
স্টাফ রিপোর্টার:
জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য সংসদীয় আসন সংখ্যা ৬০০ করাসহ প্রতিটি নির্বাচনি এলাকায় একটি সাধারণ আসন ও নারীদের জন্য একটি সংরক্ষিত আসনের ব্যবস্থা রাখার প্রস্তাব দিয়েছে নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশন। গতকাল রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে ১৫টি খাতে মোটাদাগে ৭৭টি সংস্কারের সুপারিশের এই প্রতিবেদন জমা দিয়েছেন কমিশনের সদস্যরা। এতে নারীর প্রতি বৈষম্য দূর করে ‘সমতা ও সুরক্ষা’ ও মৃত্যুদণ্ড রহিত করার সুপারিশ করা হয়। এ ছাড়া প্রায় ৭০ ভাগ সুপারিশ অন্তর্বর্তী সরকারের মেয়াদে ও বাকি সুপারিশ পরবর্তী নির্বাচিত সরকারের মেয়াদে বাস্তবায়নের পরামর্শ দেন তারা। প্রতিবেদন নিয়ে প্রফেসর মুহাম্মদ ড. ইউনূস বলেন, এটা শুধু নারীদের বিষয়, নয় সার্বিক বিষয়। এই প্রতিবেদন ছাপিয়ে বিলি করা হবে। এটা পাঠ্যবইয়ের মতো বই আকারে ছাপা হবে। দলিল হিসেবে অফিসে রেখে দিলে হবে না, মানুষের কাছে উন্মুক্ত করে দিতে হবে। নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবগুলো জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের মাধ্যমে রাজনৈতিক দলগুলোর কাছেও নিয়ে যাওয়া হবে। এ সময় প্রধান উপদেষ্টা বলেন, যে সুপারিশগুলো দ্রুত বাস্তবায়নযোগ্য সেটা যেন আমাদের মাধ্যমে হয়ে যায়।
আমরা যেন এই কাজের মাধ্যমে বিশ্বের অন্যান্য দেশের জন্য উদাহরণ সৃষ্টি করতে পারি। পৃথিবীর মেয়েরা এটার দিকে তাকিয়ে আছে। তারা এটা নিয়ে পর্যালোচনা করবে। অনুপ্রাণিত হবে। অন্য দেশের নারীরাও এটা নিয়ে সিরিয়াস। প্রধান উপদেষ্টার উপপ্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার এসব তথ্য জানিয়েছেন। কমিশন প্রধান শিরীন হকের নেতৃত্বে প্রধান উপদেষ্টার কাছে প্রতিবেদন হস্তান্তরের সময় উপস্থিত ছিলেন কমিশনের সদস্য মাহীন সুলতান, কামরুন নাহার, কল্পনা আক্তার, হালিদা হানুম আক্তার, সুমাইয়া ইসলাম, নিরুপা দেওয়ান, ফেরদৌসী সুলতানা এবং নিশিতা জামান নিহা। পরে বিকালে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে সংবাদ সম্মেলনে প্রতিবেদনের বিস্তারিত তুলে ধরেন কমিশন প্রধান শিরীন হক। সুপারিশে রাজনৈতিক দলভিত্তিক স্থানীয় পর্যায়ের নির্বাচন রহিত করা, স্থানীয় সরকারের সব প্রতিষ্ঠানে নারীর অংশগ্রহণ সামঞ্জস্যপূর্ণ করা, আদালত ও থানায় নারী, শিশু, বয়স্কসহ বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন ব্যক্তিদের জন্য হেল্পডেস্ক স্থাপন, নারী সংসদ সদস্যদের নারী সমাজের কাছে জবাবদিহিতার ব্যবস্থা করা, মৃত্যুদণ্ডের বিধান বাতিল করা, জনপরিসর ও পারিবারিক আইনে সব বৈষম্য বিলুপ্ত করা, স্বতন্ত্র নারী বিষয়ক কমিশন গঠন, নারী ও শিশু বিষয়
ক মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পূর্ণ মন্ত্রীর কাছে ন্যস্ত করা, কর্মস্থলে জেন্ডার সংবেদনশীল ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে এলাকাভিত্তক শিশু দিবাযত্ন কেন্দ্র ও কর্মজীবী নারীদের জন্য আবাসিক হোস্টেল স্থাপন, অপ্রয়োজনীয় সিজারিয়ান অপারেশন নিয়ন্ত্রণে ২০২৩ সালের উচ্চ আদালতের নির্দেশনা কার্যকর করা, উত্তরাধিকারে নারী-পুরুষের সমান অধিকার নিশ্চিত করা, নারী উদ্যোক্তাদের ব্যবসায়ে প্রবেশ সহজ করা, অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতে নারীর কাজের স্বীকৃতি দেওয়াসহ বিভিন্ন সুপারিশ করেছে কমিশন।
এই সংবাদটি পড়া হয়েছে : 1K বার