স্পোর্টস রিপোর্টার:
চলতি বিশ্বকাপ আসর থেকে অনেক আগেই ছিটকে গেছে বাংলাদেশ। অন্যদিকে আসরের সেমি ফাইনালে খেলার টিকিট নিশ্চিত করে ফেলেছে অস্ট্রেলিয়া। অস্ট্রেলিয়া জন্য এই ম্যাচটি নিয়ম রক্ষার জন্য হলেও বাংলাদেশের কাছে বেশ গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচটি।
কঠিন সমীকরণ লাল-সবুজদের মাথার ওপরে। কেননা ২০২৫ সালে পাকিস্তানের মাটিতে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে খেলার জন্য অজিদের বিপক্ষে এই ম্যাচে জয়ের বিকল্প নেই বাংলাদেশে সামনে। যদিও এই লড়াইয়ের কিছুটা চাপ গত পরশু কমিয়ে দিয়েছে নিউজিল্যান্ড। লঙ্কানদের বিপক্ষে ৫ উইকেটে জয় তুলে নিয়ে বাংলাদেশের জন্য খানিকটা সহজ পথ করে দিয়েছে কিউইরা। তারপরও ওয়ার্নারদের বিপক্ষে জয় তুলে নিতে পারলে আর কোনো চিন্তাই নেই টাইগারদের। এ লক্ষ্যেই আজ দিনের প্রথম ম্যাচে পুনেতে মুখোমুখি হবে পাঁচ বারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়া ও আসরে ধুঁকতে থাকা বাংলাদেশ।
বাংলাদেশ-অস্ট্রেলিয়া সচরাচর মুখোমুখি হয় না। দ্বিপাক্ষিক সিরিজে সবশেষ মুখোমুখি হয়েছে ২০১১ সালে। সেবার ওয়ানডে বিশ্বকাপের পর বাংলাদেশে তিন ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজ খেলতে এসেছিল তারা। এরপর আর আইসিসির কোনো ইভেন্ট ছাড়া মুখোমুখি হয়নি এই দুই দল। সেই হিসেবেও দুই বার ২০১৭ সালে চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে বৃষ্টিবিঘ্নিত ম্যাচ এবং সবশেষ ২০১৯ বিশ্বকাপে নটিংহ্যামে। এরপর আর দেখা নেই। চার বছর পর আবার তাদের দেখা। আর এমন মুহূর্তেই দেখা হলো যে সময় ভারতের মাটিতে দারুণ ছন্দে রয়েছে অস্ট্রেলিয়া বিপরীতে গোটা আসর জুড়ে ভয়ানক ব্যর্থতায় সবার আগে সেমিফাইনালের দৌড় থেকে ছিটকে যাওয়া নাজুক অবস্থায় লড়াই চালানোর চেষ্টা করতে থাকা।
এদিকে পুনের মহারাষ্ট্র অ্যাসোসিয়েশন ক্রিকেট স্টেডিয়ামে আজ বাংলাদেশ সময় সকাল ১১টায় অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে মাঠে নামবে বাংলাদশে। চলতি বিশ্বকাপে এর আগে এই মাঠে চারটি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়। যা প্রথম ম্যাচে মুখোমুখি হয় বাংলাদেশ এবং স্বাগতিক ভারত। সেই ম্যাচে আগে ব্যাট করতে নেমে ৮ উইকেট হারিয়ে ২৫৬ রান সংগ্রহ করে বাংলাদেশ। জবাবে ব্যাট করতে মেনে ৭ উইকেট হাতে রেখে জয় তুলে নেয় স্বাগতিকরা। এই মাঠে দ্বিতীয় ম্যাচে মাঠে নামে শ্রীলঙ্কা এবং আফগানিস্তান। ঐ ম্যাচে আগে ব্যাট করতে নেমে ২৪১ রান সংগ্রহ করে লঙ্কানরা। দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে ৭ উইকেট হাতে রেখে জয় তুলে নেয় আফগানরা। এই মাঠে তৃতীয় ম্যাচে মুখোমুখি হয় দক্ষিণ আফ্রিকা এবং নিউজিল্যন্ড। সেই ম্যাচে টস জিতে আগে ব্যাট করতে নেমে ৩৫৭ রান করে প্রোটিয়ারা। বিশাল লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে মাত্র ১৬৭ রানে গুটিয়ে যায় কিউইরা। এই মাঠে শেষ ম্যাচে মুখোমুখি হয় ইংল্যান্ড এবং নেদারল্যানন্ড। সেই ম্যাচে আগে ব্যাটিং করতে নেমে ৩৩৯ রান করে ইংলিশরা। জবাবে ব্যাট করতে নেমে ১৭৯ রানে অলআউট হয় ডাচরা। ফলে ১৬০ রানের বিশাল জয় পায় জস বাটলারের দল।
অন্যদিকে একদিনের ক্রিকেটে এখন পর্যন্ত মোট ২১ বার মুখোমুখি হয় বাংলাদেশ-অস্ট্রেলিয়া। সেই সব দেখায় জয়ের পাল্লা ভারী অস্ট্রেলিয়ার। অজিদের ১৯ জয়ের বিপরীতে মাত্র ১টি ম্যাচে জয় পায় বাংলাদেশ। বাকি একটি ম্যাচ পরিত্যক্ত হয়। এর মধ্যে ওয়ানডে বিশ্বকাপে মোট চার বার মুখোমুখি হয় এই দুই দল। সেই সব দেখায়ও এগিয়ে অজিরা। অস্ট্রেলিয়ার ৩ জয়ের বিপরীতে একটিতেও জয় পায়নি টাইগাররা। বাকি একটি ম্যাচ পরিত্যক্ত হয়। এছাড়া এই ফরম্যাটে ২০১৯ বিশ্বকাপে সর্বশেষ মুখোমুখি হয় বাংলাদেশ এবং অস্ট্রেলিয়া। সেই ম্যাচে আগে ব্যাট করতে নেমে স্কোর বোর্ডে ৩৮১ রান তোলে অজিরা। জবাবে ব্যাট করতে মেনে ৩৩৩ রান তুলতে পারে টাইগাররা। ফলে ৪৮ রানের জয় পায় অস্ট্রেলিয়া।
তবে চার বছর পর আবার বাংলাদেশের বিপক্ষে মাঠে নামার আগে অস্ট্রেলিয়া জেনেছে, টাইগার অধিনায়ক ও বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান নেই। তবে তাকে ছাড়া বাকি যারা আছে মুশফিক, মাহমুদউল্লাহ এবং দুই স্পিনার মেহেদী হাসান তাদের নিয়ে অজি শিবিরে আলোচনা হয়েছে তা বোঝা গেল ভেট্টরির কথায়। তিনি বলেন, ‘সাকিবকে ছাড়া বাংলাদেশ অবশ্যই বিগ ফ্যাক্টর। কিন্তু মুশফিকুর, মাহমুদউল্লাহর মতো অভিজ্ঞ ক্রিকেটার রয়েছে— যাদের বিশ্বকাপে রান আছে। আমরা প্রত্যাশা করছি, দুই মেহেদী আগামীকাল খেলবে। মাহেদী আমার প্রিয় ক্রিকেটার। ছোট মেহেদীর কথা বলছি। বড়টা নয়। দারুণ বোলার সে। আসলে ওরা দুজনই দারুণ। তারা যদি সুযোগ পায় আমরা নিশ্চিতভাবেই জানি তারা কতটা প্রভাব রাখতে পারবে নির্দিষ্ট দিনে।’
এই সংবাদটি পড়া হয়েছে : 999 বার