স্পোর্টস রিপোর্টার:
‘মাত্র তো শুরু, এখনো অনেক কিছু হওয়া বাকি’—বাংলাদেশ-নিউজিল্যান্ডের দুই ম্যাচ টেস্ট সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচের প্রথম দিনের খেলা দেখার পর এই কথাটা বার-বার মাথায় আসছিল সবার।
কেননা ঢাকা টেস্টের প্রথম দিনের দুই সেশনের মধ্যেই মাত্র ১৭২ রান সংগ্রহ করতেই গুটিয়ে যায় টাইগারদের প্রথম ইংনিস। তখন মনে হচ্ছিল কিউইদের বিপক্ষে সাদা পোশাকে সিরিজ জয়ের স্বপ্ন হয়তো এখানেই শেষ হতে যাচ্ছে বাংলাদেশের।
তবে সবাইকে অবাক করে দিয়ে কিউইদের আক্রমণের বদলে পালটা আক্রমণ চালায় টাইগার স্পিনাররা। দিনের শেষ ভাগে সফরকারীদের এমনভাবে আটকালো যে, দলীয় ৫৫ রান তুলতেই তারা হারিয়ে ফেলে টপ অর্ডারের পাঁচ ব্যাটারকে। এদিন নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে বল হাতে সর্বোচ্চ তিন উইকেট নেন টাইগার স্পিনার মেহেদী হাসান মিরাজ।
মিরপুরকে বলা হয় হোম অফ ক্রিকেট। সকলেরই জানা এই মাঠ স্পিনারদের স্বর্গরাজ্য। বড় বড় দলের ব্যাটারদেরকেও এখানে এসে স্পিন বিষে নীল হয়ে হতাশ হয়ে সাজঘরে ফিরে যেতে দেখা গিয়েছে। আর বল হাতে স্পিনারদের ম্যাচ নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার ঘটনা তো হরহামেশাই নজরে আসে। তবে এই উইকেটের রহস্য যেন ভালো করেই জানে টাইগার স্পিন অলরাউন্ডার মেহেদী হাসান মিরাজ। দেশ বা দেশের বাহিরে তিনি যেমন পারফরম্যান্সই দেখান না কেন, মিরপুরে এলে যেন গর্জে ওঠেন তিনি। দেখান তার জাদুকরী পারফরম্যান্স। তারই এক ঝলক গতকাল দেখেছে সফরকারীরা।
এদিন দিনের শেষ ভাগে প্রথম ইনিংসে ব্যাট করতে নামা নিউজিল্যান্ডের ভয়ংকর হয়ে উঠতে থাকা ওপেনার ডেভন কনওয়েকে দারুণ এক বোলিংয়ে বোল্ড করে সাজঘরের পথ দেখান মিরাজ। প্রথম উইকেট হারানো পর আর ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি কিউইরা। হারাতে থাকে একের পর এক উইকেট।
এদিন নিজের দ্বিতীয় শিকার বানিয়ে ফেরান সফরকারীদের হয়ে সিলেট টেস্টের সেঞ্চুরি করা কেন উইলিয়ামসনকে। সেই সঙ্গে গতকাল কিউই শিবিরে শেষ আঘাতটাও হানেন মিরাজ। টম ব্লান্ডেল রানের খাতা খোলার আগেই এলবিডব্লিউর ফাঁদে ফেলে আউট করেন মিরাজ।
এর আগে ২০১৬ সালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে অভিষেক হয় মিরাজের। অভিষেক ম্যাচে চট্টগ্রামে ইংলিশদের বিপক্ষে ৭ উইকেট শিকার করেন এই টাইগার স্পিনার। এরপর সেই সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে মিরপুরে ইংলিশদের বিপক্ষে ১২ উইকেট তুলে সবাইকে তাক লাগিয়ে দেন মিরাজ। সেখান থেকেই শুরু। এরপর থেকে টাইগার স্কোয়াডের নিয়মিত মুখ হয়ে ওঠেন তিনি। দলকে এনে দিতে থাকেন একের পর এক সাফল্য। সাদা পোশাকে এখন পর্যন্ত ৪১ ম্যাচে ৭০ ইনিংসে বল করে ১৫৬ উইকেট শিকার করে মিরাজ। তবে অন্য মাঠের তুলনায় মিরাজের দাপট বেশি থাকে শের-ই বাংলায়।
এর আগে এখন পর্যন্ত ১১টি টেস্ট ম্যাচ খেলে ৫৫টি উইকেট শিকার করেন এই টাইগার স্পিনার। যেখানে এই মাঠের বাইরে ৩০ টেস্ট খেলে শিকার করেছেন ১০১টি উইকেট। এছাড়া ক্যারিয়ারে এ নিয়ে মোট ৯ বার ইনিংসে ৫ উইকেট পেয়েছেন মিরাজ, তার ছয় বারই মিরপুরে। শুধু তাই নয়, মিরাজের ক্যারিয়ারে এক ম্যাচে ১০ উইকেটের কীর্তি দুটি, সেগুলোও মিরপুরে এখানেই। সব মিলিয়ে মিরপুরে তার গড় ১৮.১২, যেখানে এই মাঠের বাইরে একটা উইকেট তিনি পান গড়ে ৪১.৩৭ রান দেওয়ার পর।
এই সংবাদটি পড়া হয়েছে : 1K বার