
জৈন্তাপুর সংবাদদাতা:
সিলেটের জৈন্তাপুর সীমান্ত দিয়ে ভারত থেকে রোহিঙ্গা নারী-পুরুষ অনুপ্রবেশের গুঞ্জন উঠেছে। স্থানীয়দের দাবি দালালদের মাধ্যমে জৈন্তাপুর সীমান্তের ১৩০২ মেইন পিলারের পার্শ্ববর্তী বাঘছড়া এলাকা দিয়ে ৬ রোহিঙ্গা নাগরিক ভারত থেকে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করতে তারা দেখেছেন। তারা অনুপ্রবেশকারীদের ভিডিও ধারণ করেছেন। তবে বিজিবি ও পুলিশ অনুপ্রবেশের ঘটনাটি অস্বীকার করেছে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, সোমবার দুপুরের দিকে জৈন্তাপুর উপজেলার চারিকাটা ইউনিয়নের বাঘছড়া সীমান্ত এলাকা দিয়ে ৬ রোহিঙ্গা নাগরিক ভারত থেকে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করে। এসময় স্থানীয় দালাল কামরাঙ্গীখেল দক্ষিণ গ্রামের মহিব মিয়ার ছেলে সুলেমান, নিশ্চিন্তপুরের নূর উদ্দিনের ছেলে সেলিম ও একই গ্রামের বাবুল মিয়ার ছেলে আনোয়ার ওরফে আনর তাদেরকে বাঘছড়া এলাকার একটি জঙ্গলে নিয়ে আসে।
ঘটনাটি দেখতে পেয়ে জৈন্তাপুরের বাউরভাগ দক্ষিণ গ্রামের মো. আকবর আলীর ছেলে রোমান আহমদ ও আবদুল মতিনের ছেলে আবুলসহ স্থানীয় কয়েকজন ভিডিও ও ছবি ধারণ করেন। ভিডিওতে আনোয়ার ওরফে আনরকে রোহিঙ্গা নাগরিকদের সাথে কথোপকোথন করতে দেখা যায়। ঘটনাটি জানাজানি হলে দালালরা ৩ রোহিঙ্গা নাগরিককে ওই স্থান থেকে দ্রুত সরিয়ে ফেলে।
স্থানীয় লোকজনের দাবি, খবর পেয়ে বিজিবি ঘটনাস্থলে গিয়ে এক শিশুসহ তিন রোহিঙ্গা নাগরিককে পেলেও তাদেরকে আটক করেনি। জৈন্তাপুরের বিভিন্ন সীমান্ত এলাকা দিয়ে দালালদের মাধ্যমে রোহিঙ্গারা আসা-যাওয়া করে বলেও অভিযোগ করেন স্থানীয়রা।
এ ব্যাপারে লালাখাল বিওপির কমান্ডারের সাথে ফোনে যোগাযোগ করা হলে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের বিষয়টি জানেন না বলে মন্তব্য করেন। প্রতিবেদকের কাছে ভিডিও ও ছবি সংরক্ষিত আছে জানালে তিনি বলেন, ‘আমি ক্যাম্পের বাহিরে আছি, ক্যাম্পে ফিরে ঘটনা সত্যতা জেনে আপনাকে অবগত করবো।’ কিন্তু মঙ্গলবার বিকেল পর্যন্ত কোনো উত্তর জানাননি তিনি। কয়েকবার ফোন দিলেও ধরেননি।
এ ব্যাপারে বিজিবি ১৯ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. জুবায়ের আনোয়ার পিএসসি সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তিনিও ফোন রিসিভ করেননি।
এদিকে স্থানীয় বাসিন্দা জৈন্তাপুর থানার ৩নং চারিকাটা ইউনিয়নের বাউরভাগ দক্ষিণ ৩নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা ইব্রাহিম আলীর ছেলে মো. আকবর আলী ৩ জনের নামোল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত আরও ১০-১২জনকে অভিযুক্ত করে জৈন্তাপুর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন। যেখানে তিনি উল্লেখ করেন, সীমান্ত দিয়ে ভারত থেকে রোহিঙ্গা নারী-পুরুষ অনুপ্রবেশের ঘটনায় তার ছেলে রোমান আহমদ বাধা প্রদান ও ভিডিও ধারণ করতে গেলে মানবপাচারকারী চক্রের সাথে মারামারির ঘটনা ঘটে। এসময় মানবপাচারকারী চক্রের সদস্যরা রোমান আহমদের মোবাইল ফোনসহ ও নগদ ২ লাখ টাকা ছিনিয়ে নিয়ে যায়। এই ঘটনায় আকবর আলী জৈন্তাপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
জৈন্তাপুর থানার ওসি আবুল বাশার মোহাম্মদ বদরুজ্জামান জানান, ‘রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের ব্যাপারে তিনি কিছুই জানেন না। বিজিবি থেকে তাদেরকে এ ব্যাপারে কিছু জানানো হয়নি।’
এই সংবাদটি পড়া হয়েছে : 1K বার