বড়লেখা সংবাদদাতা:
মৌলভীবাজারের বড়লেখায় বন্যার কারণে ৭১টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাঠদান কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। এরমধ্যে কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। আর কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে। এতে শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা ব্যাহত হচ্ছে। অবশ্য সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বন্যার পানি নেমে গেলে এসব প্রতিষ্ঠানে আবারও পাঠদান শুরু হবে।
এদিকে গত তিনদিন ধরে কখনও দিনে, আবার কখনও রাতে হালকা বৃষ্টিপাত হচ্ছে। ফলে বন্যা পরিস্থিতি তেমন উন্নতি হয়নি, স্থিতিশীল রয়েছে।
জানা গেছে, গত ১৬ জুন থেকে বড়লেখায় ভারী বর্ষণ শুরু হয়। একইসঙ্গে উজান থেকে ঢল নেমে উপজেলার ১০টি ইউনিয়নের ২৫২টি গ্রাম প্লাবিত হয়। এতে লাখো মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়ে। উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বন্যার পানি ঢুকে পড়ে। এরমধ্যে প্রশাসন কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বন্যা আশ্রয় কেন্দ্র চালু করেছে।
উপজেলা প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, পবিত্র ঈদুল আজহা ও গ্রীষ্মের ছুটি শেষে গত ২৬ জুন বড়লেখা উপজেলায় মাধ্যমিকস্তরের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো খুলেছে। অন্যদিকে গেল ৩ জুলাই প্রাথমিক বিদ্যায়লগুলো খুলেছে। কিন্তু বন্যার কারণে ৭১টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাঠদান কার্যক্রম শুরু হয়নি। এরমধ্যে ২৭টি প্রাথমিক বিদ্যালয় পানিবন্দি হয়ে পড়েছে এবং ২৫টিতে আশ্রয় কেন্দ্রে খোলা হয়েছে। অন্যদিকে মাধ্যমিকস্তরের ৮টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পানিবন্দি হয়ে পড়েছে এবং ১১টিতে আশ্রয় কেন্দ্রে খোলা হয়েছে। যার কারণে এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ষাণ্মাসিক সামষ্টিক মূল্যায়ন স্থগিত রাখা হয়েছে।
পাঠদান বন্ধ থাকা প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলো হচ্ছে, রংপুর সপ্রাবি, কাজিরবন্দ সপ্রাবি, সৎপুর বালক সপ্রাবি, উত্তর বর্ণি সপ্রাবি, বর্ণি সপ্রাবি, মিহারী সপ্রাবি, রাতখাল সপ্রাবি, শিলকুরা সপ্রাবি, নোওয়াগাঁও সপ্রাবি, সৎপুর বালিকা সপ্রাবি, পাকশাইল সপ্রাবি, উজিরপুর সপ্রাবি, মনারাই সপ্রাবি, পশ্চিম বর্ণি সপ্রাবি, আবদুস ছাত্তার সপ্রাবি, কান্দিগ্রাম মিহারী সপ্রাবি, তালিমপুর সপ্রাবি, গলগজা সপ্রাবি, গোপালপুর সপ্রাবি, দ্বিতীয়ারদেহী সপ্রাবি, খুটাউরা সপ্রাবি, হাকালুকি সপ্রাবি, গগড়া সপ্রাবি, শ্রীরামপুর সপ্রাবি, হাল্লা সপ্রাবি, ইসলামপুর সপ্রাবি, কাঞ্চনপুর সপ্রাবি, বড়ময়দান সপ্রাবি, মুর্শিবাদকুরা সপ্রাবি, পাবিজুরী সপ্রাবি, টেকাহালী ফুরকান আলী সপ্রাবি, বাঘমারা সপ্রাবি,কটালপুর সপ্রাবি, সুজানগর বালিকা সপ্রাবি, দশঘরি সপ্রাবি, পাটনা সপ্রাবি, ভোলারকান্দি সপ্রাবি, টুকা সপ্রাবি, গুলুয়া সপ্রাবি, চান্দপুর সপ্রাবি, সুড়িকান্দি সপ্রাবি, পানিসাওয়াসপ্রাবি, পূর্বশংকরপুর সপ্রাবি, বারইকান্দি সপ্রাবি, মহদিকোনা সপ্রাবি, সোনাতুলা সপ্রাবি, মাইজগ্রাম সপ্রাবি, দক্ষিণচান্দ গ্রামসপ্রাবি, সায়পুর সপ্রাবি, রাঙ্গাউটি সপ্রাবি, দাসেরবাজার সপ্রাবি ও দক্ষিণবাগীরপার সপ্রাবি।
মাধ্যমিকস্তরের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো হচ্ছে, গাংকুল পঞ্চগ্রাম আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়, হাজী সামছুল হক আদর্শ মাধ্যমিক বিদ্যালয়, টেকাহালী উচ্চ বিদ্যালয়, ইউনাইটেড উচ্চ বিদ্যালয়, হাকালুকি উচ্চ বিদ্যালয়, কানসাই হাকালুকি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, পাকশাইল আইডিয়াল হাই স্কুল, ইটাউরী হাজী ইউনুছ মিয়া মেমো. উচ্চ বিদ্যালয়, শাহবাজার আদর্শ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, ঈদগাহ বাজার বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, বর্ণি আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়, পশ্চিম বর্ণি আয়মনা বিবি উচ্চ বিদ্যালয়, সুজাউল মাধ্যমিক বিদ্যালয়, সোনাতুলা উচ্চ বিদ্যালয়, ছোটলিখা উচ্চ বিদ্যালয়, সিদ্দেক আলী উচ্চ বিদ্যালয়, পরগনাহী দৌলতপুর সিনিয়র আলিম মাদ্রাসা, ইটাউরী মহিলা আলিম মাদ্রাসা ও তালিমপুর বাহারপুর দাখিল মাদ্রাসা।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা একেএম জুবায়ের আলম সোমবার দুপুরে বলেন, উপজেলার ২৭টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বন্যার পানি ঢুকেছে এবং ২৫টিতে আশ্রয় কেন্দ্রে খোলা হয়েছে। পানিবন্দি থাকায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর অনেক ক্ষতি হয়েছে। পানি নেমে গেলে আবার পাঠদান শুরু হবে।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা হাওলাদার আজিজুল ইসলাম বলেন, বন্যায় ৮টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পানিবন্দি হয়ে পড়েছে এবং ১১টিতে আশ্রয় কেন্দ্রে খোলা হয়েছে। যার কারণে এসব প্রতিষ্ঠানে ষান্মাষিক সামষ্টিক মূল্যায়ন (পরীক্ষা) গ্রহণ করা যাচ্ছে না। পানি নেমে গেলে এসব প্রতিষ্ঠানে ষান্মাষিক সামষ্টিক মূল্যায়ন কার্যক্রম নেওয়া হবে।
এই সংবাদটি পড়া হয়েছে : 1K বার