স্টাফ রিপোর্টার:
পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম বলেছেন, গত ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত যেসব বাংলাদেশি ওমানের ভিসা পেয়েছেন তারা দেশটিতে যেতে পারবেন। আর ভিসা স্থগিতের বিষয়টি শিগগিরই তুলে নেওয়া হবে।
বৃহস্পতিবার (২ নভেম্বর) প্রধানমন্ত্রীর সৌদি আরব সফর নিয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন প্রতিমন্ত্রী।
শাহরিয়ার আলম বলেন, আমরা প্রতিশ্রুতি পেয়েছি তাদের কাছ থেকে। তারা খুব শিগগিরই এটা খুলে দেবেন। কিন্তু খোলার আগ পর্যন্ত (৩১ অক্টোবর পর্যন্ত) যারা ভিসা পেয়েছেন তারা যেতে পারবেন। তাতে কোনো অসুবিধা নেই। এটা চিরস্থায়ী না। দক্ষিণ এশিয়ার আরেকটি দেশকেও করা হয়েছে, মাস দুয়েক পরে উঠিয়ে নিয়েছেন।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ওমানে বিদেশি শ্রম জনসংখ্যা যা তার অর্ধেক হলো বাংলাদেশি। যেকোনো বাজারে সীমাহীন চাহিদা থাকে না। যে চাহিদা নিয়ে কর্মীরা গেছেন তার কিছু ব্যত্যয় হয়েছে। ওখানে কিছু অপপ্রয়োগ হয়েছে। মধ্যস্থভোগীরা অপব্যবহার করেছে। ভবিষ্যতে যারা যাবেন তাদের জন্য বার্তা থাকবে অবশ্যই কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করে চাকরি নিশ্চিত করে যাবেন।
কূটনীতিকদের ভিসা এবং সরকারি কর্মকর্তাদের ক্ষেত্রে ওমানের ভিসা স্থগিত প্রক্রিয়া থাকছে না বলে জানান শাহরিয়ার আলম। তিনি বলেন, কূটনৈতিক এবং সরকারি কর্মকর্তাদের ক্ষেত্রে এটা ইফেক্টিভ হবে না। যদি কোনো ব্যবসায়ীর মনে হচ্ছে, তাদের যেতে সমস্যা হচ্ছে—তারা আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করবেন।
সংবাদ সম্মেলনে এর আগে বক্তব্য রাখেন প্রসঙ্গে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। ওমানে ভিসা স্থগিত প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বিষয়টা খুব আকস্মিক। আমাদের দূতাবাসকেও আগে জানায়নি। হঠাৎ করেই এ ঘোষণাটা এসেছে। তবে এসব ব্যাপারে আগেও অনেক দেশকে দিয়েছে, কদিন পরে ভিসা দেওয়া শুরু করে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, গত বছর ১ লাখের বেশির কর্মী গেছে। এদের অনেক আদম ব্যবসায়ী পাঠিয়ে দিয়েছে। ঠিকমতো চাকরির ব্যবস্থা করেনি। এসব দুর্ঘটনার কারণে হয়তো ওরা বন্ধ করেছে। এটা চিরস্থায়ী না। আমরা ওদের সঙ্গে আলোচনা করছি।
এসময় বাংলাদেশিদের অবৈধভাবে বিদেশে না যাওয়ার অনুরোধ জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি বলেন, টাকা খরচ করে বিদেশ গিয়ে কাজ না পাওয়া অগ্রহণযোগ্য।
মঙ্গলবার রয়্যাল ওমান পুলিশ (আরওপি) এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, বাংলাদেশের নাগরিকদের জন্য সব ধরনের ভিসা দেওয়া স্থগিত করেছে ওমান। আর এটি মঙ্গলবার থেকেই কার্যকর হয়েছে।
রয়্যাল ওমান পুলিশের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, পর্যটক ও ভ্রমণ ভিসায় যেসব বিদেশি ইতিমধ্যে ওমানে এসেছে, তাদের জন্য ভিসা পরিবর্তন কার্যক্রম স্থগিত করা হয়েছে। এর আগে পর্যটন ও ভ্রমণ ভিসায় ওমানে এসে প্রবাসীরা কর্মী ভিসা নিতে পারতেন। এ সুবিধা স্থগিত হওয়ায় এ রকম যারা ওমানে অবস্থান করছেন, তাদের দেশে ফিরে কাজের ভিসা নিয়ে আবার ওমানে ফিরতে হবে।
আরওপির বিবৃতিতে বলা হয়, পর্যটন ও ভ্রমণ ভিসায় সুলতানাত অব ওমানে আসা সব দেশের নাগরিকদের ভিসা পরিবর্তনের সুবিধা স্থগিত করার পাশাপাশি বাংলাদেশিদের জন্য সব ধরনের ভিসা ইস্যু করাও স্থগিত থাকবে। পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত এ স্থগিতাদেশ কার্যকর থাকবে।
বাংলাদেশিদের জন্য ভিসা স্থগিত কেন?
ঢাকার ওমান দূতাবাস এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, শ্রমবাজারে শৃঙ্খলা আনতে বাংলাদেশিদের জন্য ভিসা প্রক্রিয়া বন্ধের বিষয়টি সাময়িক।
আর এর সঙ্গে রাজনৈতিক কোনো সম্পর্ক নেই বলেও জানায় দূতাবাস।
তিন দিনের সফরে রোববার (৫ নভেম্বর) সৌদি আরব যাচ্ছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দেশটিতে অনেক বাংলাদেশি বেকার অবস্থায় আছে। সরকারপ্রধানের সফরে এ বিষয়ে আলোচনা হবে কি না— জানতে চাইলে প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমরা মধ্যপ্রাচ্যে গেলে শ্রমবাজার নিয়ে আলাপ করি। সৌদির পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমাদের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন। আলোচনায় আসবে।
মধ্যস্থভোগী নেই বাংলাদেশি জন্য এমন কোনো শ্রমবাজার আছে কি না—জানতে চাইলে শাহরিয়ার আলম বলেন, কোরিয়া, জাপান, জর্ডান, কুয়েত, যুক্তরাজ্য আছে। এগুলোতে কোনো মধ্যস্থভোগী নেই।
এই সংবাদটি পড়া হয়েছে : 1K বার