স্টাফ রিপোর্টার:
সিলেটের ঐতিহ্যবাহী কিনব্রিজ সংস্কার শুরু হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৭ আগস্ট) সকাল থেকে ব্রিজের কাজ শুরু করে দিয়েছে রেলওয়ে বিভাগ। সংস্কার করার জন্য বুধবার থেকে ব্রিজটির দুই প্রবেশমুখে ব্যারিকেড দিয়ে সকল ধরণের যান চলাচল বন্ধ করে দেয় সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগ।
সেতু বন্ধের ঘোষণা দিয়ে ব্রিজের দুই পাশে নোটিশ লাগানো হয়েছে। কাজের মেয়াদ দুই মাস ধরা হলেও এর আগেই কাজ শেষ হবে বলে জানিয়েছে রেলওয়ে বিভাগ।
সওজ সূত্রে জানা গেছে, কিনব্রিজ সংস্কারের জন্য ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে দুই কোটি ১৫ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। ওই বছরেরই জুনে বরাদ্দের টাকা রেলওয়ের সেতু বিভাগকে বুঝিয়ে দেওয়া হয়। সেতুটি সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের নিয়ন্ত্রণাধীন হলেও এটি সংস্কার করবে রেলওয়ের সেতু বিভাগ। আর সেতুটি দেখভাল করে সিলেট সিটি করপোরেশনের প্রকৌশল বিভাগ।
গত ২৫ জুলাই সেতু বন্ধের ঘোষণা দেয় বাংলাদেশ রেলওয়ের পূর্বাঞ্চল। তবে তা কয়েক দফা পিছিয়ে বুধবার থেকে সম্পূর্ণ বন্ধ করে ব্রিজের কাজ শুরু করে দিয়েছে রেলওয়ে।
সওজ সিলেটের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, বুধবার থেকে কিনব্রিজে সব ধরণের যান চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। আগামী দুই মাস সংস্কার কাজ চলবে। সংস্কার শেষে আবারও জনসাধারণের জন্য এটি খুলে দেওয়া হবে।
তিনি বলেন, রেলওয়ের বিভাগকে দুই মাসের আগে কাজ শেষ করার জন্য বলা হয়েছে। সংস্কারে পরে কিন ব্রিজ দিয়ে আর বড় ধরণের যানবাহন চলাচল করতে দেয়া হবে না।
রেলওয়ে বিভাগের পূর্বাঞ্চলের সেতু প্রকৌশলী জিসান দত্ত জানান, বুধবার দুপুর সকাল থেকে ব্রিজটির উপর ও নিচে একযোগে কাজ শুরু হয়েছে। মেয়াদ দুই মাস থাকলেও আশা করছি দুই মাসের আগেই কাজ শেষ করতে পারবো।
২০১৯ সালের ১ সেপ্টেম্বর ঝুকিপূর্ণ সেতুটির দুই দিকে লোহার বেষ্টনী দিয়ে সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ করে সিটি করপোরেশন। তবে নাগরিকদের প্রতিবাদের মুখে বন্দের কিছুদিন পরেই যান চলাচলের জন্য সেতুটি খুলে দেয়া হয়।
ব্রিটিশ আমলে লোহার কাঠামোর দৃষ্টিনন্দন এই সেতুটি নির্মাণ করেছিল রেলওয়ে বিভাগ। টানা দুই বছর নির্মাণকাজ শেষে ১৯৩৬ সালে সেতুটি চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছিল। তৎকালীন আসাম প্রদেশের গভর্নর মাইকেল কিনের নামে এই সেতুর নামকরণ হয় কিনব্রিজ। প্রায় ৯ দশক ধরে সচল সেতুটি বাংলাদেশের অন্যতম প্রাচীন এবং সিলেট অঞ্চলে সুরমা নদীর ওপর প্রথম সেতু। এর দৈর্ঘ্য ১ হাজার ১৫০ ফুট এবং প্রস্থ ১৮ ফুট। মুক্তিযুদ্ধের সময় ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় সেতুটি ১৯৭৭ সালে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ প্রথম দফা সংস্কার করেছিল। এরপর আর বড় ধরনের সংস্কার হয়নি।
এই সংবাদটি পড়া হয়েছে : 1K বার