স্টাফ রিপোর্টার:
সিলেট বিএনপি ও অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের মাঝে হঠাৎ গ্রেফতার আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। কারণ- গত কয়েক দিনে সিলেটে বিএনপি ও তার সহযোগী অঙ্গসংগঠনের বেশ কয়েকজন নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করছে পুলিশ।
দলটি দাবি করছে- গত চার দিনে মহানগরের অন্তত ১৭ নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তল্লাশির নামে নেতা-কর্মীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে হয়রানিও করছে পুলিশ।
তবে পুলিশ বলছে- তারা কাউকে অযথা হয়রানি করছে না। যাদের গ্রেফতার করা হয়েছে তাদের বিরুদ্ধে আগে থেকেই মামলা রয়েছে।
সিলেট বিএনপির নেতারা অভিযোগ করে বলেন- গত ১ মে সিলেটে একটি সভায় বর্তমান সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী নির্বাচন করার আভাস দেওয়ার পর থেকেই পুলিশের ধরপাকড় শুরু হয়েছে। বিশেষ করে ছাত্রদলের মধ্যে আরিফুল হকের কর্মী-সমর্থকদের গ্রেফতার করা হচ্ছে।
সিলেট বিএনপি সূত্র জানায়, গত মঙ্গলবার বিকেলে জেলা ও মহানগর ছাত্রদলের একটি মিছিল থেকে ছাত্রদল ও যুবদলের আট নেতা-কর্মীকে আটক করে পুলিশ। তাঁদেরসহ অজ্ঞাতনামা আরও ২০০ জনকে আসামি করে সরকারি কাজে বাধা ও পুলিশ সদস্যদের হত্যার উদ্দেশ্যে মারপিট করার অভিযোগ এনে পুলিশ ওই রাতেই কোতোয়ালি থানায় মামলা করে। পরে এ মামলায় আটক ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
সূত্র আরও বলে, গত চার দিনে ছাত্রদল ও যুবদলের আটজন ছাড়াও বিএনপির আরও অন্তত ৯ নেতা-কর্মীকে আটক করেছে পুলিশ। পরে বিভিন্ন পুরোনো মামলায় তাঁদের গ্রেপ্তার দেখানো হয়। এ ছাড়া গত মঙ্গলবার থেকে প্রতি রাতেই বিএনপি ও এর সহযোগী অঙ্গসংগঠনের বিভিন্ন নেতা-কর্মীর বাড়ি ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে পুলিশ তল্লাশি চালিয়েছে। তাই ভয়ে অনেকে বাড়ি ছেড়ে অন্যত্র থাকছেন।
এদিকে নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তারের বিষয়ে শুক্রবার (৫ মে) বিকেলে গণমাধ্যমে পাঠানো বিবৃতিতে সিলেট মহানগর বিএনপি দাবি করে- গত বুধবার দিবাগত রাতে মহানগর বিএনপির সাবেক প্রচার সম্পাদক শামীম মজুমদার, ২৭ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম, ৩ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এম এ লাহিন, ২৫ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সদস্য বদরুল ইসলাম, সদর উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক অলিবুর রহমান আলী, ছাত্রদল নেতা ইমন ও জেলা ছাত্রদলের সাবেক সহসাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা হাবিবকে পুলিশ ‘অহেতুক’ গ্রেপ্তার করেছে।
বিবৃতিতে মহানগর বিএনপি আরও অভিযোগ করে বলে, গত বুধবার দিবাগত রাতে ২৭ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি নাজিম উদ্দিন, ২০ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক লোকমানুজ্জামান, ২৪ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ফরহাদ আহমদসহ দলীয় অনেক নেতা-কর্মীর বাসাবাড়িতে পুলিশি তল্লাশির নামে হয়রানি করা হচ্ছে। এ ছাড়া নেতা-কর্মীদের আটকের পর বিষয়টি পুলিশ অস্বীকার করে কয়েক ঘণ্টা পর তাঁদের গ্রেপ্তার দেখাচ্ছে। এতে আটক নেতা-কর্মীদের পরিবারে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ছে।
সিলেট মহানগর বিএনপির সভাপতি নাসিম হোসাইন বলেন, সিলেটে হঠাৎ করে পুলিশ ধরপাকড় শুরু করেছে। বিএনপির নেতা-কর্মীদের ধরে নিয়ে পূর্বের মামলায় অথবা নতুন করে জেলে ঢুকিয়ে দিচ্ছে পুলিশ। একটি গণতান্ত্রিক দেশে এটি কোনোভাবেই কাম্য নয়।
এ বিষয়ে সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশ (এসএমপি) কমিশনার মো. ইলিয়াস শরীফ (বিপিএম-বার, পিপিএম) সিলেটভিউ-কে শনিবার (৬ মে) বিকেলে বলেন- বিএনপির অভিযোগ সঠিক নয়, এটা পুলিশের রুটিন ওয়ার্ক। যাদের বিরুদ্ধে পরোয়ানা রয়েছে মূলতঃ তাদেরই গ্রেফতার করা হয়েছে বা হচ্ছে।
এই সংবাদটি পড়া হয়েছে : 997 বার