স্টাফ রিপোর্টার:
প্রেম করে বিয়ে করেছেন মাত্র ৩ বছর আগে। বিয়ের আগে জাত-কূল কিছুই মানেননি এই যুগল। সব বিসর্জন দিয়ে একে অপরকে একান্তে পাওয়ার মাত্র ক’দিন পর থেকেই শুরু হয় সাংসারিক টানাপোঁড়েন। অনেকটা অবাধ্য হয়ে অন্য সম্প্রদায়ের ছেলেকে বিয়ে করায় মেয়ের বাপের বাড়ির লোকজন ছিলেন বেজায় নাখোশ। জামাইর বাড়ির সাথে সামাজিকতা রক্ষায়ও মেয়ের পরিবার ছিল পিছিয়ে। এ নিয়ে স্বামীর সংসারের সদস্যরা খোঁচা দিয়ে কথা বলতেন গৃহবধূ ফাহমিদা আক্তারকে।
এদিকে বিয়ের ৩ বছর পেরিয়ে যাওয়ার পর ওই যুগল কোন সন্তানাদির মুখ দেখতে পাননি। এসব নিয়েও বেশ ঝড়-ঝাপটা সইতে হয়েছে ফাহমিদাকে। একদিকে বাপের বাড়ির লোকজনের অভিমান-অবহেলা অন্যদিকে স্বামীর বাড়ির সদস্যদের মানষিক নির্যাতন-এসবের বোঝা আর আর বইতে পারেনি গৃহবধূ ফাহমিদা। মানষিক যন্ত্রণার এই কঠিন বাস্তবতাকে চিরবিদায় জানিয়ে আত্মহননের পথ বেছে নেন তিনি। বুধবার ভোরে পুলিশ গলায় ফাঁস দেয়া অবস্থায় তার লাশ উদ্ধার করে। বিয়ানীবাজার উপজেলার কুড়ার বাজার ইউনিয়নের খসিরবন্দ-কইরবন্দ এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত ফাহমিদা একই গ্রামের আবিদুর রহমানের স্ত্রী। তার বাপের বাড়ি উপজেলার দুবাগ ইউনিয়নের মেওয়া গ্রামে। তারা একে-অপরের সাথে প্রেম করে বিয়ে করেন।
পুলিশ আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগে স্বামী আবিদুর রহমানকে আটক করেছে। তবে পুলিশের হাতে আটকের আগে তিনি জানান, মঙ্গলবার দিবাগত রাত ৩ টার দিকে স্ত্রী ফাহমিদার সাথে তার ঝগড়া হয়। এরপর তিনি বাইরে বেরিয়ে গেলে স্ত্রী ভিতর দিক থেকে ঘরের দরজা লাগিয়ে দেন। এর ঘন্টাখানেক পর তিনি ঘরে ফিরে এসে স্ত্রীকে ডাকাডাকি করলেও কোন সাড়াশব্দ পাওয়া যায়নি। পরবর্তীতে পরিবারের সদস্যরা দরজা ভেঙ্গে ফাহমিদার লাশ দেখতে পান।
এদিকে নিহতের পিতা ও ভাই অভিযোগ করেন, স্বামীর বাড়ির লোকজনের মানষিক নির্যাতনে ফাহমিদা আত্মহত্যা করতে পারে।
বিয়ানীবাজার থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) তাজুল ইসলাম জানান, লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য প্রেরণ করা হয়েছে। ওই গৃহবধূর স্বামীকে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেয়ার ঘটনায় আটক করা হয়েছে।
এই সংবাদটি পড়া হয়েছে : 1K বার