ইবি কুষ্টিয়া সংবাদদাতা :
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলে ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীদের রাতভর নির্যাতনের শিকার বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিন্যান্স এন্ড ব্যাংকিং বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী ফুলপরী খাতুন ক্যাম্পাসে ফিরেছেন।
রোববার (১২ মার্চ) বেলা ১২টার দিকে গ্রামের বাড়ি পাবনা থেকে প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র নিয়ে বাবার সঙ্গে ক্যাম্পাসে ফেরেন ফুলপরী। পরে তিনি বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলে যান। সেখানে তার নামে বরাদ্দ হওয়া পঞ্চম তলার একটি কক্ষে থাকবেন তিনি। সেই সঙ্গে সোমবার থেকে নিয়মিত ক্লাস-পরীক্ষায়ও অংশগ্রহণ করবেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করে ফুলপরী বলেন, বাবার হাত ধরে হলে প্রবেশ করেছি। সাথে স্যাররা ছিলেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথমদিনের মতো ভালো লাগছে। আপাতত কোনো সমস্যা নেই। আমি ইতিমধ্যেই একমাস পিছিয়ে গেছি। এখন লেখাপড়ার দিকে মনোযোগী হতে চাই।
এ বিষয়ে ফুলপরীর বাবা আতাউর রহমান বলেন, মেয়েকে নিয়ে ক্যাম্পাসে এসেছি। প্রশাসন নিরাপত্তা দিয়েছে। মেয়ে এখন থেকে হলে থাকবে। আগামীকাল (সোমবার) থেকে ক্লাস শুরু করবে।
বঙ্গমাতা হলের প্রভোস্ট প্রফেসর ড. মিয়া রাসিদুজ্জামান বলেন, হাইকোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী তার আবাসন নিশ্চিত করা হয়েছে। তার মেডিক্যাল চেকআপও সম্পন্ন করা হয়েছে। কিছু টেস্ট বাকি আছে যা আগামীকাল (সোমবার) করা হবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেষ্টা প্রফেসর ড. শেলীনা নাসরীন বলেন, আমরা তার সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছি। আমরা চাই সে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসুক। নিয়মিত ক্লাস পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করুক।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর প্রফেসর ড. শাহাদৎ হোসেন আজাদ বলেন, ফুলপরী তার পছন্দের বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলে উঠেছেন। তার জন্য পর্যাপ্ত নিরাপত্তার ব্যবস্থা করেছি। তার নিরাপত্তার কোনোরুপ ঘাটতি রাখা হবে না।
এদিকে ছাত্রী নির্যাতনের ঘটনার এক মাস পেরিয়ে গেলেও এখনো সেই ভিডিও ফুটেজ সরবরাহ করতে পারেনি হল কর্তৃপক্ষ। এ ঘটনায় হল প্রশাসনের সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের চিহ্নিত করা এবং ক্যামেরা সিস্টেম কার্যকরভাবে পরিচালনা করার লক্ষ্যে তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। রোববার (১২ মার্চ) বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) এইচ এম আলী হাসান এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, কমিটিতে আইসিটি সেলের পরিচালক প্রফেসর ড. আহসান-উল-আম্বিয়াকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। আগামী সাত কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।
অপরদিকে ক্যাম্পাসে র্যাগিং প্রতিরোধে পাঁচ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করেছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) প্রশাসন। কমিটিতে প্রক্টর প্রফেসর ড. শাহাদৎ হোসেন আজাদকে আহবায়ক এবং উপ-রেজিস্ট্রার আব্দুল হান্নানকে সদস্যসচিব করা হয়েছে। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন ছাত্র-উপদেষ্টা প্রফেসর ড. শেলীনা নাসরীন, প্রভোস্ট কাউন্সিলের সভাপতি প্রফেসর ড. দেবাশীষ শর্মা ও আইন বিভাগের সভাপতি প্রফেসর ড. রেবা মণ্ডল। রোববার (১২ মার্চ) বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) এইচ এম আলী হাসান এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার পরিবেশ অধিকতর সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে পরিচালনার জন্য উপাচার্য এই অ্যান্টি র্যাগিং ভিজিলেন্স কমিটি গঠন করেছেন। কমিটি হাইকোর্টের নির্দেশনা মোতাবেক কার্যক্রম পরিচালনা করবে। আগামী দুই বছরের জন্য এ কমিটি বলবৎ থাকবে।
এই সংবাদটি পড়া হয়েছে : 1K বার