Daily Jalalabadi

  সিলেট     রবিবার, ১৭ই নভেম্বর ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ  | ২রা অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

উন্নয়ন প্রকল্পে পরামর্শকের আধিক্য নয়: প্রধানমন্ত্রী

admin

প্রকাশ: ১২ এপ্রিল ২০২৩ | ১২:২৯ অপরাহ্ণ | আপডেট: ১২ এপ্রিল ২০২৩ | ১২:২৯ অপরাহ্ণ

ফলো করুন-
উন্নয়ন প্রকল্পে পরামর্শকের আধিক্য নয়: প্রধানমন্ত্রী

স্টাফ রিপোর্টার:
উন্নয়ন প্রকল্পে পরামর্শকের আধিক্য বন্ধের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মঙ্গলবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠকে তিনি এই নির্দেশ দেন। এ সময় তিনি বলেন, প্রকল্পে এত পরামর্শক লাগবে কেন?

আমাদের ইঞ্জিনিয়াররা দক্ষতা অর্জন করেছেন। তাহলে তারাই কেন এসব কাজ করতে পারেন না? এরপর অনুমোদন দেওয়া ‘বাংলাদেশ এনভায়রনমেন্টাল সাসটেইনেবিলিটি অ্যান্ড ট্রান্সফরমেশন (বেস্ট)’ প্রকল্পে যেখানে চারজন পরামর্শকের প্রস্তাব ছিল, সেখানে একজন রাখার নির্দেশও দেন তিনি।

রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী। বৈঠক শেষে এ বিষয়ে ব্রিফ করেন পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান এবং প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম।

এ সময় পরিকল্পনা সচিব সত্যজিত কর্মকার, আইএমইডির সচিব আবুল কাশেম মো. মহিউদ্দিন, ভৌত অবকাঠামো বিভাগের সদস্য এমদাদউল্লাহ মিয়ান এবং পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব ড. শাহনাজ আরেফিনসহ পরিকল্পনা কমিশনের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

ব্রিফিংয়ে জানানো হয়, শিশু পরিবারের শিশুদের কারিগরি শিক্ষার ক্ষেত্রে ফাস্ট ট্র্যাক হিসাবে সুযোগ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। সেই সঙ্গে বর্তমান রেমিট্যান্স বেড়ে যাওয়ায় উল্লসিত না হয়ে সতর্ক হওয়ার কথাও বলেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ঈদের কারণে রেমিট্যান্স বাড়লেও ঈদের পর তা কমে যেতে পারে। তবে আবার কুরবানি ঈদে বাড়বে। তাই যেহেতু ওঠানামার মধ্যেই থাকবে, সেহেতু এখন এত উল্লাসের কারণ নেই।’

পরিকল্পনামন্ত্রী জানান, সমুদ্রের নীল অর্থনীতি কাজে লাগানোর নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। অপর একটি প্রকল্প বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এখন থেকে আর স্লুইস গেট বানানো যাবে না। তবে যেখানে বন্যার কারণে রাস্তাঘাট ভেঙে গেছে, সেখানে আবারও মাটি দিয়ে রাস্তা না করে কালভার্ট করতে হবে। যাতে পানির চাপ বাধাগ্রস্ত না হয়।’

পাশাপাশি হাওড় এলাকায় রাস্তা নির্মাণ না করে উড়াল সড়ক করার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। এছাড়া আগামী দিনে পরিবারে নারীদের কাজের অবদান নির্ণয়েরও নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘নারীদের কাজের লিমিট নেই।

বিশ্রামের সময় নেই। কিন্তু বেতন নেই এবং পেনশনও নেই। তাই তাদের কাজের অবদান জিডিপিতে যোগ করলে জিডিপির আকার অনেক বাড়বে।’

পরিকল্পনামন্ত্রী জানান, করোনা-পরবর্তী দরিদ্র পরিস্থিতি খারাপ নয়। এ অবস্থা দেখে প্রধানমন্ত্রী খুশি হয়েছেন। আগামীকাল (আজ) আনুষ্ঠানিকভাবে এটি প্রকাশ করা হবে। সারের দাম বৃদ্ধি প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এমএ মান্নান বলেন, ‘এটার উত্তর কৃষিমন্ত্রী দিতে পারবেন। তবে আমি এটুকু বলতে পারি, সারের দাম বাড়লে কৃষিপণ্যে উৎপাদন খরচ বেড়ে যেতে পারে। সেক্ষেত্রে মূল্যস্ফীতিতে প্রভাব পড়বে। তবে যদি অন্যান্য পণ্যের দাম কমে যায়, তাহলে এর তেমন প্রভাব পড়বে না।’

আর ড. শামসুল আলম বলেন, ‘ব্লু ইকোনমি কার্যকরভাবে কাজে লাগাতে হলে আলাদা একটি মন্ত্রণালয় বা বিভাগ তৈরি করা দরকার। কেননা এটি এত বিশাল কর্মষজ্ঞ যে সমন্বয়হীনভাবে সমাপ্ত করা যাবে না।’ তিনি বলেন, ‘আমাদের দেশের জিডিপি হিসাব করা হয় আন্তর্জাতিক সূত্র ও মানদণ্ড মেনে। অর্থাৎ এসএনই সিস্টেম মেনে চলা হয়। সেখানে মহিলাদের গৃহস্থালির কাজের অবদান হিসাব করার সুযোগ নেই। তবে আলাদাভাবে আমরা হিসাব করে বের করতে পারি। সেক্ষেত্রে কোনো বাধা নেই।’

পরিবেশ উন্নয়নসহ ১১ প্রকল্প অনুমোদন : বৈঠকে পরিবেশ উন্নয়নসহ ১১টি উন্নয়ন প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এগুলো বাস্তবায়নে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ১৩ হাজার ৬৫৫ কোটি ৯৮ লাখ টাকা। এর মধ্যে সরকারি তহবিল থেকে ৩ হাজার ১২৯ কোটি ৮৭ লাখ টাকা এবং বৈদেশিক সহায়তা থেকে ১০ হাজার ৫২৬ কোটি ১১ লাখ টাকা ব্যয় করা হবে।

প্রকল্পগুলো হলো-এক্সপোর্ট কম্পিটিটিভনেস ফর জবস প্রকল্প, সার সংরক্ষণ ও বিতরণ সুবিধার্থে দেশের বিভিন্ন জায়গায় ৩৪টি বাফার গুদাম নির্মাণ প্রকল্প, বাংলাদেশ এনভায়রনমেন্টাল সাসটেইনেবিলিটি অ্যান্ড ট্রান্সফরমেশন (বেস্ট) প্রকল্প, বন্যা ব্যবস্থাপনা পুনর্গঠন জরুরি সহায়তা প্রকল্প, এডিবির জরুরি সহায়তায় বন্যা ২০২২-এ ক্ষতিগ্রস্ত গ্রামীণ অবকাঠামো পুনর্বাসন প্রকল্প, সিলেট-চারখাই-শেওলা মহাসড়ক উন্নয়ন প্রকল্প, ২০২২ সালের বন্যায় মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত বাংলাদেশ রেলওয়ের সিলেট-ছাতক বাজার সেকশন (মিটারগেজ) পুনর্বাসন প্রকল্প,

বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত পানি সরবরাহ ও স্যানিটেশন ব্যবস্থার পুনর্নির্মাণে জরুরি সহায়তা প্রকল্প, পাকিস্তানের ইসলামাবাদে বাংলাদেশ চ্যান্সারি কমপ্লেক্স নির্মাণ প্রকল্প, বাংলাদেশ ভূমি জরিপ শিক্ষার উন্নয়ন প্রকল্প এবং একসেলেরেটিং ট্রান্সপোর্ট অ্যান্ড ট্রেড কানেক্টিভিটি ইন ইস্টার্ন সাউথ এশিয়া (একসেস) বাংলাদেশ ফেজ-১ প্রকল্প।

 

এই সংবাদটি পড়া হয়েছে : 995 বার

শেয়ার করুন