এডভোকেট মো: আমান উদ্দিন:
আল্লাহ ১৮ হাজার মখলুকাত সৃষ্টি করেছেন। আশরাফুল মখলুকাত বা সৃষ্টির শ্রেষ্ঠ হিসাবে মানুষ কে সৃষ্টি করেছেন। আল্লাহর উপর যাদের অগাধ বিশ্বাস আছে তাহারা নিশ্চয়ই জানেন, নেকির, মুনকির নামে ২জন ফেরেসতা মানুষের আমল নামা লিপিবদ্ধ করনের জন্য বিনা বেতনে নিয়োগ প্রদান করেছেন। তাহাদের কাজ তদারকির দায়িত্ব স্বয়ং আল্লাহ দেখবাল করেন। কথায় আছে, “আল্লাহ ছাড় দেন, ছেড়ে দেন না।” যেমন, প্রশিক্ষিত বাহিনী দিয়ে নারায়নগঞ্জে ৭ খুন করানো হল। সিমেন্ট, ইট, বালু, পাথর ইত্যাদি মিশ্রিত করে পরিকল্পিত ভাবে বুড়িগঙ্গাঁ নদীতে ফেলে দেওয়া হল। লাশের শরিরে কি এমন শক্তি ছিল, তাহারা ভেসে উঠে হত্যাকারীদের বিচারের মুখামুখি করলেন। অপরাদীরা বর্তমানে বিচারের রায়ে ডেথ সেলে মৃত্যুর প্রহর গুনিতেছে। ৫৭ জন সেনা অফিসার বি.ডি. আর বিদ্রোহের নামে নৃশংস ভাবে হত্যা করা হল। তাদের কি বিচার হবে? সাগর রুনি হত্যার বিচার কি হবে? শাপলা চত্বরের রাতের আধারে নৃশংসভাবে হেফাজতের নিরীহ আলিমদের হত্যার বিচার কি হবে? হবে, অবশ্যই হবে। বিচার তো শুরু হয়ে গেছে। পুলিশ বাহিনী বা বিজিবি বা সেনাবাহিনী কখনও দুষি হতে পারে না। বিশেষ চাটুকার তাহার ব্যক্তি স্বার্থকে প্রাধান্য দিতে গিয়ে এসব হত্যাকান্ডে নেতৃত্ব দিয়েছেন। এসব ক্ষমতাধরদের হুকুম তামিল না করিলে, সহযোগিতা না করিলে অন্যায়ভাবে তাদেরকে নানাভাবে হয়রানি করবেন। তাদের হুকুম পালন না করিলে, সৎ অফিসারদের বিনা দোষে বিশেষ ট্রাইবুনাল করে যে কোন রায় দিয়ে তাদের ও তাদের পরিবারের সদস্যদের হয়রানির সম্মুখীন হতে হবে। এ ভয় থেকেই সহযোগিতা করেছেন মাত্র। সরকারের মুখপাত্র জনাব ওবায়দুল কাদের বলেছেন, দৈনিক ইত্তেফাক পত্রিকার ২২/০৬/২০২৪ ইং তারিখের গুজব ছড়িয়ে আওয়ামীলীগকে দুর্নিতিবাজ বানানোর চক্রান্তে লিপ্ত বি.এন.পি. জামাত। একই পত্রিকায় পুলিশ সার্ভিস এসোসিয়েশন নেতৃবৃন্দ বলেছেন, পুলিশ নিয়ে সংবাদ প্রকাশে আরো সতর্ক থাকার জন্য। জনাব কাদের তো আর বলেন নাই, আই, জি.পি (সাবেক) বে-নজির আহমদ, সেনাবাহিনীর প্রধান (সাবেক) আব্দুল আজিজ, ডি.এম.পি কমিশনার (সাবেক) আসাদুজ্জামান মিয়া প্রমুখ পত্রিকায় প্রকাশিত সম্পদের তথ্য সঠিক নহে। অনুরূপ পুলিশ সার্ভিসেস এসোসিয়েশন নেতৃবৃন্দ প্রতিবাদ করেন নাই, তাদের বিরুদ্ধে প্রকাশিত খবর সঠিক এবং সত্য নহে। অহেতুক মিথ্যাও বানোয়াট কল্পকাহিনী সাজিয়ে কাহারও বিরুদ্ধে খবর প্রকাশিত হলে ক্ষতিগ্রস্থ ব্যক্তি ৫০০, ৫০১, ৫০২ ধারায় যে পত্রিকা ছাপিয়েছে, সেই পত্রিকার প্রতিবেদক, প্রকাশক এর বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করে ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগ আছে। সরকার বা পুলিশ এসোসিয়েশন কেন তাদের পক্ষ নিবেন। ডালাওভাবে আপনাদের কে তো আর কেহ কিছু বলে নাই। যদি এসব কর্মকর্তা অপরাধী হয়ে থাকেন, তাহলে আইনি ব্যবস্থা গ্রহনে সক্রিয় সহযোগিতা করা। প্রকাশ থাকা আবশ্যক, সূরা জ¦ীন পাঠ করিলে যে ব্যক্তির শরিরে শয়তান স্পর্শ করিয়াছে, সেই ব্যক্তির গায়ে জ¦ালা পোড়া আরম্ভ হয়। কাউকে চোর বা ডাকাত বলিলে যে ব্যক্তি চোর বা ডাকাতের সাথে সংশ্লিষ্ট সেই ব্যক্তিই মনে করতে পারে, মনে হয় আমাকে উদ্দেশ্য করে বলা হচ্ছে। নির্দোষ ব্যক্তির গায়ে লাগার তো কোন কারন নেই। তবে গায়ে পড়ে যেহেতু এসব নিন্দনীয় কাজের প্রতিবাদ না করে, ডেলকার্নেগীর ভাষায় উদ্দেশ্যহী বক্তৃতা বিবৃতি দেওয়ার চেষ্টা করিতেছেন। এসব অপকর্ম কারীদের পক্ষেই কথা বলেছেন। সাধারন জনগনকে চোখ রাঙ্গাঁনি দেখিয়েছেন বলে আমজনতার বুঝতে বাকী নেই। আপনারা যতই, চোখ রাঙ্গাঁন না কেন, সাধারন জনগন বুঝে গেছে, শির্ষ রাজনীতিবিদ প্রশাসনের কর্তাব্যক্তি প্রায় সকলে দুর্নিতির অন্ধকারে নিমজ্জিত। বে-নজির সাহেব নছিয়ত করতে গিয়ে বলেছিলেন, দুর্নিতিবাজ যিনি-ই হউন না কেন, মাটির নীচ থেকে তুলে এনে বিচারের কাঠগড়ায় দাড় করাবেন? বিভিন্ন মাধ্যমে খবর পাইতেছি, তিনি নিজে দুর্নিতিবাজদের শীর্ষ নেতা হিসাবে বাংলাদেশ থেকে পালিয়ে গেছেন। হয়ত, জীবদ্দশায় বা মৃত অবস্থায় ও বাংলাদেশের মাটি তাকে গ্রহন করবে না। সব দুর্নিতিবাজদের তালিকা আল্লাহ প্রদত্ত নেকির-মুনকির ফেরেস্তার মাধ্যমে ইতিমধ্যে তালিকা চুড়ান্ত হয়ে গেছে। এখন শুধু বিচারের অপেক্ষা করতে হবে, অপকর্মকারীরা কোন দন্ডে দন্ডিত হন? বিরোধী দলবিহীন সরকার চালাতে বাকশাল তথা একদলীয় শাসন কায়েম করেছিলেন যাহা সুখকর হয়নি। বর্তমান সরকারের কার্যক্রম থেকে মনে হচ্ছে সেই বাকশালী শাসনের দিকে কি সরকার এগুচ্ছে? স্মরণ করিয়ে দিতে চাই, প্রফেসর আব্দুর রাজ্জাক জনাব এ.কে.এম.ফজলুল হক এর জীবনী লিখতে তাহার নিকট তথ্য উপাত্ত জানতে গিয়েছিলেন। জনাব হক প্রফেসর রাজ্জাককে বলেছিলেন মতলব কি? উত্তরে প্রফেসর সাহেব বলেছিলেন, গ্রামে গেলে আপনি খাঁটি চাষা, নবাব বাড়ীতে গেলে আপনি খাঁটি নবাব, সংসদে গেলে আপনি খাঁটি পার্লামেন্টারিয়ান, ইত্যাদি গুন কিভাবে অর্জন করিয়াছেন? এসব জানার আকাংখা নিয়ে বইটিতে আপনার বহুরুপী চরিত্র কিভাবে অর্জন করলেন, তা সাধারন জনগনকে জনানো। জহরলাল নেহেরু তাহার সরকারের সময় সংসদে বিরোধী দলের সদস্য ছিল মাত্র ৫ জন। জনাব সতিশ চন্দ্র দাসকে পরামর্শ দিয়েছিলেন শক্তিশালী বিরোধী দল গঠনের জন্য। কারন বিরোধী দল হল, ছায়া সরকার। ছায়া সরকারের পরামর্শে সরকার পরিচালিত হলে, সরকারের ভূলত্রæটি অনেকটা শুধরে নেওয়ার সুযোগ থাকে। জনাব রাজ্জাক বিভাগীয় কাজে শেখ মুজিবুর রহমান সাহবের সাথে সাক্ষাত করতে গিয়েছিলেন। স্মরণ করিয়ে দিয়েছিলেন, জহরলাল নেহেরুর ছায়া সরকারের পরামর্শের কথা। উত্তরে………….!
লেখক: সভাপতি, সু-শাসনের জন্য নাগরিক (সুজন), বিয়ানীবাজার, সিলেট।
এই সংবাদটি পড়া হয়েছে : 1K বার