স্টাফ রিপোর্টার:
নানা কৌশলের পরও দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ‘প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ’ করা যাচ্ছে না! প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত হওয়ার পর সারাদেশের মতো সিলেটের ১৯টি আসনের মধ্যে মাত্র ৯টিতে লড়াইয়ের আভাস মিলেছে। বাকি আসনে ভোট হতে যাচ্ছে অনেকটাই একতরফা। এবার ২৭টি নিবন্ধিত দল অংশ নিলেও মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রয়েছেন আওয়ামী লীগ ও স্বতন্ত্র প্রার্থীরা। সিলেটের ১জন প্রতিমন্ত্রীসহ নৌকার প্রার্থীদের জয়ের পথে বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছেন এই স্বতন্ত্ররাই।
রোববার (১৭ ডিসেম্বর) প্রার্থিতা প্রত্যাহারের পর আজ সোমবার প্রতীক বরাদ্দের মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিক প্রচারে নামবেন চূড়ান্ত প্রার্থীরা।
বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোট এ নির্বাচন বর্জন করছে। এই জোটের বাইরেও কট্টর ডানপন্থি ও কট্টর বামপন্থি হিসেবে পরিচিত একাধিক রাজনৈতিক দল নির্বাচন বর্জন করছে। ফলে কেন্দ্রে ভোটার উপস্থিতি নিয়ে শঙ্কিত ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। ভোটার উপস্থিতি বাড়াতে স্বতন্ত্র প্রার্থী মাঠে ধরে রাখছে তারা। অবশ্য নির্বাচন কমিশনের (ইসি) হিসাবে ৪৪ নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের মধ্যে ২৭টি দল নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে।
সিলেটের যেসব আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ভোটের আভাস মিলছে সেগুলো হলো-সিলেট-৩ এ নৌকার হাবিবুর রহমান হাবিব লড়বেন জাতীয় পার্টির আতিকুর রহমান আতিক এবং আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র বিএমএ মহাসচিব ইশতেশামুল হক চৌধুরী দুলালের সঙ্গে।
সিলেট-৬ আসনে সাবেক শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ নৌকার প্রার্থী হয়েছেন। তাঁর সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন তৃণমূল বিএনপির চেয়ারম্যান শমসের মবিন চৌধুরী ও আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থী সরওয়ার হোসেন।
সিলেট-৫ এ আওয়ামী লীগের মাসুক উদ্দিন আহমেদের বিরুদ্ধে প্রার্থী হয়েছেন বাংলাদেশ আঞ্জুমানে আল ইসলামের সভাপতি মাওলানা হুচামুদ্দীন চৌধুরী।
সুনামগঞ্জ-৫ আসনে নৌকা প্রতীকে বর্তমান এমপি মুহিবুর রহমান মানিক লড়াই করবেন স্বতন্ত্র প্রার্থী আওয়ামী লীগ নেতা শামীম আহমদের সঙ্গে।
সুনামগঞ্জ-১ আসনে নৌকার প্রার্থী রনজিৎ চন্দ্র সরকারের সঙ্গে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন বর্তমান এমপি মোয়াজ্জেম হোসেন রতন ও জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য সেলিম আহমদ।
সুনামগঞ্জ-২ আসনে নৌকা প্রতীকে চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মাহমুদের সঙ্গে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন আওয়ামী লীগের প্রয়াত নেতা সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের স্ত্রী বর্তমান এমপি ড. জয়া সেনগুপ্তা।
মৌলভীবাজার-২ আসনে নৌকার প্রার্থী কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল, তৃণমূল বিএনপি প্রার্থী এমএম শাহীন এবং আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থী শফি আহমদ সলমানের মধ্যে ত্রিমুখী লড়াই হবে।
হবিগঞ্জ-৪ আসনে নৌকার প্রার্থী বিমান প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলীর লড়াই হবে আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থী ব্যারিস্টার সায়েদুল হক সুমনের সঙ্গে। হবিগঞ্জ-২ এ আওয়ামী লীগ প্রার্থী ময়েজ উদ্দিন শরীফ রুয়েলের লড়াই হবে স্বতন্ত্র প্রার্থী দলের চারবারের এমপি আবদুল মজিদ খানের সঙ্গে।
গত ১৫ নভেম্বর সন্ধ্যায় দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল।
তফসিল অনুযায়ী, ৩০ নভেম্বর ছিলো মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ তারিখ। বাছাই হয় ১ থেকে ৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত। রিটার্নিং কর্মকর্তার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল ও শুনানি অনুষ্ঠিত হয় ৬ থেকে ১৫ ডিসেম্বর এবং ১৭ ডিসেম্বর ছিলো মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিন।
আজ প্রতীক পাওয়ার পর থেকে প্রার্থীরা ৫ জানুয়ারি সকাল ৮টা পর্যন্ত ভোটের প্রচারণা চালাতে পারবেন। ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হবে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ।
এই সংবাদটি পড়া হয়েছে : 1K বার