শান্তিগঞ্জ সংবাদদাতা:
সুনামগঞ্জের শান্তিগঞ্জ উপজেলায় মোছাদ্দিক আহমদ নামের চৌদ্দ বছরের এক কিশোরের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। মোছাদ্দিক উপজেলার পশ্চিম পাগলা ইউনিয়নের নিদনপুর গ্রামের বাসিন্দা মৃত জহির উদ্দিন ওরফে জফু মিয়ার ছেলে এবং পশ্চিমপাড়া ইমদাদিয়া মাদ্রাসার মতুয়াস সিতা ২য় বর্ষের (৭ম শ্রেণি) ছাত্র।
শুক্রবার বিকাল আনুমানিক সাড়ে ৪ ঘটিকার সময় এই ঘটনাটি ঘটতে পারে ধারণা করছেন স্থানীয়রা।
তারা জানান, মোছাদ্দিক অত্যন্ত সহজসরল ভাবে চলাফেরা করতেন। তার এক বোন আছে। বীরগাঁও গ্রামে তার বিয়ে হয়েছে। বোনের বিয়ের পর থেকে মা-ছেলে মিলে মাত্র দু’জনের সংসার তাদের। মোছাদ্দিক নিয়মিত মাদ্রাসায় যেতেন। আসা-যাওয়ার সময় কারো সাথে তেমন কথা বলতেন না। সার্বক্ষণিক মায়ের সাথে সাথে থাকতেন। ঘটনার দিন সকালে তার মা চিকিৎসার জন্য সিলেটে গিয়েছিলেন। মোছাদ্দিক নিজেই মাকে নৌকায় করে সড়কে তুলে দিয়েছিলেন। তারপর গোসল করে জুম্মার নামাজও আদায় করেছেন মসজিদে গিয়ে। নামাজ আদায় শেষে বাড়িতে এসে পানিতে নেমে বেশ কিছুক্ষণ একা একা সাতার কেটেছেন তিনি। এরপরই তার আর কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি। সন্ধ্যার আগে মোরগ ঘরে ডুকানোর জন্য তাদের বসতঘরে দরজায় যান মোছাদ্দিকের খালা মাশেদা খাতুন ওরফে রাশেদা (৫৫)। দরজা ভিতর থেকে বন্ধ পেয়ে অনেক ডাকাডাকি করেন। পরে টিনের বেড়ার ফোঁটা দিয়ে দেখেন বসত ঘরের তীরের সাথে মোছাদ্দিক ঝুলে আছেন। তৎক্ষণাৎ চিৎকার দিলে পাড়াপ্রতিবেশি দৌঁড়ে আসেন।
পশ্চিমপাড়া ইমদাদিয়া মাদ্রাসার মুহতামিম মাও. আতিকুল হক বলেন, মোছাদ্দিক খুব ভালো ছেলে ছিল। কখনো কারো সাথে ঝগড়া এমনকি বড় গলায় কথা বলতেও দেখিনি। মাত্র মতুয়াস সিতা ২য় বর্ষের অর্থাৎ সপ্তম শ্রেণির ছাত্র ছিল সে। তার মনে কি এমন দুঃখ ছিলো যে এভাবে নিজের জীবন নিজেই শেষ করে দিলো।
ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ঝুলন্ত অবস্থা থেকে লাশ নামিয়ে সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করেছে। পরে লাশের ময়নাতদন্ত করতে সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে নিয়ে যায় শান্তিগঞ্জ থানা পুলিশ।
এই ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন শান্তিগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজি মোক্তাদির হোসেন। তিনি বলেন, পাগলায় একজন কিশোর গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। ঘটনাস্থলে গিয়ে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছেন। এ বিষয়ে একটি অপমৃত্যুর মামলার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।
এই সংবাদটি পড়া হয়েছে : 1K বার