এডভোকেট: মো: আমান উদ্দিন:
শিক্ষা জাতির মেরুদন্ড। মেরুদন্ডহীন প্রানী সোজা হয়ে দাড়াতে পারে না। মেরুদন্ড ও সমাজ বিনির্মানে পূর্ব-পুরুষদের উদ্যোগে প্রতি এলাকায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। জেনে রাখা ভাল, কোন প্রতিষ্ঠানই সরকার প্রতিষ্ঠা করে নাই। সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে সমাজপতিরা এসব প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠিত করে গিয়েছেন। তাহারা জানতেন এসব প্রতিষ্ঠান থেকে প্রতিটি ছাত্র-ছাত্রী সুু-শিক্ষা অর্জন করে ভাল মানুষ হবে। তাহাদের ইচ্ছা ছিল, সু-শিক্ষা অর্জন করতে পারলে, আত্মা শান্তি পাবে।
সমাজপতিদের উদ্যোগে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠিত হলে ও পরবর্তীতে জাতীয় নীতিমালা অনুযায়ী সরকার বিধিমোতাবেক এসব প্রতিষ্ঠানে যোগ্য শিক্ষক নিয়োগ করে দিয়েছেন এবং সরকারী ব্যবস্থাপনায় শিক্ষকদের বেতন, ভাতা ইত্যাদি প্রদান করে থাকেন।
অভিভাবকরা ছেলে-সন্তানদের প্রতিষ্ঠানে ভর্তি করে শিক্ষকদের বলতেন, আদর্শ ছাত্র গড়তে যত ধরনের শাসন দরকার, তার সবই ক্ষমতা দিতেন শিক্ষকদের হাতে। হালের দুর্নিতিবাজ দিপু মনি গংদের শিক্ষামন্ত্রী হওয়ার পর অভিভাবকদের দেওয়া সেই ক্ষমতা শিক্ষকদের নিকট থেকে কেড়ে নিয়েছেন। শিক্ষকসমাজ সামান্য বেতন-ভাতার জন্য এ মহৎ পেশায় আসেননি। ছাত্র-ছাত্রীদের থেকে প্রাপ্য সম্মান ও ভালবাসার জন্য এ পেশাকে বেছে নিয়েছেন। শিক্ষকদের প্রধান কাজ শিক্ষার্থীদের শিক্ষা দেওয়া, আর শিক্ষার্থীদের সেই শিক্ষা গ্রহন করা।
যখনই শিক্ষার্থীরা, শিক্ষককে শিক্ষাব্যবস্থার বাহিরে শিক্ষকের অথিত জীবন নিয়ে প্রশ্ন করিবে, তখন আর বুঝতে বাকী নেই সেই শিক্ষার্থী পথভ্রষ্ট হয়ে গেছে। আর যে একবার পথভ্রষ্ট হয়ে গেছে, তার জীবনটা ধ্বংশ হতে বাধ্য। শিক্ষকের অভিশাপ শিরধার্য্য। বাদশা আলমগীর তাহার ছেলে শিক্ষকের পায়ে পানি দিচ্ছে। শিক্ষক ভয়ে তটস্ত। বাদশা শিক্ষককে তার কার্যালয়ে ডেকে নিলেন। শিক্ষক কিন্তু ভয়ে থরথর করে কাপছেন। বাদশার নিকট যাওয়ার পর সেই শিক্ষককে অভয় দিয়ে বললেন, আমার ছেলে আপনার পায়ে পানি ডালিতেছে অসম্মানজনকভাবে। তাহার উচিত ছিল, নিজ হাতে পা মুছে আস্তে আস্তে সেবা নিশ্চিত করিতে। সে ব্যর্থতার জন্য আমি দুঃখিত। শিক্ষক খুশি হয়ে বললেন, আজ হতে চীর উন্নত হল শিক্ষাগুরু শীর, নিশ্চয়ই তুমি মহান উদার বাদশা আলমগীর। আমি ছাত্র এবং শিক্ষক উভয়ই ছিলাম। বাস্তব অভিজ্ঞতার আলোকে বলতে চাই, যে সব ছাত্র-ছাত্রী ইচড়ে পাকার মত শিক্ষকদের সাথে বেয়াদবি করেছে, খবর নিয়ে দেখেন তাহারা কিন্তু তাহাদের পিতা মাতার সাথে বেয়াদবি করিতেছে।
পরিশেষে বলব, শিক্ষকদের প্রধান কাজ শিক্ষার্থীদের শিক্ষা দেওয়া, দলবাজী করা নহে। অন্যদিকে শিক্ষার্থীদের প্রধান কাজ শিক্ষা গ্রহন করা, শিক্ষকদের ত্রæটি দেখা নহে।
লেখক: সভাপতি, সু-শাসনের জন্য নাগরিক (সুজন), বিয়ানীবাজার সিলেট।
এই সংবাদটি পড়া হয়েছে : 1K বার