
বানিয়াচং প্রতিনিধি :
হবিগঞ্জের বানিয়াচং উপজেলার দোয়াখানী এলাকায় জামেয়া দারুস সালাম মাদ্রাসার হিফজ বিভাগের মেধাবী ছাত্র মইনুল হাসান (১২) হত্যার ঘটনায় দায়ের করা মামলা গুরুত্ব বিবেচনায় পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)-এ স্থানান্তর করা হয়েছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বানিয়াচং থানার সেকেন্ড অফিসার এসআই আমিনুল ইসলাম।
গত ২৫ অক্টোবর নিহত মইনুলের বাবা আতিকুর রহমান অজ্ঞাতনামা আসামি উল্লেখ করে বানিয়াচং থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন (মামলা নং–১৮, তারিখ: ২৫/১০/২৫)। মামলাটি দায়েরের পরপরই তদন্তে মাঠে নামে বানিয়াচং থানা পুলিশ।
ইতোমধ্যে ঘটনাটির সঙ্গে জড়িত থাকার সন্দেহে নুর আলীর ছেলে মোফাজ্জল (২৩) নামে একজনকে আটক করা হয়েছে। তদন্তের স্বার্থে তাকে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।
এদিকে, তদন্তের অগ্রগতিতে পুলিশ নিশ্চিত করেছে, নিহত মইনুলের মরদেহ উদ্ধারের সময় তার পরনে থাকা মেয়েলি পোশাকটি পাশের বাড়ির তাহমিনা নামের এক মেয়ের পোশাক। বানিয়াচং থানা পুলিশ তাহমিনার বাড়িতে গিয়ে বিষয়টি সরেজমিনে যাচাই করে নিশ্চিত হয়েছে।
নিহতের সহপাঠীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে মানববন্ধনসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে আসছে। মামলার গুরুত্ব বিবেচনায় পরবর্তীতে তদন্তের দায়িত্ব পিবিআইতে স্থানান্তর করা হয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত ২১ অক্টোবর (মঙ্গলবার) সকালের দিকে নিখোঁজ হয় মইনুল। প্রতিদিনের মতো দুপুরের খাবার খেতে না আসায় পরিবার খোঁজাখুঁজি শুরু করে। কোথাও না পেয়ে পরিবারের পক্ষ থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিখোঁজের সংবাদ প্রচার করা হয়।
পরদিন ২২ অক্টোবর (বুধবার) বেলা সাড়ে ১১ টার দিকে দোয়াখানী মহল্লার একটি খালে নারী পোশাক পরিহিত অবস্থায় মইনুলের মরদেহ দেখতে পান পথচারীরা। খবর পেয়ে বানিয়াচং থানা পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে।
নিহতের বাবা আতিকুর রহমান জানান, “আমার ছেলেকে কোরআনের হাফেজ বানানোর জন্য মাদ্রাসায় দিয়েছিলাম। সে ইতিমধ্যে ৭ পারা কোরআন শরিফ মুখস্থ করেছিল। আমার ছেলে সবসময় পাঞ্জাবি পরত। কিন্তু মরদেহে মেয়েদের পোশাক দেখে আমি নিশ্চিত এটা পরিকল্পিত হত্যা। আমি আমার ছেলের হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।”
এ ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। মামলাটি বর্তমানে পিবিআইতে স্থানান্তরিত হয়ে তদন্তাধীন রয়েছে।
এই সংবাদটি পড়া হয়েছে : 1K বার