স্টাফ রিপোর্টার:
২১ জুন অনুষ্ঠিতব্য সিলেট সিটি ভোটকে কেন্দ্র করে নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের হিড়িক পড়েছে। সম্ভাব্য মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীরা আচরণবিধি এবং ইলেকশন কমিশনের নির্দেশনা উপেক্ষা করে নির্ধারিত সময়ের আগেই শুরু করেছেন প্রচার-প্রচারণা । সভা, কুশল বিনিময় ও জুমার নামাজে অংশ নিয়ে তাঁরা নির্বাচনী প্রচারণা চালাচ্ছেন বিনা বাধায়। কোনো কোনো প্রার্থী প্রকাশ্যে মতবিনিময় সভা করছেন। এসব অনুষ্ঠানে তাঁরা ভোটারের কাছে চাইছেন ভোট, দিচ্ছেন অনেক নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি।
এছাড়াও নির্বাচনী প্রচারণামূলক বিভিন্ন সভা-সমাবেশ ও মিছিলে সংসদ সদস্যরাও অংশ নিচ্ছেন। অথচ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ নির্বিকার। তবে সিলেটভিউ-কে দেওয়া এক বক্তব্যে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা বলেছেন- সময়মতো কঠোর হবেন তারা।
ইসি’র নির্দেশনা অনুযায়ী- আগামী ১ জুন প্রতীক বরাদ্দের পরই সিলেট সিটি নির্বাচনের প্রার্থীরা প্রচারণা শুরু করতে পারবেন। কিন্তু সম্ভাব্য প্রার্থীরা এ নির্দেশনার তোয়াক্কা না করে রমজানের আগে থেকেই মিছিল-মিটিংয়ের মাধ্যমে শুরু করেছেন প্রচার-প্রচারণা। প্রচারণায় সবচেয়ে সরব আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী মো. আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী।
এছাড়া সম্ভাব্য মেয়র প্রার্থীদের মধ্যে জাতীয় পার্টির নজরুল ইসলাম, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মাহমুদুল হাসান ও জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের আবদুল্লাহ মহানগরের ভোটারদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করছেন।
অপরদিকে, কাউন্সিলর পদে সম্ভাব্য ৪ শতাধিক প্রার্থী আগাম প্রচারণায় নেমেছেন। প্রার্থীরা প্রকাশ্যে প্রচার-প্রচারণা চালাচ্ছেন। কেউ কেউ কর্মিসভা, মতবিনিময় সভার নামে চাইছেন ভোট। প্রতিদিন কোনো না কোনো পাড়া-মহল্লা কিংবা ওয়ার্ডে সম্ভাব্য প্রার্থীদের কর্মসূচি পালিত হচ্ছে। মহানগরের প্রতিটি এলাকায় রঙিন পোস্টার, ফেস্টুন, বিলবোর্ড ও ব্যানার সাঁটানো হয়েছে এসব প্রার্থীর। এরই মধ্যে যাঁরা দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন, তাঁদের অনেকের সমর্থনে প্রতীকসহ পোস্টার সাঁটানো হয়েছে।
ভোটাররা বলছেন, সম্ভাব্য মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীরা বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে তাঁদের পক্ষে ভোট চাইছেন। দিচ্ছেন নানা প্রতিশ্রুতি। মসজিদে জুম্মাসহ বিভিন্ন নামাজ আদায় শেষে মুসল্লিদের কাছেও দোয়ার পাশাপাশি চাইছেন ভোট।
অপরদিকে, সিলেট-৩ (দক্ষিণ সুরমা, ফেঞ্চুগঞ্জ ও বালাগঞ্জ) আসনের সংসদ সদস্য হাবিবুর রহমান হাবিব সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থীকে ভোট দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন বিভিন্ন স্থানে। গত বৃহস্পতিবার আওয়ামী লীগের কর্মিসভা অংশ নিয়েও তিনি বক্তব্যকালে আনোয়ারুজ্জামানের পক্ষে প্রকাশ্যে ভোট চান। এছাড়া আনোয়ারুজ্জামানের নির্বাচনী প্রচারণা কার্যক্রমের জন্য যে চারটি কমিটি করা হয়েছে তার মধ্যে পূর্বাঞ্চল কমিটির সদস্য করা হয়েছে এমপি হাবিবকে। যা নির্বাচনী আচরণবিধির সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।
এর আগে ২ মে বাগেরহাট-২ (সদর) আসনের সংসদ সদস্য শেখ সারহান নাসের (তন্ময়) ‘ব্যক্তিগত সফরে’ সিলেট এসে মহানগরের আম্বরখানা-ইলেকট্রিক সাপ্লাই সড়ক এবং মদন মোহন কলেজে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মো. আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীর সঙ্গে প্রচারণামূলক সভায় অংশ নেন। তবে এসব স্থানে তিনি কোনো বক্তব্য দেননি।
সিলেটে নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের এমন হিড়িক পড়লেও এখন পর্যন্ত কারো বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি নির্বাচন কমিশন।
এ বিষয়ে বক্তব্য নিতে সিলেট সিটি নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা ও সিলেটের আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা ফয়সল কাদেরের মুঠোফোনে একাধিকবার কল দিলেও তিনি রিসিভ করেননি। এছাড়া অতিরিক্ত আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা তারেক আহমেদের মুঠোফোনে কল দিলে সেটি বন্ধ পাওয়া যায়।
এই সংবাদটি পড়া হয়েছে : 1K বার