নিউজ ডেস্ক:
কানাডায় যাওয়ার স্বপ্নে বিভোর সিলেটের তরুণরা। প্রতিদিনই সিলেটের তরুণরা উড়াল দিচ্ছেন কানাডার উদ্দেশ্যে। ভিজিটর ভিসা নিয়ে কানাডায় গিয়ে স্থায়ীভাবে বসবাসের সুযোগ খুঁজছেন। সেই সুযোগও করে দিয়েছে কানাডা সরকার। ভিজিটর ভিসা নীতি শিথিল করায় বাংলাদেশ থেকে বিপুল সংখ্যক লোক কানাডা যাওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি যাচ্ছেন সিলেটের তরুণরা। কিন্তু এই স্বপ্নের পথে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে ভিএফএস’র ডেট।
আবেদনপত্র অনলাইনে সাবমিটের পর মিলছে না বায়োমেট্রিকের তারিখ। আর যাদের ভিসা এপ্রোভাল হয়েছে তারাও পাসপোর্ট জমা দিতে ভিএফএস’র ডেট (তারিখ) পাচ্ছেন না। ফলে অনেকের ভিসা এপ্রোভাল হওয়ার পরও ভিসা পাওয়া অনিশ্চিত হয়ে দাঁড়িয়েছে। বাধ্য হয়ে অনেকে দেশের বাইরে গিয়ে ভিএফএস সেন্টারে পাসপোর্ট জমা দেওয়ার চিন্তাভাবনা করছেন।
নিয়ম অনুযায়ী অনলাইনে আবেদপত্র সাবমিটের পর এক মাসের মধ্যে বায়োমেট্রিক দিতে হয়। ওই সময় ভিএফএস সেন্টারে আবেদনকারীর দুই হাতের আঙ্গুলের ছাপ ও ছবি তোলা হয়। একইভাবে যাদের ভিসা এপ্রোভাল হয় তারা এক মাসের মধ্যে ভিএফএস সেন্টারে পাসপোর্ট জমা দিতে হয়। আর নির্ধারিত ৩০ দিনের মধ্যে বায়োমেট্রিক দিতে না পারলে আবেদন ও ফি দুটোই বাতিল হয়ে যায়। একইভাবে এপ্রোভালের ৩০ দিনের মধ্যে পাসপোর্ট জমা দিতে না পারলে ভিসাও বাতিল হয়ে যায়।
জানা গেছে, ভিজিটর ভিসা নীতি শিথিল করায় গেল একবছর থেকে প্রচুর সংখ্যক সিলেটি কানাডায় যাওয়ার সুযোগ পেয়েছেন। সিলেটিদের অনুসরণ করে এখন দেশের অন্যান্য জেলার লোকজনও আবেদন করছেন কানাডার। ফলে আবেদনকারীর সংখ্যাও দিন দিন বাড়ছে।
ভিজিটর ভিসার জন্য অনলাইনে আবেদনের পর ভিএফএস সেন্টারে গিয়ে আঙ্গুলের ছাপ ও ছবি তুলতে হয়। বাংলাদেশে কানাডার ভিসা প্রসেসিংয়ের জন্য ঢাকা, চট্টগ্রাম ও সিলেটে ভিএফএস’র তিনটি সেন্টার রয়েছে। বর্তমানে তিনটি সেন্টারের কোনটিতেই বায়োমেট্রিকের তারিখ মিলছে না। একইভাবে যারা ভিসা এপ্রোভালের ইমেইল পেয়েছেন তারাও ভিএফএস’র তারিখ না পাওয়ায় পাসপোর্ট জমা দিতে পারছেন না। দেশের তিনটি সেন্টারের কোথাও ডেট মিলছে না।
গেল প্রায় এক সপ্তাহে গত বৃহস্পতিবার কিছু সময়ের জন্য সার্ভার অপেন থাকায় কিছু আবেদনকারী বায়োমেট্রিকের তারিখ নিতে সক্ষম হয়েছেন। আর কেউ কেউ পেয়েছেন পাসপোর্ট জমা দেওয়ার তারিখও। কিন্তু বেশিরভাগ আবেদনকারী ও ভিসা এপ্রোভাল হওয়া ব্যক্তি এখনো রয়েছেন অনিশ্চয়তার মাঝে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ভিসা এপ্রোভাল হওয়ার পর দেশের কোন ভিএফএস সেন্টারে পাসপোর্ট জমা দেওয়ার সুযোগ না পেয়ে কেউ কেউ দেশের বাইরে গিয়ে জমা দিচ্ছেন। পাসপোর্ট জমা দেওয়ার জন্য নেপাল, দুবাই ও সৌদি আরবও যাচ্ছেন কেউ কেউ। সেখানকার ভিএফএস সেন্টারে গিয়ে জমা দিচ্ছেন পাসপোর্ট। আবার কেউ কেউ ভিসা জটিলতা ও আর্থিক সামর্থের অভাবসহ নানা কারণে এপ্রোভাল পেয়েও কানাডার ভিসা প্রাপ্তি নিয়ে অনিশ্চয়তার মাঝে দিন কাটাচ্ছেন।
সিলেট নগরীর মিরাবাজারের জাহেদ আহমদের ভিসা এপ্রোভাল মেইল এসেছে গত ১০ ডিসেম্বর। ভিসার জন্য ৩০ দিনের মধ্যে তাকে যে কোন ভিএফএস সেন্টারে তার পাসপোর্ট জমা দিতে হবে। কিন্তু আজ ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত তিনি ভিএফএস’র সার্ভারে ঢুকে কোন ডেট নিতে পারেননি। যে এজেন্সি দিয়ে তিনি ভিসা প্রসেস করেছিলেন তারাও ভিএফএস’র তারিখ কবে পাওয়া যেতে পারে সে ব্যাপারে কিছু বলতে পারছে না।
জাহেদ আহমদ বলেন, ‘অনেক স্বপ্ন নিয়ে পুরো পরিবার কানাডার ভিসা আবেদন করেছিলাম। ভিসা এপ্রোভালও পেলাম। কিন্তু ভিএফএসে পাসপোর্ট জমা দেওয়ার তারিখ না পাওয়ায় কানাডায় যাওয়ার স্বপ্ন এখন দু:স্বপ্নে পরিণত হতে যাচ্ছে। যেহেতু কাস্টমারদের চাপ বেশি তাই ভিএফএস’র উচিত প্রতিদিন আরও বেশি পরিমাণে গ্রাহক সেবা দেওয়া। কিন্তু তারা এ ব্যাপারে কোন উদ্যোগ নিচ্ছে না।’
লামাবাজারের ব্যবসায়ী সোহেল আহমদ জানান, তিনি এপ্রোভাল লেটার পাওয়ার পর ১০ দিন অতিবাহিত হয়ে গেছে। কিন্তু এখনো ভিএফএস’র ডেট পাননি। তাই তার ভিসা প্রাপ্তি অনিশ্চয়তায় পড়েছে। দু’একদিনের মধ্যে তিনি নেপাল গিয়ে ভিএফএসে পাসপোর্ট জমা দেওয়ার পরিকল্পনা নিয়েছেন বলে জানান সোহেল।
এই সংবাদটি পড়া হয়েছে : 1K বার