স্টাফ রিপোর্টার:
সারি সারি বাস দাঁড়িয়ে থাকলেও রাজধানীর মহাখালী বাস টার্মিনাল থেকে দূরপাল্লার কোনো বাস ছাড়ছে না। ফলে দূরদূরান্তের কোনো যাত্রী বাড়ি যেতে পারছেন না মহাখালী বাস টার্মিনাল থেকে।
সরকারের পদত্যাগ দাবিতে বিএনপি-জামায়াত ও বিরোধী দলগুলোর দেশব্যাপী সর্বাত্মক অবরোধ কর্মসূচি চলছে। তিন দিনের এ অবরোধ কর্মসূচি চলবে ২ নভেম্বর (বৃহস্পতিবার) পর্যন্ত।
অবরোধের প্রথম দিনে মঙ্গলবার (৩১ অক্টোবর) রাজধানীর ব্যস্ত বাস টার্মিনালগুলোর একটি মহাখালী বাস টার্মিনালে গিয়ে দেখা গেছে, এখান থেকে দূরপাল্লার কোনো বাস ছেড়ে যাচ্ছে না। যাত্রীদের উপস্থিতিও কম, যে অল্প সংখ্যক যাত্রী এসেছেন, বাস না ছাড়ায় তারা যেতে না পেরে ভোগান্তিতে পড়েছেন।
অন্যদিকে মহাখালী মোড় থেকে বাস টার্মিনাল পেরিয়ে নাবিস্কো, তিব্বত পর্যন্ত রাস্তার দুই পাশে বিভিন্ন গন্তব্যের বাসগুলো পার্কিং করে রাখা হয়েছে। পাশাপাশি টার্মিনালের ভেতরেও বাস রয়েছে পরিপূর্ণভাবে। আর বাস টার্মিনালের সামনে নিরাপত্তায় মোতায়ন রয়েছে পুলিশ সদস্যরা।
রাজধানী মগবাজার থেকে মহাখালী টার্মিনালে এসেছেন ব্যবসায়ী সাদেকুল ইসলাম। তিনি যাবেন ময়মনসিংহে। কিন্তু মহাখালী বাস টার্মিনাল থেকে কোনো বাস ছেড়ে না যাওয়ায় পড়েছেন বিপদে। তিনি বলেন, পারিবারিক একটি জরুরি কাজের জন্য ময়মনসিংহে নিজ বাড়ি যাওয়ার জন্য এখানে এসেছিলাম। কিন্তু এসে দেখি কোনো বাসই ছাড়ছে না। বাসওয়ালারা বলছে, রাজনৈতিক দলের অবরোধের কারণেই তারা বাস আপাতত ছাড়ছে না। কিন্তু বাড়ি যেতে না পারলে আমি তো বিপদে পড়ে যাব। তাই অপেক্ষায় আছি টার্মিনালের সামনে দাঁড়িয়ে, যদি কোনো বাস ছাড়ে তাহলে সেটায় চড়ব। তবে বাসওয়ালাদের মতিগতিতে মনে হচ্ছে বাস আজ আর ছাড়বে না।
মহাখালী বাস টার্মিনালের সামনের অংশে পার্কিংয়ে থাকা ময়মনসিংহগামী আলম এশিয়া বাসের সুপারভাইজার ইব্রাহীম আলী বলেন, মহাখালী বাস টার্মিনাল থেকে আজ দূরপাল্লার কোনো বাস ছাড়ছে না। অবরোধের কারণে কোনো রকমের দুর্ঘটনা এড়াতেই মালিকপক্ষের নির্দেশে বাস ছাড়িনি। যাওয়া-আসার সময় দুষ্কৃতিকারীরা যদি বাসে আগুন দেয়, তাহলে তো এই ক্ষতির ভাগ কেউ নেবে না। তাই নিজেদের পরিবহনের নিরাপত্তার স্বার্থে আমরা বাস ছাড়ছি না। তাছাড়া যাত্রীও তেমন একটা নেই। বাস ছাড়লে যাত্রীও পাওয়া যাবে না। আমরা অপেক্ষা করছি, বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে যদি সড়ক নিরাপদ থাকে, যাত্রীও পর্যাপ্ত আসে তবে বাস ছাড়তে পারি আরও পরে।
শনিবারের মহাসমাবেশ পণ্ড এবং সেখানে পুলিশি হামলার প্রতিবাদে রোববার (২৯ অক্টোবর) সারা দেশে বিএনপির ডাকা সকাল-সন্ধ্যার হরতাল পালিত হয়েছে। এরপর রোববার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী ঘোষণা করেন, ৩১ অক্টোবর (মঙ্গলবার) থেকে ২ নভেম্বর পর্যন্ত টানা অবরোধ পালন করবে বিএনপি ও এর শরিক গণতন্ত্র মঞ্চ।
অন্যদিকে, সোমবার (৩০ অক্টোবর) এক বিবৃতিতে সারা দেশে তিন দিনের (৩১ অক্টোবর থেকে ২ নভেম্বর) সড়ক, রেল ও নৌপথ অবরোধ কর্মসূচির ডাক দেয় বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। তবে তিন দিনের এ কর্মসূচি কীভাবে পালন করা হবে তার সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য জানায়নি বিএনপি কিংবা অন্যান্য দলগুলো।
এই সংবাদটি পড়া হয়েছে : 996 বার