স্পোর্টস ডেস্ক:
গত ১০ অক্টোবর পাকিস্তান-শ্রীলঙ্কা ম্যাচের প্রিভিউতে লিখতে হয়েছিল—ইতিহাস বদলাতে পারবে শ্রীলঙ্কা? চার দিনের ব্যবধানে আজ আবার সেই বাক্যটিই লিখতে হচ্ছে ভারত-পাকিস্তান দ্বৈরথের প্রিভিউয়ের শিরোনামে, শুধু নামটা পরিবর্তন করে। শ্রীলঙ্কার জায়গায় পাকিস্তানের নাম বসিয়ে লিখতে হচ্ছে—ইতিহাস বদলাতে পারবে পাকিস্তান?
বিশ্বকাপে পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কার মধ্যকার দ্বৈরথের পরিসংখ্যান যেমন এক তরফা, ভারত-পাকিস্তানের দ্বৈরথের চিত্রটাও ঠিক তেমনই। ক্রিকেট বিশ্বকাপে শ্রীলঙ্কা কখনোই হারাতে পারেনি পাকিস্তানকে। তেমনি পাকিস্তানও কখনো ভারতকে হারাতে পারেনি। দুই বৈরী প্রতিবেশীর দ্বৈরথে প্রতি বারই হারের বেদনা নিয়ে মাঠ ছাড়তে হয়েছে পাকিস্তানকে।
সব মিলে বিশ্বকাপে মোট সাত বার মুখোমুখি হয়েছে ভারত-পাকিস্তান। সেই সাত বারই জিতেছে ভারত। সেই জয়গুলোও অনেকটা এক তরফাভাবে। সাত জয়ের মধ্যে ভারতের সবচেয়ে ছোট জয় যেটি, সেটিও ২৯ রানের। ২০১১ বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে। আজ তাই বাবর আজমের পাকিস্তানের সামনে ইতিহাস বদলানোর চ্যালেঞ্জ। রোহিত শর্মার ভারতের সামনে চ্যালেঞ্জ, নিজেদের জয়রথের ইতিহাসটা ধরে রাখা। দুই দলের কে নিজেদের চ্যালেঞ্জে জিতবে?
দুই দলই এবারের বিশ্বকাপটা শুরু করেছে দারুণভাবে। দুই দলই নিজেদের দুই ম্যাচেই জিতেছে। দৈত্য অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে জয় দিয়ে শুরু করা ভারত দ্বিতীয় ম্যাচে উড়িয়ে দিয়েছে আফগানিস্তানকে। পাকিস্তানের শুরুটা পুঁচকে নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে দাপুটে জয়ে। পরে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে জিতেছে বিশ্বকাপের ইতিহাসে সর্বোচ্চ রান তাড়া করে জেতার রেকর্ড গড়ে। এই তথ্যই বলছে, দুই দলই আত্মবিশ্বাসে উড়ছে।
পরাশক্তি হিসেবে এমনিতেই ভারত-পাকিস্তান দ্বৈরথ বিশ্ব ক্রিকেটের অন্যতম সেরা আকর্ষণীয় দ্বৈরথ। রাজনৈতিক বৈরি সম্পর্কের কারণে দুই প্রতিবেশীর ক্রিকেট দ্বৈরথের উত্তেজনা আরো বেশি। বলতে পারেন, ভারত-পাকিস্তানের ম্যাচ শুধুই ক্রিকেট উত্তেজনায় সীমাবদ্ধ থাকে না। তাতে যুক্ত হয়ে যায় রাজনৈতিক আগুনও! আজকের দ্বৈরথের কথাই ধরুন। আহমেদাবাদের নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামের ম্যাচটি বোমা মেরে পণ্ড করে দেওয়ার হুমকিও এসেছে! এ পর্যন্ত বিশ্বকাপের যে ১১টি ম্যাচ হয়েছে, উত্তেজনার দিক থেকে তার তুলনায় আজকের ম্যাচটি অনেক বেশি উত্তাপ ছড়াচ্ছে। সেই উত্তাপ সামাল দিতে নিতে হয়েছে বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা। আহমেদাবাদের এই ম্যাচের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য নিয়োজিত করা হয়েছে বাড়তি ১১ হাজার পুলিশ। এছাড়াও স্থলপথ, আকাশ পথে বিশেষ নজরদারি রাখা হয়েছে। ক্রিকেট ম্যাচ নয়, যেন দুই শত্রু দেশের যুদ্ধ!
তা ক্রিকেট ম্যাচ তো এক রকম যুদ্ধই। সশস্ত্র যুদ্ধের মতো ক্রিকেট যুদ্ধেও ভান্ডারের সেরা অস্ত্র ব্যবহার করা হয়, জিততে হয় কৌশল করে। তো সেই ক্রিকেট কৌশলে যারা এগিয়ে থাকবে, আজ জয় হবে তাদেরই। এমনিতে দুই দলই অন্তত ভারসাম্যপূর্ণ। ব্যাটিং-বোলিং, কোনো দিক থেকেই কোনো দলের খুব বেশি খামতি নেই। তবে সুক্ষ ক্রিকেটীয় বিচারে রোহিত শর্মার ভারত একটু হলেও যেন এগিয়ে। তাছাড়া আজ ম্যাচটিও তারা খেলতে নিজেদের ঘরের মাঠে, গ্যালারিভর্তি দর্শক সঙ্গে নিয়ে। বিশ্বকাপ ইতিহাসও তাদের পক্ষে। বিপরীতে আনপ্রেডিক্টেবল পাকিস্তানের বড় গুণ, পিছিয়ে থাকা অবস্থা থেকেই তারা থাবাটা ভালো মারতে পারে।
এই সংবাদটি পড়া হয়েছে : 1K বার