
স্টাফ রিপোর্টার:
চাঁদপুরের পৌরশহরে মাত্র ৫০০ টাকার বিনিময়ে নবজাতক শিশুকে কবরস্থানে দাফনের জন্য নিয়ে যান ফারুক হোসেন গাজী (৪৫)। তাকে ক্লিনিকের একজন নার্স বলেছিলেন শিশুটি মৃত। তাই কোথাও ফেলে দিতে। কিন্তু তিনি শিশুটিকে ফেলে না দিয়ে কবরস্থানে নিয়ে যান। সেখানে ৩০০ টাকা নিজের কাছে রেখে বাকি ২০০ টাকা কবরস্থানের লোকজনকে দেন। যেন মাটি চাপা দিয়ে রাখা হয়।
মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) রাতে আটক হওয়ার পর গোয়েন্দা পুলিশের কাছে এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য দেন ফারুক হোসেন গাজী। চাঁদপুর শহরের তালতলা এলাকায় ইউনাইটেড হাসপাতাল এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার নামে বেসরকারি একটি ক্লিনিকের কর্মচারী তিনি।
এ বিষয়ে জেলা গোয়েন্দা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মজিবুর রহমান জানান, কবরস্থানের প্রবেশ পথ ও আশপাশের সিসিটিভির ফুটেজ সংগ্রহ করে ওই ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়।
এরইমধ্যে বেসরকারি এই ক্লিনিকের কোনো নার্স তাকে এমন কাজ করতে বলেছিল। সেই সবকিছু যাচাই-বাছাই করছে গোয়েন্দা পুলিশ এবং তাকে যে নার্স দায়িত্ব দিয়েছে তার আগে কোন প্রসূতির সন্তান। তাও খতিয়ে দেখতে শুরু করেছে পুলিশের বিশেষ এই ইউনিট।
এর আগে, গত রোববার দুপুরে চাঁদপুর পৌরসভার কবরস্থানে দাফনের জন্য নিয়ে আসার ঘটনা ঘটে।
তবে সেখানে থাকা ফারুক মিয়া নামে একজন শিশুটিকে দাফনের আগে আজান দেন। এ সময় কার্টুনে থাকা শিশুটি কান্না শুরু করে। পরে তার ডাকে চিৎকারে আশপাশের লোকজন ছুটে যান। পরে স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মী মুসাদ্দেক আল আকিবের সহায়তায় অর্ধমৃত শিশুটিকে পাশের একটি বেসরকারি ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়।
সেখানে ৮ ঘণ্টা লড়ে হতভাগ্য শিশুটি মারা যায়। ওই রাতেই আনুষ্ঠানিকভাবে সেই কবরস্থানে দাফন করা হয় তাকে।
এ বিষয়ে চাঁদপুরের পুলিশ সুপার মুহম্মদ আব্দুর রকিব জানান, কে বা কারা শিশুটিকে এভাবে কবরস্থানে রেখে গেল। তা খুঁজে দেখতে গোয়েন্দা পুলিশকে দায়িত্ব দেন তিনি। তবে ঘটনার দুই দিনের মধ্যে জড়িত ব্যক্তি এবং শিশু যে ক্লিনিকে শিশুটি জন্ম নেয় তা খুঁজে বের করতে সক্ষম হয় গোয়েন্দা পুলিশ। তার সঙ্গে জড়িত নার্স এবং শিশুর স্বজনদের গ্রেপ্তারের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) মো. লুৎফর রহমান জানান, এই ঘটনায় সদর মডেল থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।
এই সংবাদটি পড়া হয়েছে : 1K বার