স্টাফ রিপোর্টার:
বর্তমান সরকারের পদত্যাগ, নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকারসহ এক দফা দাবিতে রাজধানীতে সমাবেশ করবে বিএনপিসহ যুগপৎ আন্দোলনে থাকা বিরোধী দলগুলো। ঘোষিত সমাবেশ থেকে আন্দোলনের নতুন কর্মসূচি দেওয়া হতে পারে। শুক্রবার সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় এ সমাবেশ হবে। বিএনপির এই সমাবেশের দিন রাজধানীতে কর্মসূচি দিয়েছে আওয়ামী লীগও। ‘শান্তি ও উন্নয়ন’ সমাবেশের পাশাপাশি ‘সতর্ক অবস্থানের মাধ্যমে’ রাজধানীতে শোডাউন করবে সরকার সমর্থকরা।
একই দিন জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমানসহ নেতা-কর্মী ও আলেম-ওলামাদের মুক্তি, মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার এবং কেয়ারটেকার সরকার প্রতিষ্ঠার দাবিতে সব জেলায় বিক্ষোভ করবে দলটি।
বিএনপির যুগপৎ সমাবেশ
বিএনপির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, রাজধানীতে তারা এককভাবে সমাবেশ চাইলেও পরে তা যুগপৎভাবে করার সিদ্ধান্ত হয়। ফলে গণতন্ত্র মঞ্চসহ সমমনা বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও জোটের ব্যানারে একযোগে সমাবেশ হবে।
দলের পক্ষ থেকে জানানো হয়, ঢাকা মহানগর বিএনপির দুই অংশের যৌথ উদ্যোগে শুক্রবার বিকেল ৩টায় নয়াপল্টন দলীয় কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশ হবে। ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আবদুস সালামের সভাপতিত্বে ও উত্তরের সদস্য সচিব আমিনুল হকের সঞ্চালনায় এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
এদিকে বিকেল ৪টায় পুরানা পল্টন মোড়ে সমাবেশ করবে গণতন্ত্র মঞ্চ। একই সময়ে বিজয়নগর পানির ট্যাংকির সামনে ১২ দলীয় জোট, পল্টনের আলরাজী কমপ্লেক্সের সামনে জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট সমাবেশ করবে। বিকেল ৩টায় পূর্ব পান্থপথে এফডিসিসংলগ্ন কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এলডিপি), বিকেল সাড়ে ৩টায় পল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে সমাবেশ করবে নুরুল হক নুর নেতৃত্বাধীন গণঅধিকার পরিষদ (একাংশ)। এছাড়া বাম গণতান্ত্রিক ঐক্য সকাল ১০টায় পল্টন মোড়ে, লেবার পার্টি বেলা ১১টায় নয়াপল্টন দলীয় কার্যালয়ে সামনে, গণফোরাম ও পিপলস পার্টি যৌথভাবে বিকেল ৪টায় আরামবাগ দলীয় কার্যালয়ে সামনে এক দফা দাবিতে একই কর্মসূচি পালন করবে।
মাঠে থাকবে আওয়ামী লীগ
বিএনপির সমাবেশ থেকে ঠিক দেড় কিলোমিটার দূরে বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে শান্তি সমাবেশ করবে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ। বিএনপি-জামায়াতের নৈরাজ্য-সন্ত্রাস ও দেশবিরোধী ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে এ সমাবেশ হবে। এতে প্রধান অতিথি থাকবেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি আবু আহমেদ মন্নাফীর সভাপতিত্বে সমাবেশ পরিচালনা করবেন মহানগর দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির।
গত ডিসেম্বর থেকে বিএনপি ও তার মিত্রদের কর্মসূচি শুরু হলে একই সময়ে মাঠে অবস্থান নিয়ে আসছে আওয়ামী লীগ। এক পর্যায়ে গত ১২ জুলাই বিএনপি ও তার মিত্ররা সরকার পতনের এক দফা ঘোষণা দিয়ে মাঠে নামলে পাল্টা কর্মসূচি জোরালো করে ক্ষমতাসীনরা। তারা আগামী নির্বাচন পর্যন্ত রাজপথ দখলে রেখে বিরোধীদের সম্ভাব্য নাশকতা-নৈরাজ্য মোকাবিলার ঘোষণা দেয়।
সারাদেশে জামায়াতের বিক্ষোভ
জামায়াতে ইসলামীর ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা এ টি এম মাছুম বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে বলেন, বর্তমান সরকার বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের মিথ্যা ও ষড়যন্ত্রমূলক মামলা দিয়ে হয়রানি করা করছে। এমনকি মৃত ব্যক্তিদের নামেও মামলা দায়ের করা হচ্ছে। সরকারের জুলুম-নির্যাতন থেকে বৃদ্ধ নারী-পুরুষ, শিশুসহ কেউই রেহাই পাচ্ছে না। দেশের জনগণ কেয়ারটেকার সরকারের দাবিতে ঐক্যবদ্ধ। সরকার বিরোধীদলকে বাইরে রেখে একটি প্রহসনের নির্বাচনের ষড়যন্ত্র করছে।
বিবৃতিতে তিনি সরকারের সব চক্রান্ত বানচাল করে কেয়ারটেকার সরকারের অধীনে অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের জন্য এবং আমিরে জামায়াত ডা. শফিুকর রহমানসহ আলেম-ওলামাদের মুক্তি, মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার এবং কেয়ারটেকার সরকার প্রতিষ্ঠার দাবিতে সব জেলায় শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ কর্মসূচি ঘোষণা করছেন বলে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, এই কর্মসূচি শান্তিপূর্ণভাবে সফল করে তোলার জন্য জামায়াতের সব জেলা শাখার জনশক্তি ও দেশবাসীর সহযোগিতা কামনা করছি।
এই সংবাদটি পড়া হয়েছে : 996 বার