
স্টাফ রিপোর্টার:
হাইকমান্ডের সবুজ সংকেতের অপেক্ষায় বিয়ানীবাজার-গোলাপগঞ্জ আসনে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী প্রার্থীরা। আগামী নির্বাচনে প্রতিদ্বন্ধিতা করতে এই আসনে দলটির ১০ জন প্রার্থী পৃথক জনসংযোগ চালিয়ে যাচ্ছেন। তবে এখনকার সময়ে মাঠের রাজনীতিতে আলোচিত আছেন মাত্র ৩-৪জন মনোনয়ন প্রত্যাশী। শর্টলিস্টের খবর চাউর হয়ে যাওয়ায় প্রার্থীদের অনেকেই কিছুটা চুপসে গেছেন।
সূত্র জানায়, কেন্দ্রের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী চলতি অক্টোবরের মাঝামাঝিতে কিংবা এ মাসের মধ্যে প্রার্থীদের বিজয়ের সম্ভাব্যতা যাচাই বাছাই করে প্রতিটি আসনে একজনকে সবুজ সঙ্কেত দেয়া হবে। যাদের তফসিলের পর সাংগঠনিক প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে দলের মনোনয়ন বোর্ড চূড়ান্ত করবে। বিএনপি সূত্রে জানা গেছে, নির্বাচনের মাঠে ডোর টু ডোর প্রচার-প্রচারণায় গতি আনতেই সুনির্দিষ্ট প্রার্থীকে সবুজ সংকেত দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এক্ষেত্রে দলের মাঠ পর্যায়ের নেতা ও সম্ভাব্য প্রার্থীদের মতামতকেও গুরুত্ব দেয়া হয়েছে।
দলীয় নেতাকর্মীরা জানান, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ড. এনামুল হক চৌধুরী, একাদশ জাতীয় নির্বাচনে ধানের শীষের প্রার্থী বিএনপি নেতা ফয়সল আহমদ চৌধুরী, কেন্দ্রীয় সদস্য আবুল কাহের চৌধুরী শামীম, চিত্রনায়ক হেলাল খান, জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট এমরান আহমদ চৌধুরী, বিএনপি চেয়ারপারসনের আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপদেষ্টা অহিদ আহমদ, যুক্তরাজ্য বিএনপির সাবেক সভাপতি মরহুম কমর উদ্দিনের মেয়ে সাবিনা খান, সাবেক সংসদ সদস্য ড. সৈয়দ মকবুল হোসেন লেচু মিয়ার মেয়ে সৈয়দা আদিবা হোসেন, যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি নেতা আনোয়ার হোসেন সিলেট-৬ বিয়ানীবাজার-গোলাপগঞ্জ আসনে মনোনয়ন পেতে আগ্রহী।
এদিকে গত ৩-৪দিন থেকে প্রার্থীদের অনুসারী নেতাকর্মীদের কেউ-কেউ নিজ বলয়ের নেতা হাইকমান্ডের সবুজ সংকেত পেয়েছেন দাবী করছেন। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত প্রার্থিতা চূড়ান্ত না হলেও সম্ভাব্য মনোনয়ন প্রত্যাশীরা নিজ নিজ এলাকায় গণসংযোগে ব্যস্ত সময় পার করছেন। দীর্ঘদিন ক্ষমতার বাইরে থাকা দলটির নেতাকর্মীরা এখন নতুন উদ্দীপনায় মাঠে নেমেছেন। এলাকাভিত্তিক সভা, উন্নয়ন আলোচনা সভা ও তৃণমূল নেতাকর্মীদের সাথে মতবিনিময় করছেন। কেউ কেউ সামাজিক কার্যক্রমের মাধ্যমে জনগণের সাথে সরাসরি যোগাযোগ স্থাপন করছেন, যেমন দরিদ্রদের সহায়তা, শিক্ষা উপকরণ বিতরণ বা স্থানীয় সমস্যার সমাধানে উদ্যোগ গ্রহণ করছেন। প্রার্থীরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও সক্রিয় ভূমিকা রাখছেন। নিজেদের কার্যক্রম তুলে ধরে দলীয় নেতৃত্বের নজর কাড়ার চেষ্টা করছেন। অনেকেই বিএনপির গণতান্ত্রিক অধিকার পুনরুদ্ধারে এবং দীর্ঘ দিনের লড়াই সংগ্রাম ও জেল-জুলুমের কথা জনগণের কাছে তুলে ধরছেন।
সিলেট-৬ আসনে মনোনয়ন প্রত্যাশী ফয়সল আহমদ চৌধুরী বলেন, গোপালগঞ্জ-বিয়ানীবাজার আসনে ২০১৮ সালে দল আমাকে মনোনয়ন দিয়েছিল। মাত্র ২ ঘণ্টায় আমি লক্ষাধিক ভোট পেয়েছিলাম। কিন্তু স্বৈরাচার সরকার সারাদেশের মত আমার আসনও ছিনিয়ে নিয়ে গেছে। আগামী নির্বাচনেও দল থেকে আমি মনোনয়ন প্রত্যাশী। আমি বিশ্বাস করি জনগণের ভোট ও ভালোবাসাই রাজনীতির শক্তি।
অপর মনোনয়ন প্রত্যাশী ড. এনামুল হক চৌধুরী বলেন, তৃণমূল থেকে রাজনীতি করে উঠে এসেছি। জেল-জুলুমের শিকার হয়েছি। বিয়ানীবাজার-গোলাপগঞ্জের জনগণের সাথে রয়েছে আমার নাড়ির সম্পর্ক। আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে ধানের শীষের পক্ষে জনসম্পৃক্ত নানা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি। দল আমাকে মনোনয়ন দিলে এই এলাকার উন্নয়নে নিজেকে আরো বেশি যুক্ত করতে পারব।
মনোনয়ন প্রত্যাশী আবুল কাহের চৌধুরী শামীম বলেন, গত ১৭ বছর অত্যন্ত প্রতিকূল পরিস্থিতিতে আমাদের রাজনীতি করতে হয়েছে। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান আগামী দিনে একটি গণতান্ত্রিক ও আধুনিক বাংলাদেশ বিনির্মাণের স্বপ্ন দেখছেন। আমি সেই স্বপ্নের অংশীদার হতে চাই। দল যদি আমাকে মনোনয়ন দেয়, বিপুল ভোটে বিজয়ী হতে পারব বলে আত্মবিশ্বাস রয়েছে।
এডভোকেট এমরান আহমদ চৌধুরী বলেন, এলাকার মানুষের সুখে-দুঃখে সবসময় পাশে রয়েছি। সার্বক্ষণিক নির্বাচনী এলাকায় রয়েছি। উঠোন বৈঠক, মতবিনিময় সভাসহ নানা জনসম্পৃক্ত কাজ চালিয়ে যাচ্ছি। আশা করছি, দল আগামী নির্বাচনে আমাকে মনোনয়ন দিয়ে এলাকার উন্নয়নে আরো বেশি সম্পৃক্ত হওয়ার সুযোগ করে দেবে।
এই সংবাদটি পড়া হয়েছে : 1K বার