হবিগঞ্জ প্রতিনিধি:
হবিগঞ্জ ২৫০ শয্যা জেলা সদর আধুনিক হাসপাতালে বেড়েছে শিশুরোগীর চাপ। তাদের অধিকাংশই জ্বর, সর্দি, কাশি, ডায়রিয়া, শাসকষ্ট, নিউমোনিয়াসহ ঠাণ্ডাজনিত বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত। রোগীর সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় হাসপাতালে দেখা দিয়েছে শয্যাসংকট। ফলে হাসপাতালের মেঝে ও বারান্দায় চিকিৎসা নিতে হচ্ছে অনেককে। এসব রোগীর চাপ সামলাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে নার্সদের।
হবিগঞ্জ ২৫০ শয্যা জেলা সদর আধুনিক হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডের তথ্যমতে, বর্তমানে সেখানে ২০০ শিশুরোগী ভর্তি রয়েছে। আর গত চার দিনে রোগী ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন ২১৮ জন।
শিশু ওয়ার্ডের দ্বায়িত্বপ্রাপ্ত সিনিয়র নার্স জোসনা আক্তার জানান, ‘হাসপাতালে ভর্তি অধিকাংশ শিশু ঠাণ্ডাজনিত বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত। আবহাওয়া পরিবর্তনের কারণে আক্রান্ত শিশুর সংখ্যা প্রতিদিনই বাড়ছে।’
এ দিকে, রোগীর চাপ থাকায় সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে এসে নানা ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন সাধারণ মানুষ। শয্যা না থাকায় অপরিচ্ছন্ন পরিবেশে ওয়ার্ড ও রিসিপশনের মেঝে, লিফটের সামনে এবং সিঁড়িতে নিজ উদ্যোগে বিছানা করে চিকিৎসা নিচ্ছেন অনেকে।
বানিয়াচং থেকে সন্তানকে সঙ্গে নিয়ে আসা মইনুল হক বলেন, ‘আমার বাচ্চার প্রচণ্ড জ্বর। হাসপাতালে এসে বিছানা পাইনি। এখন হাসপাতালের সামনে থেকে একটা পলিথিন কিনে সিঁড়িতে বসে আছি।’ তিনি বলেন, ‘এমনিতেই আমার বাচ্চার ঠাণ্ডা লেগেছে। এর মধ্যে সিঁড়িতে রাত কাটানোর কারণে ঠাণ্ডা আরও বেড়েছে। সুস্থ হওয়ার পরিবর্তে বাচ্চা আমার আরও অসুস্থ হয়ে গেছে।’
সদর উপজেলার লুকড়া এলাকার মুনিয়া আক্তার বলেন, ‘এখানে ঠিকমতো চিকিৎসা পাওয়া যায় না। রোগী বেশি থাকার কারণে নার্সরা চিকিৎসা দিতে পারতেছেন না। বাচ্চার কি ওষুধ লাগবে, না লাগবে তারা খোঁজ খবরই নেওয়ার সময় পান না।’
হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. আমিনুল হক সরকার বলেন, ‘অতিরিক্ত রোগীর চাপ থাকায় মেঝেতে চিকিৎসা দিতে হচ্ছে। এ ছাড়া চিকিৎসক ও নার্সদেরও হিমশিম খেতে হচ্ছে। তবু আমরা রোগীর সর্বোচ্চ চিকিৎসা দেওয়ার চেষ্টা করছি।’
তিনি বলেন, ‘এখন আবহাওয়ার পরিবর্তন হচ্ছে। এ সময়টাতে শিশুদের আলাদা যত্ন নিতে হবে। তারা যেন ঘেমে না যায় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। সব সময় তাদের সুতি কাপড় পরাতে হবে।’
এই সংবাদটি পড়া হয়েছে : 1K বার