স্টাফ রিপোর্টার:
সিলেটের উন্নয়নে সম্ভাব্য সকল পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ. কে. আব্দুল মোমেন এমপি। রবিবার (২৪ সেপ্টেম্বর) নিউইয়র্কের জ্যাকসন হাইটসে ‘বৃহত্তর সিলেট গণদাবি পরিষদ যুক্তরাষ্ট্র, ইনক’র নবনির্বাচিত কার্যকরী পরিষদের অভিষেক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে পররাষ্ট্রমন্ত্রী একথা বলেন।
সিলেটের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের কথা তুলে ধরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, সিলেট-ঢাকা ৬ লেনের কাজ ঢাকার অংশে ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে। কিন্তু জমি অধিগ্রহণ শেষ না হওয়ায় সিলেট-হবিগঞ্জ অংশে এখনো কাজ শুরু করা যায় নাই। সিলেট-তামাবিল ৪ লেন সড়কের কাজ শুরু হয়েছে। সিলেটের কুমারগাও-বাধাঘাট বাইপাসের কাজও শুরু হয়েছে। সিলেটে নদীর তীর দখলমুক্ত করে ওয়াকওয়ে করা হচ্ছে। সিলেটে গ্রামেগঞ্জে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়েছে। সিলেটের ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সম্প্রসারণের কাজ দ্রুত এগিয়ে চলছে বলেও উল্লেখ করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
ভবিষ্যতে সিলেটকে মেডিকেল হাব হিসেবে গড়ে তোলা হবে উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ইতোমধ্যে সিলেটে স্বাস্থ্যসেবার যথেষ্ট উন্নতি সাধন করা হয়েছে। আগে সিলেট ওসমানী মেডিকেলে মাত্র ৩টি আইসিইউ ছিল, এখন ৩০টি হয়েছে। এ হাসপাতালে আগে ৫০০ বেড ছিল, এখন ৯০০ তে উন্নীত হয়েছে। এছাড়া ওসমানী হাসপাতালে ১৮ তলা নতুন ভবন তৈরি করা হচ্ছে- যেখানে হার্ট, কিডনি ও ক্যান্সারের বিশেষায়িত চিকিৎসাসেবা দেওয়া হবে। এছাড়া সিলেটে দ্বিতীয় ওসমানী হাসপাতাল নির্মাণের কাজ প্রক্রিয়াধীন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী সিলেটে শিক্ষার হার বৃদ্ধির উপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, সারাদেশের মধ্যে সিলেটের শিক্ষার হার সর্বনিম্ন। এজন্য সিলেটে শিশু মৃত্যুর হার ও মাতৃমৃত্যুর হার অনেক বেশি। তিনি বলেন- একসময় সিলেটে শিক্ষিতের হার সবচেয়ে বেশি ছিল। সিলেটে তরুণদের লেখাপড়ার প্রতি আগ্রহ কম এবং বিদেশে যাওয়ার প্রবণতা বেশি। সিলেটে শিক্ষার হার কম থাকায় চাকরির ক্ষেত্রে সিলেটের যোগ্য প্রার্থী খুঁজে পাওয়া যায় না- যা দুঃখজনক।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ বিষয়ে অভিভাবকদের আরো সচেতন হওয়ার আহবান জানান।
প্রবাসীদের এনআইডি এবং পাসপোর্ট যথাসময়ে না পাওয়ার অভিযোগ সম্পর্কে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, প্রবাসীরা পাসপোর্ট এবং এনআইডি যথাসময়ে না পেলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন। কিন্তু পাসপোর্ট বা এনআইডি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় দেয় না, বরং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় দিয়ে থাকে। বিদেশস্থ বাংলাদেশ মিশনগুলো বায়োমেট্রিক এবং তথ্য সংগ্রহ করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে পাসপোর্ট এবং এনআইডি ইস্যু হলে তবেই মিশনের মাধ্যমে সেগুলো বিতরণ করা হয়।
সরকার প্রবাসীদের জন্য বিনিয়োগের পরিবেশ সৃষ্টি করেছে জানিয়ে ড. মোমেন বলেন, সিলেটে ইকনমিক জোন করা হয়েছে, যেখানে ৪৫০ টি প্লট আছে। কিন্তু এই ইকনমিক জোনে সিলেটের ব্যবসায়ীদের অংশগ্রহণ তেমন আশাব্যঞ্জক নয়।
আলোচনা সভায় সিলেট গণদাবি পরিষদের সদস্যরা প্রবাসীদের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে মতবিনিময় করেন।
অনুষ্ঠানে ‘বৃহত্তর সিলেট গণদাবি পরিষদ যুক্তরাষ্ট্র, ইনক’র নেতৃবৃন্দ এবং নিউইয়র্কে বাংলাদেশি কমিউনিটির সদস্যবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
এই সংবাদটি পড়া হয়েছে : 999 বার