স্টাফ রিপোর্টার:
৭ জানুয়ারির নির্বাচন সামনে রেখে একাধিক বৈঠকে নানান দর কষাকষির পর বর্তমান জাতীয় সংসদের প্রধান বিরোধী দল জাতীয় পার্টির সঙ্গে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের অন্তত ২৬টি আসনে সমঝোতা হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছে একাধিক সূত্র। কোন কোন আসন ছাড় দেওয়া হবে, তা আজ গণমাধ্যমে আনুষ্ঠানিক জানাতে পারে আওয়ামী লীগ। আজ মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষ দিন। আজ চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানানোর সময় জাপা প্রার্থীদের আসন সংখ্যা দুয়েকটি বাড়তে বা কমতেও পারে।
শুক্রবার রাতে আওয়ামী লীগের সঙ্গে আসন সমঝোতা নিয়ে বৈঠকে বসে জাতীয় পার্টি। পঞ্চম দফায় এ বৈঠকে জাতীয় পার্টির সঙ্গে আওয়ামী লীগের আসন সমঝোতা অনেকটা চূড়ান্ত হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন দল দুটির শীর্ষ নেতারা। শুক্রবার রাতে সংসদ ভবন প্রাঙ্গণে এমপি হোস্টেলে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম এমপির অফিসে অনুষ্ঠিত বৈঠকে ওই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। পরে জাতীয় পার্টির নেতারা নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে গতকাল সন্ধ্যায় এমপি হোস্টেলে ফের আওয়ামী লীগ নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বৈঠকে উপস্থিত এক নেতা জানান, ২৬টি আসনে সমঝোতা হয়েছে। আরও কয়েকটি আসন নিয়ে দেন-দরবার করছে জাতীয় পার্টি। আরও কয়েকটি আসনে নৌকা প্রত্যাহার
না করে দলীয় প্রার্থীদের নিষ্ক্রিয় করার বিষয়ে সম্মতি দিয়েছে আওয়ামী লীগ। তবে, সবকিছু নির্ভর করছে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সিদ্ধান্তের ওপর। আজ রবিবার প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ দিন। সোমবার দেওয়া হবে প্রতীক। সে কারণে আজই হতে পারে ভাগাভাগির শেষ দিন।
সূত্র জানায়, দুই বৈঠকে জাতীয় পার্টির পক্ষে যাদের নাম ও আসন চূড়ান্ত করা হয়েছে তারা হলেন- রংপুর-৩ জি এম কাদের, গাইবান্ধা-১ ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী, ময়মনসিংহ-৮ ফখরুল ইমাম, পটুয়াখালী-১ এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদার, নারায়ণগঞ্জ-৩ লিয়াকত হোসেন খোকা, ঢাকা-৪ সৈয়দ আবু হোসেন, কিশোরগঞ্জ-৩ মো. মুজিবুল হক চুন্নু, নারায়ণগঞ্জ-৫ এ কে এম সেলিম ওসমান, বগুড়া-২ শরিফুল ইসলাম জিন্নাহ, বরিশাল-৬ নাসরিন জাহান রত্না, সুনামগঞ্জ-৪ পীর ফজলুর রহমান, চট্টগ্রাম-৫ ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, বগুড়া-৩ মো. নুরুল ইসলাম তালুকদার, ঢাকা-৬ কাজী ফিরোজ রশীদ, নীলফামারী-৪ আহসান আদেলুর রহমান, ঠাকুরগাঁও-৩ হাফিজ উদ্দিন আহমেদ, কুড়িগ্রাম-২ পনিরউদ্দিন আহমেদ, লালমনিরহাট-৩ জাহিদ হাসান, রংপুর-১ আসিফ শাহরিয়ার, রংপুর-২ আনিসুল ইসলাম মন্ডল, কুড়িগ্রাম-১ এ কে এম মোস্তাফিজুর রহমান, দিনাজপুর-৪ মোনাজাত চৌধুরী, পিরোজপুর-৩ মাশরেকুল আলম রবি, সাতক্ষীরা-১ সৈয়দ দিদার বখত, কুষ্টিয়া-১ শাহরিয়ার জামিল, খুলনা-৬ শফিকুল ইসলাম মধু, হবিগঞ্জ-১ মুনিম চৌধুরী বাবু, ময়মনসিংহ-৫ সালাউদ্দিন আহমেদ মুক্তি, জামালপুর-২ মোস্তফা আল মাহমুদ, শেরপুর-১ মাহমুদুল হক মনির, ফেনী-৩ মাসুদ উদ্দিন
চৌধুরী, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ অথবা ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ আসনে অ্যাডভোকেট রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়া। এই তালিকার মধ্য থেকেই ২৬ বা তার চেয়ে দুই-একটি বেশি আসন চূড়ান্ত করা হতে পারে। জাতীয় পার্টির মহাসচিব প্রতিদিনের মতো গতকালও বনানী জাপার কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন। তিনি বলেন, আসন্ন দ্বাদশ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের সঙ্গে কোনো জোট মহাজোট করার সুযোগ নেই। এতে আস্থা নেই; বিশ্বাসও করি না। ক্ষমতাসীনদের সঙ্গে শুধু আসনের ইস্যুতে বৈঠক হচ্ছে না। সুষ্ঠু নির্বাচন ও ভোটাররা যেন ভোট কেন্দ্রে আসতে পারে এসব বিষয়ে বেশি জোর দেওয়া হচ্ছে। আওয়ামী লীগের কাছে কত আসনের তালিকা দেওয়া হয়েছে এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, প্রেমের চিঠি তো প্রকাশ করা যায় না। প্রেমের সম্পর্কের মধ্যে নির্বাচনি দেনদরবারে জাপা নায়ক হতে চায়।
এই সংবাদটি পড়া হয়েছে : 1K বার