স্পোর্টস ডেস্ক:
প্রাত্যহিক জীবনের প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্রে এখন বিশ্বায়নের ছোঁয়া লেগেছে। যার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হতে পারে বিশ্ব ক্রীড়াঙ্গনও। এখন আর আর্জেন্টিনার ফুটবলার নিজ দেশে সীমাবদ্ধ নেই, তেমনি নানান দেশে ছড়িয়ে পড়ছেন বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ব্রাজিল, ফ্রান্স কিংবা ইংল্যান্ড ও স্পেনের ফুটবলাররা। মূলত জাতীয় দলের বাইরে বছরব্যাপী ক্লাব ফুটবলের দলগুলো মাঠ মাতিয়ে রাখে। এর মাধ্যমেই ঘটছে ক্রীড়াঙ্গনের বিশ্বায়ন। বর্তমানে বিশ্বব্যাপী সবচেয়ে বেশি ছড়িয়ে–ছিটিয়ে আছেন পাঁচবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ব্রাজিলের খেলোয়াড়রা। এরপরই অবস্থান ফ্রান্স ও আর্জেন্টিনার।
ফুটবলকেন্দ্রিক গবেষণা সংস্থা সিআইইএস এই তথ্য প্রকাশ করেছে। তারা ২০১৭ থেকে ২০২৩ পর্যন্ত সময়কালকে বিবেচনায় নিয়ে বিশ্বব্যাপী ১৩৫টি লিগের (৮৩টি ইউরোপের এবং ৫২টি অন্য মহাদেশের) ওপর পর্যালোচনা চালিয়েছে। যেখানে রয়েছে ২ হাজার ২০০টি ক্লাবের মূল দলে খেলা ৬২ হাজার ৬১০ ফুটবলার। তাদের মধ্যে ১৪ হাজার ৪০৫ জনই প্রবাসী ফুটবলার, যারা জন্মভূমির বাইরে গিয়ে ফুটবল ক্যারিয়ার গড়েছেন।
সিআইইএসের গবেষণায় প্রাপ্ত ফলাফল বলছে, বর্তমানে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে খেলা বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ব্রাজিলের ফুটবলারদের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। সবমিলিয়ে এই লাতিন পরাশক্তিদের ১ হাজার ২৮৯ জন খেলোয়াড় নিজ দেশের বাইরে পৃথিবীর বিভিন্ন অঞ্চলে খেলছেন। এই তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে আছে দুবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ফ্রান্স, যাদের ১ হাজার ৩৩ জন খেলোয়াড় বিভিন্ন দেশের ক্লাবে আছেন। সর্বশেষ কাতার বিশ্বকাপ জেতা আর্জেন্টিনা রয়েছে তৃতীয় স্থানে। বিশ্বের নানা দেশে তাদের ৯০৫ জন খেলোয়াড় মাঠ মাতাচ্ছেন। এই তালিকায় ইংল্যান্ড, স্পেন, কলম্বিয়া এবং জার্মানিও ওপরের দিকে আছে।
সব মিলিয়ে ব্রাজিল শীর্ষে থাকলেও তরুণ খেলোয়াড় সরবরাহে ফ্রান্সই সবার ওপরে। অনূর্ধ্ব–২৩ বছর বয়সী ২০২ জন ফরাসি খেলোয়াড় বিশ্বের বিভিন্ন ক্লাবের মূল দলে খেলছেন। ফ্রান্সের পর এই তালিকার দ্বিতীয় স্থানে আছে ব্রাজিল। বিশ্বের বিভিন্ন ক্লাবে তাদের ১৭৪ জন অনূর্ধ্ব–২৩ বছর বয়সী খেলোয়াড় খেলছেন। আর্জেন্টাইন অনূর্ধ্ব–২৩ খেলোয়াড়দের মধ্যে বিশ্বব্যাপী খেলছেন ৯২ জন।
তবে ‘বুড়ো’ কিংবা ৩০ বা তার বেশি বয়সী খেলোয়াড় সবচেয়ে বেশি রপ্তানি করেছে তিনবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন আর্জেন্টিনা। বিশ্বের বিভিন্ন ক্লাবে খেলছেন, আর্জেন্টিনার এমন ৩১৭ জন খেলোয়াড়ের বয়স ৩০ বা এর বেশি। এই ক্যাটাগরিতে ৩০৮ জন খেলোয়াড় নিয়ে দ্বিতীয় অবস্থানে আছে ব্রাজিল। আর ফ্রান্সের খেলোয়াড় ২১৩ জন।
২৩ থেকে ২৬ বছর বয়সীদের মধ্যে আবার সবচেয়ে বেশি ৪১১ জন খেলোয়াড় এসেছে ব্রাজিল থেকে। যেখানে ব্রাজিলের নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ফ্রান্স (৩৩৬) ও আর্জেন্টিনা (২৩৬) বেশ পিছিয়েই আছে। ২৭ থেকে ৩০ বছর বয়সীদের মধ্যেও বাকিদের চেয়ে এগিয়ে ব্রাজিল (৩৯৬)। এরপর আছে ফ্রান্স (২৮২) ও আর্জেন্টিনা (২৭০)।
স্বাভাবিকভাবেই ফুটবলারদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি পাদপ্রদীপের নিচে দেখা মেলে আক্রমণভাগের খেলোয়াড়দের। যা সিআইইএসের গবেষণাতেও উঠে এসেছে। বিদেশি খেলোয়াড়দের মধ্যে সবচেয়ে বেশি আগ্রহ যথারীতি আক্রমণভাগের খেলোয়াড়দের নিয়ে। বিশ্বব্যাপী খেলা বিদেশি খেলোয়াড়দের মধ্যে ৩০.২ শতাংশই আক্রমণভাগের খেলোয়াড়। পরের তিন স্থানে যথাক্রমে ডিফেন্ডার (২২.৬ শতাংশ) মিডফিল্ডার (২১.৫ শতাংশ) ও গোলরক্ষক (১৪.৯ শতাংশ)।
এই সংবাদটি পড়া হয়েছে : 1K বার