কানাইঘাট প্রতিনিধি:
সিলেটের কানাইঘাটে রাস্তা থেকে তুলে নিয়ে সন্তানের সামনে মাকে দলবেঁধে ধর্ষণের মামলায় পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
বিষয়টি নিশ্চিত করে কানাইঘাট থানার ওসি মো. গোলাম দস্তগীর আহমেদ জানান, রোববার রাত ১১টার দিকে ধর্ষণের ঘটনা ঘটে; সোমবার দিনভর উপজেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তাররা হলেন উপজেলার নন্দিরাই গ্রামের দুদু মিয়া (৩৬), বীরদল ভাড়ারীফৌদ গ্রামের হেলাল আহমদ (৩৮), বড়দেশ সরদারীপাড়া গ্রামের ফরহাদ (৩৫), বীরদল আগফৌদ গ্রামের আব্দুল করিম ও বীরদল ছোটফৌদ গ্রামের জুবের আহমদ (২৪)।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ভিকটিমের বাড়ী কানাইঘাট উপজেলার লক্ষীপ্রসাদ পশ্চিম ইউনিয়নের সোনাতনপুঞ্জি বিলেরপাড় গ্রামে। তার বিয়ে হয় পাশর্^বর্তী বিয়ানীবাজার উপজেলা বড়দিঘিরপাড় গ্রামের জনৈক মিছবাহ উদ্দিনের সাথে। অনুমানিক ২০ দিন পূর্বে গ্রেফতারকৃত আসামী দুদু মিয়ার সাথে কানাইঘাট স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভিকটিমের পরিচয় হয়। সেই সুবাদে দুদু মিয়ার সাথে তরুনীর প্রায়ই ফোনে কথাবার্তা হতো। ভিকটিমের ৯ মাসের শিশু কন্যা অসুস্থ হলে দুদু মিয়া জকিগঞ্জ উপজেলার ফুটিজুরি গ্রামের এক কবিরাজের কাছে নিয়া যেতে বলে। ভিকটিমের শিশুকন্যার চিকিৎসার নাম করে রবিবার(২৮ মে) বিকাল ৩টার দিকে দুদু মিয়া ধর্ষিতা তরুনীকে তার বাড়ী থেকে নিয়ে যায়। কিন্তু কবিরাজের কাছে না নিয়ে কৌশলে ফুসলিয়ে দুদু মিয়া কানাইঘাটের বীরদল বাজার এলাকায় তরুনীকে নিয়ে ঘুরতে থাকে। রাত সাড়ে ১০ টার দিকে বীরদল বাজারে থাকা লোকজনের সন্দেহ হয়। এতে দুদু মিয়ার ফোনে তার সহযোগী আব্দুল করিম বীরদল বাজারে চলে আসে এবং তারা তরুনীকে কৌশলে মোটর সাইকেল যোগে বীরদল খালোমুরা বাজারে নিয়ে যায়। এতে স্থানীয় কিছু লোকজনের সন্দেহ হলে তাদের আটক করেন। পরে রাত ১১টার দিকে স্থানীয় লোকজন কানাইঘাট বাজারে নিরাপদে নিয়ে যাওয়ার জন্য জুবের আহমদের রিক্সায় তুলে দেওয়া হয়। এতে তরুনীর পিছু নেয় দুদু মিয়া ও আব্দুল করিম। একপর্যায় পুরানফৌদ কবরস্থানের সামনে তরুনীর রিক্সা আসা মাত্রই হেলাল আহমদ ও ফরহাদ আহমদ রিক্সার গথিরোধ করে এবং পুরানফৌদ গ্রামের পিপি হাবিব আলীর নির্জন পুকুর ঘাটে তরুনীকে তুলে নিয়ে যায়। সেখানে তার শিশুকন্যার সামনে হেলাল ও ফরহাদ তরুনীর ইচ্ছার বিরুদ্ধে পালাক্রমে ধর্ষন করে। এতে ভিকটিমের প্রচুর রক্তপাত হয়। গণধর্ষনের সাথে জড়িতরা পালিয়ে গেলে ধর্ষিতার আত্মচিৎকারে স্থানীয় লোকজন এসে পুলিশকে খবর দেন। পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে ধর্ষিতাকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে।
পুলিশ ঘটনার সাথে জড়িতদের চিহ্নিত করে স্থানীয় এলাকাবাসীর সহায়তায় আজ সোমবার দিনভর অভিযান চালিয়ে গণধর্ষনের সাথে জড়িত সহ ৫ জনকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছে বলে থানার অফিসার ইনচার্জ মো. গোলাম দস্তগীর আহমেদ জানিয়েছেন। বর্তমানে গণধর্ষিতাকে পুলিশ হেফাজতে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওসিসিতে পাঠানো হয়েছে।
এই সংবাদটি পড়া হয়েছে : 1K বার