সম্পাদকীয় :
এক মাসের ব্যবধানে বাংলাদেশ ব্যাংকে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমেছে ১২৭ কোটি মার্কিন ডলার। ফলে গত বুধবার রিজার্ভের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৩ হাজার ১০৬ কোটি ডলারে। এর মধ্যে ব্যবহারযোগ্য রিজার্ভ ২ হাজার ৪০৬ কোটি ডলার। বিশেষজ্ঞরা এটিকে আতঙ্কিত হওয়ার মতো পরিস্থিতি না বললেও প্রাথমিকভাবে উদ্বেগজনক বলে মনে করছেন।
কারণ রিজার্ভ ধরে রাখতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ব্যাপকভাবে আমদানি নিয়ন্ত্রণের নীতি অনুসরণ করার পরও রিজার্ভ কমছে। সব মিলে রিজার্ভের বর্তমান অবস্থা যে সন্তোষজনক নয়, এটি বলা যায়। কাজেই এ ব্যাপারে এখনই সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া উচিত বলে মনে করি আমরা। এক্ষেত্রে অপ্রয়োজনীয় আমদানি ব্যয় বন্ধ করার পাশাপাশি রপ্তানি ও প্রবাসী আয় বাড়ানোর দিকে দৃষ্টি দেওয়া জরুরি।
বস্তুত দেশে বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের বড় অংশই আসে রপ্তানি ও প্রবাসী আয় থেকে। অথচ সাম্প্রতিক সময়ে নিট প্রবাসী আয় কমেছে। রপ্তানি আয়ও নিম্নমুখী। এছাড়া ভ্রমণ, চিকিৎসা ও শিক্ষার জন্য বিদেশে যাওয়া-এসব খাতেও বৈদেশিক মুদ্রা খরচের পরিমাণ বেড়েছে বলে ধারণা করা যায়। সরকার অবশ্য ইতোমধ্যেই বিলাসী সামগ্রী আমদানিকে নিরুৎসাহিত করার পদক্ষেপ নিয়েছে। বিভিন্ন ক্ষেত্রে কৃচ্ছ্রসাধনেরও উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
তবে রোজার পণ্য আমদানির জন্য ডলারের জোগান বাড়াতে হয়েছে। এর ফলে আমদানি কিছুটা বেড়েছে। এর প্রভাব পড়েছে রিজার্ভে। বস্তুত সারা বিশ্বের মতো এদেশের অর্থনীতিও একটি সংকটকাল অতিক্রম করছে। দেশের অর্থনীতিতে নানা প্রতিকূলতার মধ্যে রিজার্ভ সংকট অন্যতম। রিজার্ভ সংকটের কারণে দেশে ডলারের বিপরীতে টাকার মান কমছে। একদিকে অর্থনীতির নানামুখী সমস্যা রিজার্ভ সংকট সৃষ্টি করেছে, অন্যদিকে রিজার্ভ সংকট অর্থনীতির অন্যান্য সমস্যাকে তীব্রতর করছে।
এ অবস্থা থেকে উত্তরণে রপ্তানি বৃদ্ধির লক্ষ্যে এ খাতে বিশেষ প্রণোদনা দেওয়া যেতে পারে। সেই সঙ্গে প্রবাসী আয় বৃদ্ধির ওপরও বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া উচিত। এক্ষেত্রে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে নতুন শ্রমবাজার খোঁজার পাশাপাশি চলমান শ্রমবাজারগুলোয় নিজেদের অবস্থান সুদৃঢ় করার উদ্যোগ নিতে হবে।
এই সংবাদটি পড়া হয়েছে : 1K বার