এডভোকেট মো: আমান উদ্দিন:
১৯৭১ সাল। ঐদিনটি মূলত সমাজের অবহেলিত মানুষের আত্মত্যাগের ফসল এই স্বাধীনতা। এলিট শ্রেনীর পরিবারের কয়টি সন্তানই রনাঙ্গনের সম্মুখ যুদ্ধে প্রাণ দিয়েছেন। বাইনকুলার দিয়ে খোজলে হয়ত একজন ও পাবেন না। কিন্তু সুযোগ সন্ধানী এসব এলিট শ্রেনীর লোকেরাই কৌশলে মুক্তযোদ্ধা নাম লিখিয়ে সুযোগ সুবিধা নিচ্ছে বা নেওয়ার চেষ্টা করিতেছেন। এসব কৌশলী প্রতারকদের নিন্দা ছাড়া আর কিছু করার বা বলার নেই। এরাই সাধারন জনগনের নিকট ভন্ড, প্রতারক, হিপক্রেট এর অন্তরভ‚ক্ত। সুতরাং মুক্তিযুদ্ধকে সফল এবং স্বার্থক করে তুলেছেন এসব খেটে খাওয়া অবহেলিত মানুষজনই।
দেশের অর্থনীতি বা জিডিপি এর মান যতটুকু বৃদ্ধি পেয়েছে, তার সিংহভাগই দাবীদার এসব সাধারণ জনগন। যেমনটি কৃষি উন্নয়নে কৃষকের ভ‚মিকাই মুখ্য। গার্মেন্টস পোশাক রপ্তানির মাধ্যমে যে বৈদেশীক আয় হয়, তার অধিকাংশ দাবীদার এসব দিন মজুরেরাই। রেমিটেন্স যুদ্ধা যাহারা বিদেশের মাটিতে কষ্টার্জিত বিনিয়োগ করে, দেশের অর্থনীতির চাকাকে সচল রাখার প্রাণপন চেষ্টা করিতেছেন। কিন্ত হায়! এসব শ্রেনী পেশার মানুষজনই সাধারন জনগনের জীবন যাত্রার মান সুন্দর ও সচল রাখার জন্য জীবন বাজি রেখে বিদেশের মাটিতে কষ্টার্জিত শ্রম বিক্রি করে বাংলাদেশ বিশ্বের মানচিত্রে অর্থনৈতিক উন্নতিতে সমৃদ্ধ শালি দেশ হিসেবে তুলে ধরার চেষ্টা করিতেছেন। তাহারাই সফল, সম্মানীত ও সফল দেশ প্রেমিক। কিন্তু এ দেশে শীর্ষ পর্যায়ের সরকারের কর্তাব্যক্তিরা বা শিক্ষিতরা বিভিন্ন মাধ্যমে চুরি, চামারী, টাউট বাটপারী, করে বিদেশে টাকা পাঠিয়ে বিভিন্ন দেশে বা রাষ্ট্রে বেগম পাড়াসহ নানাবিধ বিনিয়োগ করে দেশের অর্থনীতিকে ধংশ করার পায়তারা করিতেছে। তাদের এসব কর্মকান্ডকে দেশের মানুষ নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানোর ভাষা হারিয়ে ফেলেছেন।
সম্প্রতি শাহাজালাল বিমান কর্তৃপক্ষ যে দাম্বিকতা দেখিয়ে দেশের ভাবমূর্তী যে পরিমান ক্ষতিগ্রস্থ করেছেন, তা কিন্তু বলার অপেক্ষা রাখে না। কর্তৃপক্ষের দেখা উচিত ছিল, যাত্রীদের বৈধ ভিসা, টিকেট, পাসপোর্ট বৈধ আছে কি না। কর্তৃপক্ষ কাগজ পত্র যাচাই বাছাই করে ভিসা প্রধান করে তাকেন। কোন কাগজ পত্রের আলোকে কানাডা কর্তৃপক্ষ ভিসা দিয়েছেন, যেটা জানার এবং বোঝার ক্ষমতা কর্তৃপক্ষের। এখানে ঢাকা বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের কিছুই করার নেই। যেহেতু বিমানবন্দর কর্র্তৃপক্ষ চাইলে কাহার ও ভিসা দেওয়ার এখতিয়ার নেই, সেহেতু ভিসা বাতিলের বা কাগজপত্র যাচাই বাছাইয়ের কোন ক্ষমতা তাদের নেই। ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষ ক্ষমতার অপব্যবহার করে যাত্রী হয়রানী করে শারীরিক, মানষিক নির্যাতন করেছেন।
এদিকে সিলেটের ভাবমূর্তী ক্ষন্ন করেছেন। এ ৪২ টি পরিবারই সিলেটের। বিভিন্ন মাধ্যমে সিলেটিরা বিদেশের মাটিতে গিয়ে আয় রোজগার করে দেশের অর্থনীতিকে সচল রাখার চেষ্ঠা করিতেছেন। ক্ষতিগ্রস্থ পরিবার সমূহকে বলব, মহামান্য হাইকোর্টে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে মামলা করে বিচার বিভাগীয় তদন্তের দাবী করতে। সব গোমড় বের হয়ে পড়বে অল্প সময়ে। তখন দেখবেন, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ক্ষতিপূরণ দিতে বাধ্য হবেন। অনেকই চাকরী হারাবেন। দেশের যে ক্ষতিও ভাবমূর্তী নষ্ট হয়েছে তা কিন্তু ছেড়ে দেওয়ার বিষয় নহে। ক্ষতিগ্রস্থদের পক্ষে সরকার থাকবে বলে আমার বিশ্বাস। যেহেতু ভিসা দেওয়া ক্ষমতা নেই সেহেতু ভিসা বাতিল বা অন্য কোন অভিযোগে তাদেরকে আটকানোর ও ক্ষমতা নেই। শুধুমাত্র যাত্রীদের মধ্যে কেহ যদি ফৌজদারী অভিযোগে অভিযুক্ত হন এবং তাহার বিরুদ্ধে মাননীয় আদালত কোন ওয়ারেন্ট বা গ্রেফতারী পরোয়ানা জারী করে থাকেন, তাহলে সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে আটকানো যাইতে পারে।
লেখকঃ সভাপতি, সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) বিয়ানীবাজার, সিলেট।
এই সংবাদটি পড়া হয়েছে : 1K বার