Daily Jalalabadi

  সিলেট     বৃহস্পতিবার, ২২শে মে ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ  | ৮ই জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সিলেটের ৩টি স্থলবন্দর দিয়ে রপ্তানিতে স্থবিরতা

admin

প্রকাশ: ২১ মে ২০২৫ | ১২:১০ অপরাহ্ণ | আপডেট: ২১ মে ২০২৫ | ১২:১০ অপরাহ্ণ

ফলো করুন-
সিলেটের ৩টি স্থলবন্দর দিয়ে রপ্তানিতে স্থবিরতা

স্টাফ রিপোর্টার:
সিলেটের বিভিন্ন স্থলবন্দর দিয়ে হঠাৎকরে পণ্য রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা দিল ভারত। আর এই নিষেধাজ্ঞার কারণে সিলেটের তিনটি স্থলবন্দরে পণ্য রপ্তানিতে স্থবিরতা দেখা দিয়েছে। এই স্থলবন্দরগুলো হলো- ভারতের মেঘালয় রাজ্যের এপারে সিলেটের তামাবিল ও আসামের এপারে বিয়ানীবাজারের শেওলা স্থলবন্দর এবং মৌলভীবাজারের কুলাউড়ার চাতলাপুর স্থলবন্দর।

জানা যায়, ভারতের নিষেধাজ্ঞার তালিকায় থাকা পণ্যগুলোই সিলেটের স্থলবন্দরগুলো দিয়ে বেশি রপ্তানি হতো। তাই সিলেট থেকে ভারতে পণ্য রপ্তানি প্রায় বন্ধ রয়েছে। এ অবস্থা বিরাজমান থাকলে ভারতের সেভেন সিস্টারে বাংলাদেশি পণ্যের বিশাল বাজার হারানোর শঙ্কা প্রকাশ করছেন ব্যবসায়ীরা।

আমদানি-রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানের ব্যবসায়ীদের সাথে আলাপ করে জানা গেছে, ভারতের মেঘালয় রাজ্যের এপারে সিলেটের তামাবিল ও আসামের এপারে শেওলা স্থলবন্দর এবং মৌলভীবাজারের কুলাউড়ার চাতলাপুর স্থলবন্দর। সিলেটের এই তিন স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে বিপুল পরিমাণ পণ্য বাংলাদেশে রপ্তানি হয়ে থাকে। যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজ হওয়ায় ফলে বাংলাদেশি পণ্যের উপর নির্ভরশীল হয়ে থাকে ভারত। বিয়ানীবাজারের শেওলা স্থলবন্দর দিয়ে তৈরি পোষাক, ফল, ফলের জুস, বিভিন্ন রকম ভোগ্যপণ্য, প্লাস্টিক সামগ্রী, আসবাবপত্র ও ক্রোকারিজ রপ্তানি হতো। আবার মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার শরীফপুর ইউনিয়নে অবস্থিত চাতলাপুর স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক, প্লাস্টিকসামগ্রী ও জুস রপ্তানিও বন্ধ করেছে ভারত। এর ফলে সিলেটের শেওলা ও তামাবিল স্থলবন্দর এবং মৌলভীবাজারের কুলাউড়ার চাতলাপুর স্থলবন্দর দিয়ে রপ্তানি বাণিজ্যে স্থবিরতা দেখা দিয়েছে।

ব্যবসায়ীরা জানান, সিলেটের স্থলবন্দরগুলো দিয়ে যেসব পণ্য রপ্তানি হতো, সেগুলোর বেশিরভাগই ভারতের নিষেধাজ্ঞায় তালিকায়। ব্যবসায়ীরা সবধরণের পণ্য মিলিয়ে রপ্তানি করতেন। কিন্তু বেশিরভাগ পণ্য নিষেধাজ্ঞার তালিকায় থাকায় অন্যসব পণ্যও রপ্তানি করা থেকে বিরত রয়েছেন ব্যবসায়ীরা।

সূত্র জানায়, ভারতের সেভেন সিস্টারের চাহিদা বিবেচনায় সিলেট বিভাগের হবিগঞ্জের ইন্ডাস্ট্রিরিয়াল এলাকায় বেশ কয়েকটি শিল্প কারখানা গড়ে ওঠেছে। এসব কারখানায় উৎপাদিত বিভিন্ন ধরণের ভোগ্যপণ্য ও প্লাস্টিক পণ্য শেওলা ও তামাবিল এবং চাতলাপুর স্থলবন্দর দিয়ে রপ্তানি হতো। ভারতের নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার না হলে এসব শিল্পপ্রতিষ্ঠান মারাত্মক ক্ষতির সম্মুখিন হতে হবে।

হঠাৎকরে রপ্তানি নিষেধাজ্ঞায় চরম বিপাকে পড়েছেন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা। আমদানি-রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানের মালিকরা বলছেন, তারা নিয়মিত চাতলাপুর দিয়ে প্লাস্টিকসামগ্রী ও জুস রপ্তানি করেন। কয়েক দিন আগেও পণ্য পাঠানো হয়েছে। কিন্তু হঠাৎ করে রপ্তানি বন্ধে নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হওয়ায় ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন বলেও জানান তারা।

শেওলা স্থলবন্দরের সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট শাহ আলম সাংবাদিকদের জানান, ভারতের নিষেধাজ্ঞার কারণে বড় বড় শিল্পপ্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্ত হবে। রপ্তানি বন্ধ থাকলে তাদেরকে উৎপাদনও কমাতে হবে। তিনি আরও বলেন, ‘যে পণ্যগুলোর ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয়নি, সেগুলো খুব কম পরিমাণে ভারতে আমদানি হয়। মূলত বেশি আমদানিকৃত পণ্যের ওপরেই তারা নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। যার কারণে বন্দরের অবস্থা এক ধরণের অচল।’

চাতলাপুর শুল্ক স্টেশনের রাজস্ব কর্মকর্তা তারিক মিয়া বলেন, ‘ভারতের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে একটি চিঠির মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের জানানো হয়েছে। ভারত থেকে চাতলাপুর শুল্ক স্টেশন দিয়ে পোশাক, প্লাস্টিক ও জুসজাতীয় পণ্য রপ্তানি করা যাবে না। তবে বর্তমানে এ রুট দিয়ে মাছ, সিমেন্ট, অন্যান্য কিছু পণ্যের রপ্তানি অব্যাহত রয়েছে।’ তিনি আরোও বলেন, ‘ভারত সরকারের পক্ষ থেকে নিষেধাজ্ঞাসংক্রান্ত চিঠি পাওয়ার পর আমরা রপ্তানি কার্যক্রম বন্ধ করেছি। তবে অন্য পণ্য রপ্তানি আগের মতোই চলছে।’

শাহ আলম জানান, সোমবার (১৯ মে) এক ট্রাক পরিমাণ মেলামাইন পণ্য শেওলা স্থলবন্দর দিয়ে ভারতে রপ্তানি হয়েছে। এছাড়া রপ্তানি করতে না পারায় ভোগ্যপণ্য ও প্লাস্টিক পণ্য বোঝাই ট্রাক শেওলা স্থলবন্দর থেকে ফিরে গেছে।

সিলেট চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সভাপতি ফয়েজ হাসান ফেরদৌস জানান, ‘ভারতের নিষেধাজ্ঞার কারণে সিলেটের রপ্তানি বাণিজ্যে নেতিবাচক প্রভাব।

পড়াটাই স্বাভাবিক। এতে দুদেশের ব্যবসায়ীরাই ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন। দুই দেশের সরকার পর্যায়ে আলোচনা করে এই নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা গেলে উভয় দেশের ব্যবসায়ী ও লোকজন লাভবান হবেন।’

এই সংবাদটি পড়া হয়েছে : 1K বার

শেয়ার করুন