স্টাফ রিপোর্টার:
তোড়জোড় করেও শেষ পর্যন্ত একক ভর্তি পরীক্ষা চালু করতে পারলো না বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)। ফলে আসন্ন ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষেও দেশের সব পাবলিক বিশ্ববদ্যিালয়ে আগের নিয়মে তিনটি গুচ্ছে ভাগ করে ভর্তি পরীক্ষা হবে।
বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) চেয়ারম্যান (অতিরিক্ত দায়িত্ব) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আলমগীর এ তথ্য জানিয়েছেন। পাশাপাশি তিনি স্বায়ত্বশাসিত চারটি বিশ্ববিদ্যালয় ও বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়কে (বুয়েট) গুচ্ছে আসারও আহ্বান জানিয়েছেন।
বুধবার (২৯ নভেম্বর) ইউজিসির ২০২৩-২৪ অর্থবছরের শুদ্ধাচার কৌশল কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে অংশীজনের সঙ্গে সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা জানান।
অধ্যাপক মুহাম্মদ আলমগীর বলেন, রাষ্ট্রপতির অভিপ্রায় অনুসারে ইউজিসি সব বিশ্ববিদ্যালয়কে একক আওতাভুক্ত করে একটি ভর্তি পরীক্ষা গ্রহণের উদ্যোগ নিয়েছিল। এ বিষয়ে কমিটি গঠন করে এবং বিস্তারিত আলোচনা শেষে একটি অধ্যাদেশের খসড়াও তৈরি করেছিল। কিন্তু অনিবার্য কারণে আসন্ন শিক্ষাবর্ষ থেকে একক ভর্তি পরীক্ষা আয়োজন করা সম্ভব হচ্ছে না। তবে গত বছরের মতো আসন্ন শিক্ষাবর্ষেও গুচ্ছ পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।
তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়সহ (বুয়েট) গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষার বাইরে থাকা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে এ বছর গুচ্ছভুক্ত হওয়ার আহ্বান জানান। বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো পুরোনো বিশ্ববিদ্যালয়ও গুচ্ছ ভর্তিতে অংশগ্রহণ ও নেতৃত্ব দিয়ে নজির স্থাপন করেছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
ইউজিসি সচিব ড. ফেরদৌস জামানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন ইউজিসির আইএমসিটি বিভাগের পরিচালক ড. মো. সুলতান মাহমুদ ভূইয়া।
এদিকে, বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিতে পোষ্য কোটা অর্থাৎ শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীর সন্তানদের জন্য নির্ধারিত আসন রাখার সুযোগ নেই বলে মনে করেন ইউজিসির চেয়ারম্যান। তিনি পোষ্য কোটা প্রথা থেকে বেরিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন।
অধ্যাপক আলমগীর বলেন, এ বছর এইচএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়েছেন ৯২ হাজারের বেশি শিক্ষার্থী। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে আসন সংখ্যা ৬০ হাজারের কিছু বেশি। অর্থাৎ জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থীরাই তাদের কাঙ্ক্ষিত বিশ্ববিদ্যালয় ও পছন্দের বিষয়ে ভর্তি হতে পারবেন না। এমন পরিস্থিতিতে বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক পর্যায়ে ভর্তিতে পোষ্য কোটা রাখার কোনো সুযোগ নেই। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে অবশ্যই পোষ্য কোটা থেকে বের হয়ে আসতে হবে।
তিনি আরও বলেন, কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে কোন বিষয় পড়ানো হবে, শিক্ষার্থী সংখ্যা কত হবে, তা দেশীয় ও আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপট বিবেচনায় যৌক্তিকভাবে নির্ধারণ করতে কমিশন পরিকল্পনা করছে। ইউজিসির মূল লক্ষ্য উচ্চশিক্ষায় গুণগত মান বজায় রাখা ও গবেষণার উপযুক্ত পরিবেশ নিশ্চিত করা। পাশাপাশি সেগুলো বাস্তবায়নে প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ দেওয়া।
গত ২৬ জুলাই এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফল প্রকাশ করা হয়। এতে পাস করেন ১০ লাখ ৬৭ হাজার ৮৫২ জন শিক্ষার্থী। এ পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়েছেন ৯২ হাজার ৫৯৫ জন। উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীরা এখন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
তবে কীভাবে ভর্তি পরীক্ষা হবে, তা নিয়ে ধোঁয়াশায় ছিলেন তারা। ভর্তি প্রক্রিয়া নিয়ে জানতে উদগ্রীব ছিলেন শিক্ষার্থী-অভিভাবকরা। অবশেষে একক ভর্তি পরীক্ষা থেকে সরে এসে আগের নিয়মে পরীক্ষা নেওয়ার কথা জানালো ইউজিসি।
ইউজিসি সচিব ড. ফেরদৌস জামানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন ইউজিসির আইএমসিটি বিভাগের পরিচালক ড. মো. সুলতান মাহমুদ ভূইয়া। সভায় শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মির্জা হাসানুজ্জামান, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ জামির হোসেন, ঢাকা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. রাজু আহম্মেদ, ইউজিসির অতিরিক্ত পরিচালক জেসমিন পারভীন ও মো. শাহীন সিরাজসহ ইউজিসি ও বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা এবং গণমাধ্যমের প্রতিনিধিরা অংশ নেন।
এই সংবাদটি পড়া হয়েছে : 1K বার