Daily Jalalabadi

  সিলেট     মঙ্গলবার, ১৯শে নভেম্বর ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ  | ৪ঠা অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

হবিগঞ্জ সীমান্তে অবৈধ লোক পারাপারে অভিনব কৌশল

admin

প্রকাশ: ১৯ নভেম্বর ২০২৪ | ১১:৫৮ পূর্বাহ্ণ | আপডেট: ১৯ নভেম্বর ২০২৪ | ১১:৫৮ পূর্বাহ্ণ

ফলো করুন-
হবিগঞ্জ সীমান্তে অবৈধ লোক পারাপারে অভিনব কৌশল

স্টাফ রিপোর্টার:
হবিগঞ্জের চুনারুঘাট সীমান্ত দিয়ে অভিনব কায়দায় ভারতে অনুপ্রবেশ করছে বাংলাদেশিরা। ৫ আগস্টের পর থেকে ভারতের ভিসা ইস্যু বন্ধ হওয়ার কারণে উপজেলার সীমান্তের পাহাড়ি এলাকা দিয়ে অভিনব কৌশলে লোক পারাপার হচ্ছে বলে অভিযোগ থাকলেও বিজিবি তাদের আটক করতে পারছে না।

বিজিবি জানায়, গত সপ্তাহে উপজেলার বাল্লা সীমান্ত দিয়ে অবৈধভাবে ভারতে অনুপ্রবেশের সময় একই পরিবারের তিন সদস্যকে আটক করে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। আটক ব্যক্তিদের চুনারুঘাট থানায় হস্তান্তরের পর তাদের নামে মামলা হয়েছে।

তারা হলেন– কিশোরগঞ্জ জেলার লালচান দাসের স্ত্রী কনকলতা রানী, তার ছেলে শৈলেন দাস ও নাতি অয়ন দাস। বৃহস্পতিবার দুপুরে তাদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

আটক ব্যক্তিরা জানায়, উপজেলার টেকেরঘাট গ্রামের মানব পাচারকারী চক্রের দালাল জামাল মিয়া তাদের ভারতে প্রবেশে সহযোগিতা করে। পরে বিজিবি অবৈধভাবে সীমান্ত অতিক্রম করার অপরাধে মানব পাচারকারী জামাল মিয়াসহ চারজনের নামে মামলা করে।

স্থানীয়রা জানায়, ৫ আগস্টের পর চুনারুঘাট সীমান্তপথ দিয়ে ভারতে অনুপ্রবেশকারীর সংখ্যা আশঙ্কাজনক হারে বেড়েছে। সক্রিয় হয়ে উঠেছে মানব পাচারকারী চক্র। থামছে না অনুপ্রবেশ।

চুনারুঘাট উপজেলার ভারতের সঙ্গে প্রায় ৪৯ কিলোমিটার সীমান্ত রয়েছে। এসব সীমান্তের প্রায় পুরোটাই পাহাড় ও চা বাগান এলাকা। বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণে বাংলাদেশিদের জন্য শিক্ষা ও জরুরি চিকিৎসা ছাড়া সব ধরনের ভিসা অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত রেখেছে ভারত। এ সিদ্ধান্তের পর থেকেই সীমান্তবর্তী এলাকাজুড়ে বেড়েছে চোরাচালান ও অনুপ্রবেশের প্রবণতা। এ অবস্থায় অনুপ্রবেশকারীরা সহজেই সীমান্ত পারাপার হচ্ছে।

এদিকে ভারতে অনুপ্রবেশে মানুষের আগ্রহ পুঁজি করে সীমান্ত এলাকায় বেশ কয়েকটি মানব পাচারকারী চক্র সক্রিয় হয়ে উঠেছে। চক্রগুলো সীমান্ত পাড়ি দিতে ইচ্ছুক ব্যক্তিদের চুক্তির ভিত্তিতে সীমান্ত পার করে দেয়।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে চক্রের এক সদস্য জানায়, সীমান্ত পার করা হয় বিভিন্ন চুক্তির মাধ্যমে। ভারতে যাওয়ার কারণ এবং আর্থিক সামর্থ্যের ওপর এটি নির্ভর করে। যেমন– কেউ যদি কাজের জন্য যায় তাহলে এক রেট, ঘুরতে গেলে আরেক রেট। আবার পরিবার নিয়ে স্থায়ীভাবে যেতে চাইলে অন্যরকম রেট। সেটি জনপ্রতি তিন হাজার থেকে ৮ হাজার টাকা পর্যন্ত ওঠানামা করে।

সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মই দিয়ে ভারতে অনুপ্রবেশের একটি ভিডিও ভাইরাল হয়। এতে দেখা যায়, নারী-পুরুষ ঝুঁকি নিয়ে কাঁটাতার পার হচ্ছেন। এ ভিডিও প্রকাশের পর তোলপাড় শুরু হয় সীমান্ত এলাকায়।

এ বিষয়ে বিজিবি জানায়, অনুপ্রবেশ বেড়ে যাওয়ায় সীমান্তে জনবল দ্বিগুণ করা হয়েছে। নজরদারিও বাড়ানো হয়েছে। এ ছাড়া মানব পাচারকারীর তালিকা তৈরি করা হচ্ছে।

হবিগঞ্জ ৫৫ বিজিবির অধিনায়ক লে. কর্নেল ইমদাদুল বারী খান জানান, ৫ আগস্ট থেকে উপজেলার সীমান্ত এলাকায় টহল জোরদার করা হয়েছে; যা এখনও অব্যাহত। এখন পর্যন্ত তাদের হাতে আটক হয়েছে মোট ১৪ জন অনুপ্রবেশকারী।

চুনারুঘাট থানার ওসি নজরুল ইসলাম জানান, ৫ আগস্টের পর বৈধ পাসপোর্ট ও ভিসা ছাড়া অবৈধভাবে ভারতে অনুপ্রবেশ ও এ কাজে সহায়তা করার অপরাধে বিজিবি কর্তৃক চুনারুঘাট থানায় ১৫ জনের নামে মামলা হয়েছে। তাদের মধ্যে গ্রেফতার হয়েছে ৫ জন। বাকি ১০ জন পলাতক। তাদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত।

এই সংবাদটি পড়া হয়েছে : 980 বার

শেয়ার করুন