স্পোর্টস ডেস্ক:
দিল্লির অরুণ জেটলি স্টেডিয়ামে আজ বিশ্বকাপের ২৪তম ম্যাচে মুখোমুখি হচ্ছে অস্ট্রেলিয়া ও নেদারল্যান্ডস। লড়াইটা অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে একজন অস্ট্রেলিয়ানেরও! হ্যাঁ ঠিকই শুনেছেন। অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে একজন অস্ট্রেলিয়ানের লড়াই। এই অম্ল-মধুর সমস্যার মুখোমুখি ক্রিকেটারের নাম স্কট অ্যাডওয়ার্ডস। নেদারল্যান্ড দলের অধিনায়ক।
নেদারল্যান্ডস ক্রিকেটের সঙ্গে অস্ট্রেলিয়ার যোগসূত্রটা বহু পুরোনো। নেদারল্যান্ডসের সাবেক কোচ রায়ান ক্যাম্পবেল থেকে শুরু করে টম কুপার, টিম ফন ডার গুটেন, মাইকেল স্টুয়ার্ট, ডিক নানেসসহ আরো অনেক অস্ট্রেলিয়ান ঘরোয়া ক্রিকেটার ডাচ ক্রিকেটে ছায়া ফেলেছেন। বর্তমান ডাচ দলে সেই যোগসূত্রের প্রতিনিধিত্ব করছেন স্কট অ্যাডওয়ার্ডস। ২৭ বছর বয়সী স্কট অ্যাডওয়ার্ডসের জীবনটা সত্যিই বৈচিত্র্যময়। তিনি যেমন একজন ডাচ, একই ভাবে তিনি একজন অস্ট্রেলিয়ানও। অস্ট্রেলিয়ার নাগরিকত্বও রয়েছে তার।
জন্ম ওসেনিয়া অঞ্চলেরই দ্বীপরাষ্ট্র টোঙ্গায়। তবে বেড়ে ওঠা অস্ট্রেলিয়ায়, মেলবোর্নে। ক্রিকেটের হাতেখড়ি, পড়াশোনা অস্ট্রেলিয়াতেই। পড়াশোনা করেছেন মেলবোর্নের এমাউস কলেজে। ক্রিকেট খেলেছেন ভিক্টোরিয়ার দ্বিতীয় একাদশের হয়ে। কিন্তু তার দাদি ছিলেন একজন ডাচ। সেই সূত্রে নেদারল্যান্ডসের নাগরিকত্বও ছিল তার। সেই হিসেবেই ২০১৭ সালে নেদারল্যান্ডসের প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে অভিষেক হয় তার। খুব অল্পদিনের মধ্যে ডাক পেয়ে যান নেদারল্যান্ডস জাতীয় দলেও।
২০১৮ সালের ১২ জুন আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি ম্যাচ দিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে যাত্রা শুরু। ২০১৮ সালের ১ আগস্ট, নেপালের বিপক্ষে ওয়ানডে অভিষেকও হয় তার। ৫ বছরের ব্যবধানে সেই স্কট অ্যাডওয়ার্ডস এখন নেদারল্যান্ড দলের অধিনায়ক। দলের সবচেয়ে বড় ব্যাটিং ভরসাও। গত ১৭ অক্টোবর এই অ্যাডওয়ার্ডসের ব্যাটে চড়েই ধর্মশালায় রূপকথা লিখেছে নেদারল্যান্ডস। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে গড়েছে প্রথম জয়ের রেকর্ড। অপরাজিত ৭৮ রানের ইনিংসের মাধ্যমে দলের ৩৮ রানের সেই অবিস্মরণীয় জয়ের বড় নায়ক ছিলেন তিনি। হয়েছিলেন ম্যাচ-সেরা।
আজ অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষেও তার ব্যাটের দিকেই তাকিয়ে থাকবে ডাচরা। কিন্তু অ্যাডওয়ার্ডসকে লড়তে হবে নিজেরই আরেক দেশের বিপক্ষে। এরই মধ্যে নেদারল্যান্ডস জাতীয় দলে একটা সংগীত প্রচলন ঘটিয়েছেন স্কট অ্যাডওয়ার্ডস, যে সংগীতটি মূলত তার প্রিয় অস্ট্রেলিয়ান ফুটবল ক্লাব রিকমন্ডের রি-ব্র্যান্ড। তবে আজ ওসব মধুর সম্পর্কের কথা ভাবলে চলে না তার। কারণ, দিল্লির অরুণ জেটলি স্টেডিয়ামে আজ তার কাঁধে থাকছে অস্ট্রেলিয়ার প্রতিপক্ষ দলের প্রধান সেনাপতির দায়িত্ব। আর সেনাপতি হিসেবে অ্যাডওয়ার্ডসের সমস্ত পরিকল্পনাই হবে, সেই অস্ট্রেলিয়াকে সর্বস্বান্ত করার, যে অস্ট্রেলিয়ায় তিনি বেড়ে উঠেছেন, শিখেছেন ক্রিকেট খেলা।
বাকি সবাইকে ছাপিয়ে আজ তাই অ্যাডওয়ার্ডসের দিকেই ক্রিকেটপ্রেমীদের দৃষ্টিটা থাকবে বেশি। নিজেরই আরেক দেশের বিপক্ষে খেলা, অ্যাডওয়ার্ডসের এক দিক থেকে ব্যাপারটা যেমন রোমাঞ্চকর, তেমনি কষ্টেরও। অম্ল-মধুর এই যুদ্ধে কেমন করবেন সেনাপতি অ্যাডওয়ার্ডস?
এই সংবাদটি পড়া হয়েছে : 1K বার