এডভোকেট মো: আমান উদ্দিন:
মানুষ মরনশীল। শেখ হাসিনা সহ প্রতিটি প্রানীই মরনশীল। প্রতিটি সাধারন মানুষ আর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এক নন। সাধারন মানুষের দাফন কার্যাদি প্রকৃতির নিয়ম অনুযায়ী হবে। এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দুর্দান্ত প্রভাবশালী। ৫৫,৫৯৮ বর্গ মাইলের প্রতিটি ইঞ্চিতে একচ্ছত্র প্রভাব প্রতিপত্তির ছিলেন। ৫ই আগষ্ট ২০২৪ (জুলাই-আগষ্ট) বিপ্লবের পূর্বে। ক্ষমতাকে আকড়ে থাকতে, নিষ্পাপ শিক্ষার্থীদের উপর কি নির্দয়ভাবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে দিয়ে গনহত্যা চালিয়েছেন। নিরস্ত্র দেশবাসি অস্ত্রধারীদের কিভাবে বিতাড়িত করতে হয়। শেখ হাসিনা চেয়ে ছিলেন অস্ত্রধারীদের দিয়ে ক্ষমতায় ঠিকে থাকরে জন্য। কিন্তু ফ্যসিস্ট শেখ হাসিনার শেষ রক্ষা হয়নি। কার্গো হেলিকপ্টার নিয়ে (মালবাহি) অবৈধ ভাবে পলায়ন করতে হয়েছে ভারতে। অগনিত মুজিব ও শেখ হাসিনা ভক্তদের বিপদের মধ্যে ফেলে নিজের জীবনকে নিরাপদ করলেন। নিজস্ব পরিবার বলতে যা বুঝায়, তা কিন্তু শেখ হাসিনার নেই। কারন শেখ হাসিনার স্বামী নিয়ে বিতর্ক আছে ( আমার ফাসি চাই বই এর তথ্য মতে)। ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় যুক্তরাস্ট্র বংশধ্বোত ক্রিষ্টিনাকে (ইহুদি) বিয়ে করেছে। পুতুলের স্বামী দুবাই জেলে। শেখ রেহানার ছেলে মেয়েরা বিতর্কিত। যুক্তরাজ্যে খৃষ্টান ছেলে মেয়েদের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ। বংশ মর্যাদা ভালো হলে এভাবে হওয়ার কথা ছিল না। অগনিত নেতা কর্মীদের ছেড়ে যেভাবে শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন, অনুরুপ শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭১ সালে রনক্ষেত্রে যুদ্ধরত যুদ্ধাদের ফেলে ২৫ শে মার্চ পশ্চিম পাকিস্তানীদের নিকট স্বেচ্ছায় সাদা পায়জামা, ট্রাউজার ও বেøজার পরে আনুষাঙ্গিক জিনিস পত্র নিয়ে ৯ মাস যুদ্ধকালীন সময়ে পশ্চিম পাকিস্তানিদের কারাগারে রাজবন্ধী ছিলেন। অস্থায়ী সরকারের প্রথম প্রধানমন্ত্রী তাজ উদ্দিন, জেনারেল আতাউল গনি ওসমানী (স্বশস্ত্র বাহিনীর সর্বাধীনায়ক) প্রমুখদের কে অগ্নিকুন্ডের মধ্যে ফেলে শেখ সাহেব নিরাপদ জীবন যাপন করেন। শিরিন শারমীন রচিত গবেষনামূলক বই “পিতা ও নেতা ” বইটি এর জ¦লন্ত স্বাক্ষী। ইতিহাসের মহানায়কদের জনগন ভ‚লবে না। যেমন: হোসেন শহিদ সোহরাওয়ার্দী, মাওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী, তাজ উদ্দিন, জিয়াউর রহমান প্রমুখ।
শেখ মুজিব যেভাবে হোসেন শহিদ সোহরাওয়ার্দী, মাওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী, সামসুল হক, তাজ উদ্দিন আহমদ, এম.এ.জি. ওসমানী সহ অগনিত আদর্শবান নেতাদেরকে মূল্যায়ন করেননি, তেমনি শেখ হাসিনা ও করেননি। কিন্তু সাধারন জনগন এসব বরেণ্য নেতাদেরকে ভ‚লে নাই। ১৯৭০ এর সংসদ সদস্যগন ১৯৭২ সালে বাংলাদেশ যে লক্ষ্য উদ্দেশ্য নিয়ে স্বাধীনতা যুদ্ধ করেছিল, সেই আকাংখাকে বাস্তবায়নের জন লিখিত সংবিধান অনুমোদন দিয়েছিলেন। কিন্তু ১৯৭৩ সালে নতুন সরকার গঠিত হয়। সেই সরকারের নেতা ছিলেন শেখ মুজিবুর রহমান। আড়াই বৎসরের শাসনকালে সংবিধানে ৪টি সংশোধনী আনেন। ১৯৭২ সালের মূল স্পিরিট থেকে চলে আসলে জনগন ও মুখ ফিরিয়ে নেয়। ১৯৭৫ সালে নৃশংস হত্যাকান্ড হয়। জানাযায় মাত্র ১৩ জন উপস্থিত ছিলেন। যদিও সেনা প্রধান কে.এম. শফিউল্লাহ, একে খন্দকার, রক্ষী তোফায়েল আহমদ সহ এখনো জীবিত এবং আওয়ামীলীগের উপদেষ্টা মন্ডলির সদস্য। তাহার এই নির্মম পরিনিতে প্রশাসনের কোন ব্যক্তি এগিয়ে আসেননি। সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে এসব নেতা ও কর্তা ব্যক্তিরা উত্তর দিতেন ‘আমরা পরিস্থিতির স্বীকার ছিলাম’। অতিথ কর্মের জন্য ক্ষমা চেয়ে শেখ হাসিনা ১৯৯৬ ও ২০০৮ সালে ক্ষমতাসীন হয়ে পিতার ন্যায় প্রতারনা শুরু করলেন। যাহার প্রতিদান “জুলাই-আগষ্ট ২০২৪” এর ৫ই তারিখ। মালবাহি বিমানে পিছনের দরজা দিয়া কথিত স্বামী স্ত্রীর(আব্দুল মুমিন এর তথ্য মতে) দেশে নিরাপদে চলে গেলেন। কিন্তু লক্ষ লক্ষ নেতাকর্মী কে কোথায় কিভাবে তাহার কি খোজ নিতেছেন? নেওয়ার প্রশ্নই উঠে না। কারণ প্রায় ২ হাজার নিষ্পাপ ছাত্র জনতাকে গনহারে হত্যার নির্দেশ দিলেন। গুম খুন, অপহরন করালেন। ক্রসফায়ারে নিয়ে হত্যা করালেন। সঠিক মা হলে ছেলে / মেয়ে হারানোর কষ্ট বুঝতেন। যেখান থেকেই হউক না কেন, দেশবাসীর নিকট নিঃশর্ত ক্ষমা চাইতে পারতেন। মৃত্যুর পর দেশবাসী যেন তাহাকে বৈধভাবে দাফন কার্যাদি সম্পাদনের জন্য সাড়ে তিন হাত ভ‚মি দাস করেন। পৃথিবীর মানচিত্রে শেখ হাসিনার জন্য আপাতত: সাড়ে তিন হাত বৈধ ভ‚মি, বা রাষ্ট্রে বা পাসপোর্ট এর কোন কিছুই নেই। শেখ হাসিনা ক্ষমা চাইবে কেন? সে তো দানব। মানুষরুপি পশু। উদাহরন স্বরুপ: শহীদ বজলুল হুদাকে নিজ হাতে জবাই করেছেন।
লেখক: সভাপতি, সু-শাসনের জন্য নাগরিক (সুজন), বিয়ানীবাজার, সিলেট। মোবাইল: ০১৮১৯-১৭৬২১৭।
এই সংবাদটি পড়া হয়েছে : 980 বার