেন, তা জানা জরুরি। এ ছাড়া আসামিদের হোয়াটসঅ্যাপ নম্বরে এবং মুঠোফোনে থাকা ছবি, ভিডিওসহ অপহরণ ও খুন-সংক্রান্ত কোনো তথ্য মুছে ফেলা হয়েছে কিনা, সেটি জানা প্রয়োজন।
জব্দ করা মুঠোফোনগুলোর ফরেনসিক পরীক্ষার অনুমতি চেয়ে ডিবির করা আবেদন সোমবার মঞ্জুর করেছেন আদালত।
সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম খুনের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১২ জনের সম্পৃক্ততা পেয়েছে ডিবি। এর মধ্যে খুনের মূল পরিকল্পনাকারী হিসেবে চিহ্নিত মো. আক্তারুজ্জামান ২০ মে ঢাকা থেকে প্রথমে দিল্লি যান। সেখান থেকে নেপালের কাঠমান্ডু যান তিনি। এরপর দুবাই হয়ে তিনি যুক্তরাষ্ট্রে চলে গেছেন বলে ডিবির তদন্ত-সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানতে পেরেছে।
এই সংবাদটি পড়া হয়েছে : 1K বার